Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ছুটি শেষে এখনও ফাঁকা রাজধানী

ঈদ শেষে ফিরছে মানুষ : নৌপথে স্বস্তি মহাসড়কে ভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

ঈদের পর ফিরতি যাত্রার দ্বিতীয় দিনেও ঢাকামুখো মানুষের ঢল নেমেছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকেই নৌপথে ঘাট এলাকায় দেখা যায় উপচেপড়া ভিড়। পরিবহন সংকট আর বাড়তি ভাড়ার ভোগান্তি সয়েই কর্মস্থলে ফিরছেন সবাই। তবে নৌপথে আগের মতো ভোগান্তি নেই। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় মহাসড়কে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। এদিকে, দ্বিতীয় দিনে হাজার হাজার মানুষ ফিরলেও ঢাকা এখনও ফাঁকা। রাস্তায় নেই যানজট, নেই কোলাহল। ব্যস্ত এলাকাগুলো এখনও নীরব। যানজট আর জনজটের নগরীর সেই চিরচেনা রূপ পেতে সময় লাগতে পারে আরো এক সপ্তাহ। ঈদের একদিন আগে থেকেই ফাঁকা হয়ে গেছে ঢাকা। গতকালও তার ব্যতিক্রম ছিল না। রাস্তায় যানবাহন খুব একটা ছিল না। মার্কেট, বিপনীবিতানসহ পাড়া মহল্লার অধিকাংশ দোকানই ছিল বন্ধ। গণপরিবহনেও যাত্রীর কোনো চাপ ছিল না।

জানা গেছে, ঈদের পর দ্বিতীয় দিনেও গতকাল ভোর না হতেই হাজার হাজার মানুষ আসতে থাকেন ঘাট এলাকায়। মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার কিংবা হেঁটে যে যেভাবে পারছেন নদী পারাপারের জন্য ভিড় করছেন। ফেরি পর্যাপ্ত থাকলেও ছোটবড় যানবাহন আর যাত্রীচাপে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। প্রিয়জনের টানে ঘরে ফেরা মানুষকে জীবিকার তাগিদে ফিরতে হচ্ছে নগরীতে। কয়েকজন জানান, ফেরিতে অনেক ভিড়। সরকার যে জন্য গাড়ি খুলে দিচ্ছে না। সেটাতো এখানে হচ্ছে না। আরও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। এদিকে, লকডাউন উপেক্ষা করে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে গতকাল সকাল থেকেই ট্রলার, স্পিডবোট ও ফেরিতে মেঘনা নদী পাড়ি দিতে দেখা যায় হাজার হাজার মানুষকে। প্রতিটি ট্রলার ও ফেরিতেই ছিল ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী।
অন্যদিকে, মহাসড়কে যানজট না থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার না মেনেই ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এবং উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় চলাচল করছে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস। প্রতিটি বাসেই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে, ঈদের ছুটির পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চালু হলেও রাজধানীতে গণপরিবহনে যাত্রীর চাপ নেই। যাত্রীর অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় স্টপেজে দাঁড়িয়ে থাকছে বাস। এ নিয়ে চালক-হেলপারের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়াচ্ছেন যাত্রীরা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাসচালক ও হেলপাররা বলছেন, ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। এ কারণে অর্ধেক যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে বাস চলছে। কিন্তু সেই অর্ধেক আসন পূরণ করতে বাসগুলোকে দীর্ঘক্ষণ সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সড়কে সিএনজি ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলকেও বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে যাত্রী খুঁজতে দেখা গেছে।
যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে কথা হয় রাঈদা পরিবহনের চালক রাসেলের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রচন্ড গরমের মধ্যেও বাস চালাচ্ছি। প্রতি ট্রিপে ছয়-সাতজন লোক নিয়ে যেতে হচ্ছে। বাড্ডায় নূর এ মক্কা পরিবহনের চালক মিশুক বলেন, ঈদ শেষ হয়েছে। তারপরও মানুষ এখনো গ্রাম থেকে আসেনি। যাত্রী একদম নেই, আজ পুরাই লস। কারওয়ান বাজারে বিহঙ্গ ও শিকড়সহ আরও কয়েকটি বাসের চালক একই তথ্য জানান। বিকল্প পরিবহনের চালক কামাল আহমেদ বলেন, ঈদের দিন যাত্রী ছিল। এই কয়দিন যাত্রী নেই। সকাল থেকে এক ট্রিপ দিয়েছি। অর্ধেক যাত্রীও পাইনি। যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা বিহঙ্গ বাসের যাত্রী সোহান আরমান বলেন, একটা কাজে যাত্রাবাড়ী যাব। বাস ফাঁকাই আছে। তবে প্রত্যেক স্টপেজেই ৫ থেকে ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকছে।
দুপুরে মিরপুর-১০ নম্বরে যাত্রীর অপেক্ষায় থাকা সিএনজিচালক জামিল বলেন, ঢাকায় মানুষ আসা শুরু করলে আবার যাত্রী বাড়বে। এখন সড়কে যাত্রী কম। অন্যদিন দুপুর পর্যন্ত এক হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার ভাড়া মারা যায়। কিন্তু আজ এখন পর্যন্ত ৪০০ টাকার ভাড়া মারতে পেরেছি।
রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা মতিঝিল গতকালও ছিল নীরব। বেশিরভাগ অফিস খোলেনি। ব্যাংক-বীমা খুললেও মানুষের উপস্থিতি তেমন একটা ছিল না। কিছু গাড়ি চলাচল করলেও রিকশার আধিক্যই বেশি দেখা গেছে। ফুটপাতগুলো পড়ে আছে শূণ্য। বায়তুল মোকাররম মসজিদের স্বর্ণের দোকানের সামনেও ফুটপাতের দোকানগুলোও খোলেনি। পলিথিন পেচিয়ে বিক্রেতারা সেগুলো ফেলে রেখেছেন। একজন গার্ড জানান, রাতে তারা দোকানগুলো পাহারা দিয়ে রাখেন। মানুষজন না থাকায় দিনেও বেলায়ও সেগুলো পাহারা দিয়ে রাখতে হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ