Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অচেনা চিনা হতে পারে অর্থনীতির নতুন উৎস

বিনা খরচে অমৌসুমি আবাদে কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছেন

মো. হায়দার আলী, গোদাগাড়ী (রাজশাহী) থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০২১, ১২:০৩ এএম

দীর্ঘদিন পর রাজশাহীর গোদাগাড়ীর কৃষকরা চিনা ধান চাষের দিকে বেশ ঝুকেছেন। চিনা চাষে খরচ কম এবং ফলন ভালো। আর সেচ কম লাগায় উৎপাদন খরচও কম। বাজারে দাম বেশি হওয়ায় বিলুপ্ত হতে যাওয়া চিনা চাষে কৃষকদের মাঝে নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে।
আগে পদ্মার চরাঞ্চলে চাষ হলেও এখন চরাঞ্চলের পাশাপাশি গোদাগাড়ীর বরেন্দ্র অঞ্চলেও ব্যাপকহারে চিনা চাষ হচ্ছে। গোদাগাড়ী উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীতে জেগে উঠা চরে এখন শোভা পাচ্ছে চিনা। প্রতিবছর শীত মৌসুমে নদীর দুই তীরে কয়েক হাজার হেক্টর চর জেগে উঠে। আর জেগে উঠা চরে নদীর পাড়ের কৃষকেরা চাষাবাদ করেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চিনা চাষ।

চিনা চাষ করতে কোন মৌসুম লাগে না। যে কোন সময় করা যায়। এমনকি তেমন কোন খরচ নেই বললেই চলে। অনেকটা বিনা খরচে চিনা চাষ হয় বলে কৃষকদের লাভও হয় ভালো। বাজারে এর চাহিদা বেশি। চলতি বছরেও চিনার বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা আশা করছেন। ফলে কৃষকদের মুখে আনন্দের হাসি ফুটেছে।
চলতি বছর চিনা চাষ রাজশাহী জেলার মধ্যে গোদাগাড়ী উপজেলায় বেশি হয়েছে। এবার চিনা চাষ বেশি হয়েছে ৯ নম্বর চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নে। চরাঞ্চলে অন্যান্য ফসলের তুলনায় চিনা ভাল জন্মে। গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৯০ হেক্টর জমিতে চিনা চাষ হয়েছে। গত মৌসুমে চাষ হয়েছিল প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে।

বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই চিনা না চিনলেও এক সময় চরাঞ্চলে এর ব্যাপক আবাদ ছিল। দীর্ঘদিন ধরে চিনার কোনো আবাদ না হওয়ায় এটি এখন মানুষের মাঝে প্রায় অচেনা। অথচ এই চিনা ধানটি হয়ে উঠতে পারে অর্থনৈতিক আরেকটি ফসল।
গোদাগাড়ীর কৃষক আব্দুল মাতিন বলেন, চিনা চাষ করতে তেমন বেশি খরচ হয় না। শুধুমাত্র বীজ বোপন করলেই চিনার গাছ বেড়ে উঠে। মাঝে একবার সামান্য সার প্রয়োগ করতে হয়। কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে না।
তিনি আরো বলেন, বিঘা প্রতি ৫ থেকে ৬ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। বাজারে এর দামও ভাল। গত মৌসুমে প্রতি মণ তিন থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। চিনা ধান চাষি শরিফ জানান, বর্তমানে বাজারে মণ প্রতি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা দরে চিনা বিক্রি হচ্ছে।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, চিনা ধান খরা মৌসুমের ফসল। গভীর থেকে রস ধারণ করে এবং একবার সেচ দিলেই চলে। বপনের ৬০ দিনের মধ্যে জমি থেকে চিনার ফলন পাওয়া যায়। চিনা ধান চাষ করতে তেমন খরচ হয় না। একবার সার দিলেই চলে।
তিনি আরো বলেন, রোগ বালাই কম হওয়ায় কোন কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। অল্প খরচ ও অল্প পরিশ্রম করেই এ ফসল ফলানো সম্ভব। বাজারে চিনার ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। অর্থকারী ফসল হিসাবে চিনা চাষের খুবই উজ্জ্বল সম্ভবনা দেখা দিয়েছে এ উপজেলায়। আগামীতে চিনা ধান চাষ আরো বাড়তে পারে বলে তিনি আশা করছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ