Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেরপুরে থেমে নেই এনজিও’র কিস্তি আদায়, বিপাকে কর্মহীন ঋন গ্রহিতারা

শেরপুর জেলা সংবাদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০২১, ৪:০২ পিএম

করোনা ভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে লকডাউনে কর্মীহীন হয়ে পড়েছেন দেশের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। সরকার ঘোষিত লকডাউনে যখন তারা পরিবারের ভরন-পোষন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে, ঠিক এমন সময় শেরপুরে এনজি'র কিস্তির চাপে দিশেহারা হয়ে পরেছেন লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া হতদরিদ্র-অসহায় ঋন গ্রহিতারা। লকডাউনের কারণে নামি-দামি অনেক ব্যাংক ঋন গ্রহণ স্থগিত রাখলেও নামে-বেনামে গড়ে ওঠা বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঋন উত্তোলন করে যাচ্ছে। ফলে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা। সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা অনেকে পেলেও আবার অনেকের ভাগ্যে তা জুটছে না। মুখ ফুটে কাউকে কিছু বলতেও পারেন না অনেকেই। বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন শেরপুরের শতশত হতদরিদ্র মানুষ। লকডাউন চললেও এনজিও ঋণের কিস্তির চাপ থেমে নেই। জেলার সর্বত্র পুরোদমে চলছে ঋণের কিস্তি আদায়। কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পাড়ায় ঋন গ্রহিতার বাড়ি থেকে গৃহপালিত গরু পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে এনজিও’র কর্মীরা- এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে।
জানা যায়, গত ৪ মে রাতে আর.ডি.এস এর এক মহিলা কর্মী শেরপুর সদর উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়েনের ভাটিপাড়া গ্রামের হেলাল উদ্দিনের বাড়িতে ঋণের কিস্তি আদায় করতে যান। ওইসময় হেলাল উদ্দিন কিস্তির টাকা দিতে না পাড়ায় তার একটি গরু নিয়ে রওনা হন ওই এনজিও কর্মী। পরে এলাকাবাসীর অনুরোধ করে গরুটি রেখে দেন।
স্থানীয় খামারপাড়া গ্রামের আদিল জানান, ঋন করে অটোরিকশা ক্রয় করে প্রতিদিন ৫শ থেকে ৬শ টাকা আয় হতো। তা থেকে সাপ্তাহিক কিস্তি দিতাম ৪ হাজার টাকা। এখন লক-ডাউনের কারণে আগের মতো আয়-রোজগারও হয় না। আর ঠিকভাবে কিস্তিও দিতে পারছি না বলে, রাতে কিস্তি আদায় করতে বাড়িতে আসেন এনজিও কর্মীরা। গনই বডুয়া গ্রামের বুলুবুল আহম্মেদ বলেন, ‘শক্তি ফাউন্ডেশন’র কাছ থেকে ঋন করে কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে এখন আমি দিশেহারা। এনজিও'র লোকজনের কথা হচ্ছ- সংসার চলুক আর না চলুক চুরি করে হলেও আমাদের কিস্তি দিতে হবে।
ভাটিপাড়ার তোফা মিয়ার ছেলে শেখ ফরিদ কিস্তির চাপে বর্তমানে বাড়ি থেকেই পলাতক রয়েছেন। তার স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী কিস্তির কারণে পালিয়েছে। আমি ছেলে-মেয়ে নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।
শক্তি ফাউন্ডেশনের কেডিট কর্মকর্তা হাবিব ইসলাম বলেন, লক-ডাউন মানলে তো ঈদের আগে আমাদের বেতন ভাতা কর্তৃপক্ষ দিবে না। অফিসের নিয়ম মেনে কিস্তি আদায় করতে আমরা বাধ্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ