Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হরিরামপুর বিচে মানুষের ঢল

শাহীন তারেক, মানিকগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২১, ১২:০২ এএম

হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে হরিরামপুর উপজেলার বয়ড়া ইউনিয়নের আন্ধারমানিক বাজার, দাসকান্দি বয়ড়া, ভাওরডাঙ্গি ও দড়িকান্দি সংলগ্ন বিশাল পদ্মাপাড়। নদীর কোল ঘেঁষে জেগে ওঠা চরের প্রায় ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এলাকাজুড়ে ধূধূ বালুরচর। এছাড়াও কোথাও কোথাও বোরো ধান ও সূর্যমুখীরও চাষ করেছেন অনেক কৃষক। সব মিলিয়ে এই পদ্মাপাড়ে এক অপরূপ সৌন্দর্যে পরিণত হয়েছে।

জানা যায়, ঈদকে ঘিরে সপ্তাহজুড়ে কর্মব্যস্ততার একপেশে সময়গুলোকে মøান করে একটু প্রশান্তির খোঁজে অনেকেই ছুটে আসেন এই পদ্মা পাড়ে। অন্যান্য দিনের তুলনায় ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে নজর কাড়ার মতো। সকল শ্রেণি পেশার মানুষগুলো এখানে ছুটে আসে একটু প্রশান্তির সন্ধানে। শতশত মোটরসাইকেল এমনকি প্রাইভেটকার যোগেও দূরদূরান্ত থেকে দর্শণার্থীদের আগমন ঘটে এই আন্ধারমানিক পদ্মা নদীরপাড়ে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীসহ জেলার অনেক সরকারি কর্মকর্তারাও স্ব-পরিবারে উপভোগ করতে আসেন পদ্মাপাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এই লীলাভূমি। ভরা বর্যার মওসুমে এর সৌন্দর্য আরো বুদ্ধি পায় তাই অনেকে এই স্থানকে হরিরামপুরের বিচ বলেও আখ্যায়িত করেন।

হরিরামপুরের জ ই আকাশ বলেন, এই স্থানে দর্শণার্থীদের জন্য গত বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় দুই তরুণ উদ্যোক্তা এখানে নির্মাণ করেছন ড্রিম পদ্মা ও পদ্মা বাড়ি নামের দুটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট। অপূর্ব শৈল্পিক সৌন্দর্যবর্ধিত এই রেস্টুরেন্ট হওয়ার মধ্য দিয়ে দর্শণার্থীদের ভিড়ও যেন দিনে দিনে বাড়তে থাকে। বর্ষা মৌসুমে প্রথম নির্মিত ড্রিম পদ্মা ভাসমান রেস্টুরেন্টটি উপজেলায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। ফলে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ ছুটে আসেন এখানে। যার ধারাবাহিকতা এখনো রয়েছে।

বর্ষার পানি নামতে না নামতেই পদ্মাপাড় ঘেঁষে বিশাল এক সু-বিস্তৃত চর জেগে ওঠায় যেন এখানে অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলা ভূমি গড়ে ওঠে। মিনি পিকনিক স্পটেও পরিণত হয়ছে এই পদ্মা পাড়। দূরদূরান্ত থেকে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোও বনভোজনের জন্য ছুটে আসে এই দর্শণীয় স্থানে।

সন্ধ্যায় চাঁদের আলোয় চকচক করে পুরো এলাকা। রাতের জোসনায় অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য প্রেমীরা মেতে ওঠে আনন্দ উল্লাসে। জেলা শহর থেকে আগত এক দর্শনার্থী সরকার মাসুদুর রহমান জানান, আমাদের কয়েকজন বন্ধুর কাছ থেকে এই পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্যের কথা শুনে আজ এখানে আসলাম। খুব ভালো লাগছে এখানে এসে। এক কথায় বলতে হয়, এটা একটা মিনি পর্যটন এলাকায় পরিণত হয়েছে। যে হারে মানুষের সমাগম হয়, তাতে এখানে একটা পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করাটা খুব জরুরি।

স্থানীয় বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান তুষার জানান, পদ্মা অধ্যুষিত হরিরামপুরের প্রাণ কেন্দ্র আন্ধারমানিক বাজার সংলগ্ন এই বিস্তৃত চর জেগে ওঠায় প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে লোকজনের সমাগম হয়। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলসহ মাঝে মাঝে ঢাকা থেকেও অনেক প্রকৃতি প্রেমীরাও এখানে ছুটে আসেন। এখানে আগে এতোটা জনসমাগম না থাকলেও বর্তমানে এই স্থানে দুটি রেস্টুরেন্ট হওয়ায় দর্শণার্থীর সংখ্যা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। এই স্থানটাকে একটি নার্সারি করলে আরো ভালো কিছু সম্ভব। এজন্য মাসিক সমন্বয় মিটিংয়েও একবার আমি আলোচনা করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, জায়গাটা আসলে অনেক সুন্দর। অনেকটাই বলতে গেলে মিনি সী বিচের মতো। আমার মনে হয়, জায়গার স্থায়িত্বটা খুব স্বল্প সময়ের। কারণ সামনে বর্ষার মৌসুম আসছে। কতটুকু স্থায়িত্ব হবে এটা বলা মুশকিল। উপজেলার চেয়ারম্যানের সাথে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করে একটা ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ