Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জুনে চালু নিয়ে শঙ্কা

আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ দুই দফায় সময় বৃদ্ধি

কামাল আতাতুর্ক মিসেল | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সব শ্রমিক নিয়মিত কাজে আসছেন না। সার্বিক দিক বিবেচনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফায় ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলওয়ে লিংক প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের কাজের দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো মেয়াদ আগামী জুন মাসে শেষ হবে। যদিও চলতি বছরের মার্চ মাসেই কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন।

দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো মেয়াদ শেষ হতে আরও প্রায় দেড় মাস বাকি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত অনেক জায়গায় রেলপথে মাটি ভরাট ও কালভার্ট নির্মাণের কাজই শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে আগামী জুন মাসে কাজ সম্পন্ন হবে কিনা সেটি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, দ্বিতীয় দফায় বর্ধিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি মোট সাড়ে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এর মধ্যে চার কিলোমিটার অংশ ভারতে এবং বাকি সাড়ে ছয় কিলোমিটার অংশ বাংলাদেশে। এই রেলপথটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর সীমান্ত পর্যন্ত যাবে। ভারত সরকারের অনুদানের অর্থে নির্মিত হচ্ছে বহুল কাক্সিক্ষত এই রেলপথ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দুই দেশের মানুষ খুব সহজে এবং স্বল্প খরচে যাতায়াত করতে পারবেন। আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলওয়ে লিংক প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের কাজের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের নয়া দিল্লির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সাথে চুক্তি হয়। ১৮ মাস মেয়াদী এ প্রকল্প কাজের ব্যয় ধরা হয় ২৪০ কোটি ৯০ লাখ ৬৩ হাজার ৫০১ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রকল্পের কাজ শুরু করে।

প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রথম দফায় ওই বছরের ১৩ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। বর্ষা মৌসুমের কারণে কাজ করতে না পারায় সময় বৃদ্ধির আবেদন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে প্রথম দফায় বর্ধিত সময়ের মধ্যে মহামারি করোনাভাইরাস হানা দেয়ায় কাজ বন্ধ রাখা হয়। ফলে প্রথম দফায় বাড়ানো সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা যায়নি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত বছরের মার্চ মাসের শেষভাগ থেকে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধের পর গত বছরের ১ জুন থেকে পুনরায় কাজ শুরু হয়। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সব শ্রমিক নিয়মিত কাজে না আসায় সার্বিক দিক বিবেচনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আবেদনের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফায় ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

সম্প্রতি আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের বাংলাদেশ অংশ ঘুরে দেখা গেছে, গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশনের পাশে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। রেলপথের মাটি ভরাটের কাজও এখনো পর্যন্ত শেষ হয়নি। রেলপথে পড়া ১৬টি কালভার্টের কোনোটির নির্মাণ কাজই শতভাগ সম্পন্ন হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় একটি কালভার্টের কাজ এখনো শুরুই করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া রানিংরুম ও ইন্সপেকশন হাউজের নির্মাণ কাজও বাকি রয়েছে। তবে আখাউড়া-আগরতলা সীমান্তের শূন্য রেখা পর্যন্ত রেললাইন বসানো হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে।

টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (প্রকল্প) ও আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলওয়ে লিংক (বাংলাদেশ অংশ) প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ভাস্কর বকশি বলেন, পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ। মাটি ভরাটের কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়ে যাবে। আশা করছি মূল কাজগুলো মে মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করতে পারব। চেষ্টা করব জুন মাসের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করার।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলওয়ে লিংক (বাংলাদেশ অংশ) প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার বিষয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করছে। তাদের ওপরও ভারত সরকারের চাপ আছে। প্রকল্পটি ভারত সরকারের অনুদানের অর্থে বাস্তবায়ন হচ্ছে। ভারত সরকারও চাচ্ছে প্রকল্পটির দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। প্রকল্পের সকল মালামালই ভারত থেকে আসছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলেছি, তারা বলেছে মে মাসের মধ্যে কালভার্টের কাজ শেষ করবে। তারা ইচ্ছা করলে জুন মাসের মধ্যেই সব কাজ শেষ করতে পারবে।



 

Show all comments
  • হাবিব ২০ মে, ২০২১, ১১:৩৯ এএম says : 0
    সময় বৃদ্ধি করলেই তো লাভ। বাজেট বৃদ্ধি করা যায়
    Total Reply(0) Reply
  • সবুজ ২০ মে, ২০২১, ১১:৪১ এএম says : 0
    ভারতের উপর নির্ভর করে কোন প্রকল্প হাতে নেয়া উচিত না
    Total Reply(0) Reply
  • রোমান ২০ মে, ২০২১, ১১:৪২ এএম says : 0
    বাংলাদেশের উন্নয়ন হোক এটা ভারত কখনও চায় না
    Total Reply(0) Reply
  • মনির হোসেন মনির ২০ মে, ২০২১, ১১:৪৫ এএম says : 0
    করোনার কারণে সব প্রকল্পই বাস্তবায়নে দেরি হবে
    Total Reply(0) Reply
  • ডালিম ২০ মে, ২০২১, ১১:৪৬ এএম says : 0
    প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেলপথ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ