Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপি’র নেতার ৪৮ কোটি টাকার সুদ মওকুফ

নথি চাইলেন হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী আব্বাসের ৮৫ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে ৪৮ কোটি টাকা মওকুফের নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে ৪৮ কোটি টাকা সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে নাÑ এই মর্মে রুল জারি করেন আদালত।
এর আগে গত ৫ মে ‘অবৈধভাবে বিএনপি নেতার ৪৮ কোটি টাকা সুদ মাফ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে বিষয়টি অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান রিট করেন। রিটে উল্লেখ করা হয়, কৃষি ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের ৭৪০তম সভায় অনারোপিত সুদের ১০০ শতাংশ অর্থাৎ ৪৭ কোটি ৬৯ লাখ ৯৪ হাজার এবং স্থগিত সুদ ৪১ লাখ ৪২ হাজারের অর্ধেক ২০ লাখ ৭১ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৪৭ কোটি ৯০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা সুদ মওকুফ করা হয়। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট চঞ্চল বিশ্বাস। তিনি জানান, আদালত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ঋণ মওকুফ সংক্রান্ত নথি তলব করেছেন। সেই সঙ্গে রুল জারি করেছেন। রুলে এ বিষয়ে অর্থ ঋণ ও অর্থপাচার মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আব্বাস ট্রেডিংয়ের মালিক মোহাম্মদ আলী আব্বাসের বিরুদ্ধে কৃষি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৭৪০তম সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটে উল্লেখ করা হয়, প্রায় এক দশক আগে ব্যবসার জন্য কৃষি ব্যাংক থেকে ৮৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন চট্টগ্রামের এক বিএনপি নেতা। ঋণ পরিশোধ না করায় দুই বছর পর অর্থঋণ আদালতে মামলা হয়েছিল। ওই টাকায় নিজের ও স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনও মামলা করে। কিন্তু দুটি মামলার কোনোটি নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই ঋণের প্রায় ৪৮ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করে দিয়েছে। বৈধভাবে এই সুদ মওকুফের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। মামলা এবং প্রতিবেদন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী থানাধীন খোয়াজনগর এলাকার মোহাম্মদ আলী আব্বাস চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। ২০১৯ সালের ৩০ জুন বিএনপি নেতা আব্বাস ঋণের সুদ মওকুফের আবেদন করেন। কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় বিআরপিডি সার্কুলার-৫-এর আওতায় সুদ মওকুফের জন্য ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের ৭৪০তম সভায় কার্যপত্র উপস্থাপন করে। সভায় অনারোপিত সুদের ১০০ শতাংশ অর্থাৎ ৪৭ কোটি ৬৯ লাখ ৯৪ হাজার এবং স্থগিত সুদ ৪১ লাখ ৪২ হাজারের অর্ধেক ২০ লাখ ৭১ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৪৭ কোটি ৯০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা সুদ মওকুফ করা হয়। অবশিষ্ট পাওনা ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরে মোট ৩৬টি ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। অনুসন্ধান প্রতিবেদনে অনিয়মের মাধ্যমে ৪৮ কোটি টাকা সুদ মওকুফের প্রমাণ মেলায় একটি কমিটি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইকোর্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ