পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঈদের দিনে নেতাকর্মী, কূটনীতিবিদসহ সাধারণ মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করা রীতিতে পরিণত ছিল বেগম খালেদা জিয়ার। অসংখ্য নেতাকর্মীসহ অনেকেই কেবল ওই দিনটির জন্য অপেক্ষা করতেন প্রিয় নেত্রীকে কাছ থেকে দেখার, সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য। কেউ কেউ উৎসবের দিনটিতে গ্রামে স্বজনদের সাথে না থেকে আনন্দ উপভোগ করতেই এটিতেই।
কিন্তু ২০১৮ সালে কারাবন্দী হওয়ার পর থেকেই এই রীতিতে ভাটা পড়েছে। গতবছর শর্তসাপেক্ষে কারামুক্ত হলেও ফিরোজে নিরবেই কেটেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ঈদ। প্রিয় নেত্রীর সাক্ষাত পাবেন কিনা নিশ্চিত না হলেও গতবছরও অনেক নেতকার্মী আশায় বুক বেধে ঢাকায় ঈদ করেছেন। ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর আশা ছিল এবার যদি তারা শুভেচ্ছা বিনিময়ের সুযোগ পান। কিন্তু তাদের সেই আশায় গুড়েবালি দিয়েছে প্রাণঘাতি মহামারি করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঈদের আগে থেকেই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাই অনুমিতই ছিল তাঁর এবারের ঈদ কাটছে হাসপাতালের বিছনায়।
খালেদা জিয়ার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের স্মৃতিচারণ করে স্বেচ্ছাসেবক দলে সহ-সাধারণ সম্পাদক কাজী ইফতেখায়রুজ্জামান শিমুল বলেন, ঈদের দিনে আমাদের মূল আনন্দই ছিল ম্যাডামের সাথে সাক্ষাত হবে, শুভেচ্ছা ও সালাম বিনিময় করবো। এর চেয়ে বড় উৎসব ও আনন্দ আমাদের জন্য কিছু না। এজন্য আমরা ঈদে গ্রামে না গিয়ে ঢাকাতেই থাকতাম। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরেই এটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন বলেন, ম্যাডামের সাথে আমাদের সাক্ষাত করার সুযোগ না হওয়া অনেক কষ্টের। তিনি কারাবন্দী হওয়ার পর থেকেই আমরা তার সাক্ষাত পায়নি। গতবছর মুক্ত হওয়ার পর আশা করেছিলাম আবার হয়তো ঈদে সালাম বিনিময়ের সুযোগ পাবো। কিন্তু এই অপেক্ষা দীর্ঘায়িতই হচ্ছে। তারপরও আমরা দোয়া করি তিনি যেনো সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন।
তবে এবারই প্রথম নয়, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে দুটি ও রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের কেবিনে আরও দুটি ঈদ কেটেছে বেগম খালেদা জিয়ার। সেখানে অবশ্য কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঈদের দিনে দল ও পরিবারের সদস্যরা গিয়ে দেখা করেছেন। বাসা থেকে পছন্দের রান্না করা খাবার খেয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া। গতবছর ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত হওয়ার পর দুটি ঈদ ফিরোজায় কাটিয়েছেন। সে সময় পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ফিরোজায় গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেন। এবারও স্বজনদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ থাকলেও সেটি হয়নি। কারণ তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) তাকে স্থানান্তর করা হয়। যদিও এরই মধ্যে তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু করোনা পরবর্তী শারীরিক নানা জটিলতার কারণে এখনো সিসিইউতে রেখেই তাকে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
বিএনপি ও পরিবারের সূত্রে জানা যায়, ঈদের দিনে হাসপাতালের সামনে নেতাকর্মীদের ভিড় না করার জন্য আগে থেকেই নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল। এমনকি হাসপাতালেও স্বজন ও সিনিয়র নেতাদের সাক্ষাতের বিষয়ে কঠোর ছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ওই দিন দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাই এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। তিনি জানান, ম্যাডাম অতি ধীরে ধীরে হলেও ই¤প্রুভ করছেন। বেশ ই¤প্রুভ করেছেন ইতোমধ্যে। তবুও তার ডাক্তার সাহেবরা আমাকে বলেছেন যে, স্টিল হার কনডিশন ইজ ক্রিটিক্যাল। তবে অনেকগুলো বিষয়ে তার উন্নতি হয়েছে এবং তারা (ডাক্তাররা) খুব আশাবাদী অতি শিগগিরই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
ঈদের দিন বিকেলে হাসপাতালে যান খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ও ছেলে অভিক ইস্কান্দার। এভারকেয়ার হাসপাতালে কিছুক্ষণ থেকে তারা চলে যান। তবে সাক্ষাতের হয়েছে কিনা সেবিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু জানায়নি কেউ। পরিবারের একজন সদস্য সূত্রে জানা যায়, কারাবন্দী থাকা অবস্থায় যেভাবে তারা রান্না করা খাবার নিয়ে যেতেন এবারও তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জন্য তাঁর পছন্দের খাবার রান্না করে নিয়ে গিয়েছিলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু সিসিইউতে আছে তাহলে খুব ভালো তো বলা যাচ্ছে না। এখনো মাঝে মাঝে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে। অক্সিজেন নিতে হচ্ছে। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। পরিবারের ওই সদস্য হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা আশা করেছিলাম সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে একজন সম্মানিত, প্রবীণ নাগরিক বিবেচনায় নিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেবে। কিন্তু সেটি হলো না।
গত ২৭ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বেগম খালেদা জিয়াকে। সেখানে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।