পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহবায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, এবারের বাজেটে যুবদের জন্য যুব ভাতা প্রচলনের সময় এসেছে। প্রতীকী অর্থে হলেও বেকার ভাতাসহ বিভিন্ন ভাতা প্রচলন করলে সরকার যে যুবদের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে, তা বলা যাবে। তিনি শিক্ষিত বেকারদের জন্য বিশেষ অ্যাপ তৈরি করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, যে তরুণেরা চাকরি খুঁজছেন, তাঁরা অ্যাপে নিবন্ধন করবেন। তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাহিদার কথাও জানাবেন। হিসাবে না থাকলে বিবেচনাতেও আনার সুযোগ কমে যাবে।
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আয়োজনে এবং একশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় ‘এসডিজি বাস্তবায়নে জবাবদিহিতা: স্থানীয় প্রেক্ষিত ও যুব সমাজ’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল সংলাপে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা বলেন। গতকাল জুমে অনুষ্ঠিত সংলাপে তিনি বলেন, দেশে যুব জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে, তবে গুণগতভাবে যুবদের কণ্ঠস্বর বাড়ানো সম্ভব হয়নি।
করোনাভাইরাসের বিস্তারে দেশের যুবদের পরিস্থিতি নাজুক থেকে নাজুকতর হয়েছে বলে উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, গত প্রায় দেড় থেকে দুই বছরে যুবরা কর্মস্থলে ঢুকতে পারেনি। বেকারত্ব বেড়েছে। দেশের দেড় থেকে দুই কোটি মানুষ কর্ম হারানোর ঝুঁকিতে আছেন। দেশের ১০–১৫ শতাংশ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার মধ্যে ঢুকে গেছে। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও এর মধ্যে কত শতাংশ যুব প্রতিনিধি থাকবেন, তা অনুমান করা যায়। শিক্ষিত বেকার প্রসঙ্গে প্রচলিত কথা হচ্ছে, পড়াশোনা করে যে, বেকার তত থাকে সে। সব মিলিয়ে যুবদের উন্নয়নে এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা-২০৩০ বা এসডিজি বাস্তবায়নে নতুন পদ্ধতি নিয়ে ভাবতে হবে।
সংলাপে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম খান সরকারের পক্ষ থেকে যুবদের জন্য যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে তার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি জানান, অধিদপ্তরের সার্বিক কার্যক্রমকে ই-সার্ভিসের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকার এসডিজি বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে সংলাপে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে শুধু কতজন প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তা তুলে ধরা হয়। তবে প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর কতজন আসলেই চাকরি পেলেন, তার আর কোনো হিসাব জানা যায় না। এই তথ্য জানা জরুরি।
সংলাপে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, প্রশিক্ষণের পর তার ইমপ্যাক্ট বা ফলাফল জানা যাচ্ছে না, এটাই একটা বড় গ্যাপ। এনজিওকে সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ও এনজিওর মধ্যেও গ্যাপ আছে। এটা দূর করতে পারলে অনেক কাজই খুব সহজে করে ফেলা সম্ভব। তিনি ভাসানচরকে এনজিও-সরকারের কাজের সফল মডেল হিসেবে উল্লেখ করেন। সরকারি পর্যায়ে রিপোর্টিং বা প্রতিবেদন প্রণয়নে দুর্বলতা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেসরকারি সংগঠন যুবদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এসডিজি বিষয়ে প্রতিবেদন প্রণয়নের কাজে লাগাচ্ছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।
একশনএইড বাংলাদেশের দেশীয় পরিচালক ফারাহ কবির বলেন, এসডিজি বিষয়টি যখন শুরু হয়, তখন করোনার বিষয়টি ছিল না। বর্তমানে এসডিজি বাস্তবায়নে করোনার বিষয়টিকে মাথায় রেখে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। করোনা শুরুর পর থেকে যুবদের অবস্থা জটিল হয়েছে। ফারাহ কবির আরও বলেন, এসডিজির মূল বিষয় হলো কেউ পিছিয়ে থাকবে না। উন্নয়নের প্রতিটি পর্যায়ে যুবদের অংশগ্রহণ, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার বিষয়টিতে তিনি গুরুত্ব দেন। একইভাবে যুব নারীরা যাতে চোখের আড়ালে থেকে না যান, সে বিষয়েও তিনি সবাইকে নজর রাখার আহবান জানান।
সংলাপে জানানো হয়েছে, যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করতে সরকার ২০১৭ ও ২০২০ সালে দুটি ভলান্টারি ন্যাশনাল রিভিউ (ভিএনআর) রিপোর্ট প্রণয়নের সময় যুব সংগঠন ও যুব প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছিল। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে গ্রামীণ ও সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর যুবরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। এ ছাড়া যুবদের মতামত ও পরামর্শগুলো সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে আলোচনার অবকাশ রয়েছে। তাই জাতীয় এবং বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে এসডিজি বাস্তবায়নে ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে যুবসমাজের কার্যকর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক দুর্বলতা আছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামোও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বাংলাদেশের কিছু বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান যুবদের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে এসডিজি বাস্তবায়নের মূল্যায়ন শুরু করে, যার মাধ্যমে এসডিজির আকাক্সক্ষার সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ের যুবসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর সংশ্লেষ ঘটানোর চেষ্টা করা হয়। এ উদ্যোগের অভিজ্ঞতা এবং বিস্তারিত আলোচনার জন্যই আজকের এই ভার্চ্যুয়াল সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক নাজীবা আলতাফ। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির (সংলাপ এবং প্রচার) যুগ্ম পরিচালক অভ্র ভট্টাচার্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।