পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতীয় করোনা ভ্যারিয়েন্ট যাতে বাংলাদেশে না আসে সে লক্ষ্যে গত ১৪ এপ্রিল থেকে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীনতা এবং স্ববিরোধী কর্মকান্ডে সীমান্ত দিয়ে মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর এতে ভারতীয় করোনা ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। আর এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটাতে (জিআইএসআইডি)। দেশে তাহলে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেলো কি না প্রশ্নে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এস এম আলমগীর জানান, ওখানে আপলোড হলে তো পাওয়াই গেছে। গতকাল শনিবার জিআইএসআইডি এই তথ্য জানিয়েছে। তিনি জানান, রাজধানীর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া স্যাম্পল পরীক্ষা করে এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। ডা. আলমগীর জানান, নমুনাগুলো থেকে জিনোম সিকোয়েন্স করা হয় আইইডিসিআর এর ল্যাবে। তথ্য আপলোড করেছে ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইদেশি)।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, যশোরে কোয়ারেন্টিনে থাকা ভারত ফেরত ৬ জনের দেহে ভারতীয় ডাবল মিউট্যান্ট ধরণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুই জনের নিশ্চিতভাবে এবং ৪ জনের মধ্যে আংশিক ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট নিশ্চিত হয়েছে আইডিসিআর। আক্রান্তরা চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন এবং বর্তমানে যশোরে অবস্থান করছেন। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত থেকে যারা দেশে আসছেন তাদের সবাইকেই হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। শুধু ভারতের ভ্যারিয়েন্ট নয়, সব ধরনের ভ্যারিয়েন্ট দেশে প্রবেশ রোধে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
জিআইএসআইডি এর তথ্য বলছে, ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বি-১৬১৭ যাদের শরীরে পাওয়া গেছে সেই ২ জনের বয়স ৪১ এবং ২৩। তারা ভারতে ভ্রমণে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের একজন খুলনার এবং একজন ঢাকার। দুইজনই পুরুষ। তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় গত ২৮ ও ২৯ এপ্রিল। তাদের একজনের ভ্যাকসিন নেওয়ার কোনও ইতিহাস নেই। আরেকজনের বিষয়ে এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য নেই। উল্লেখ্য, ভারতে এই ভ্যারিয়েন্ট প্রথমে মহারাষ্ট্রে শনাক্ত হয় গত বছরের ৫ অক্টোবর। সম্প্রতি এটি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে মৃত্যু ও শনাক্তের। গতকাল শনিবারও করোনা মহামারিতে একদিনে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে দেশটিতে। সরকারি হিসাবে ভারতে এদিন মৃত্যু হয়েছে চার হাজার ১৮৭ জনের। আর একই দিন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে চার লাখ এক হাজার ৭৮ জন। ভারতে বর্তমানে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৭ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৬ জন। মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৩৮ হাজারের বেশি।
ভারতের নতুন ধরনের করোনা ভ্যারিয়েন্ট কোনোভাবেই যাতে বাংলাদেশে ছড়াতে না পারে সেজন্য সীমান্ত ১৪ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ। গত ২৬ এপ্রিল থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হয়েছে। তবে যেসব বাংলাদেশির ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে তারা ভারতে বাংলাদেশি দূতাবাসের বিশেষ অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরছেন।
এ ব্যাপারে আইসিডিডিআরের সিনিয়র গবেষক ডা. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা প্রতি সপ্তাহে জিনোম সিকোয়েন্স করি। গত সপ্তাহে আমরা ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ২০ জনেরও বেশি করোনা রোগীর নমুনা বিশ্লেষণ করেছি। সেগুলোতে আমরা কোনো ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাইনি। তবে, ইতোমধ্যে বেশি সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলের ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব দেশে থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এদিকে যশোর ব্যুরো থেকে বিশেষ সংবাদদাতা জানান, যশোরে কোয়ারেন্টিনে থাকা ভারত ফেরত যাত্রীদের মধ্যে দুইজনের শরীরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। আর এ খবর গতকাল জানিয়েছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান, জোনাম সেন্টারের পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা শেষে এটি শনাক্ত হয়।
যবিপ্রবি সূত্র জানায়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরণ শনাক্ত করা হয়েছে। ভারত ফেরত ১৬ জন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে ৩ জনের করোনা পজিটিভ আসে। পজিটিভ তিনজনের মধ্যে দুজনের শরীরে ভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে।
যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে গত শুক্রবার রাতে সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বে একদল গবেষক সিকোয়েন্সির মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় এ ধরণ শনাক্ত করেন। ইতোমধ্যে ভারতীয় ধরণ শনাক্তের বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, আইইডিসিআর ও যশোরের স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহিন জানান, ভারত ফেরত যাত্রী যারা করোনা পজিটিভ তাদের নমুনা পরীক্ষার জন্য যবিপ্রবিতে পাঠানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত তথ্য আমাদের কাছে নেই। যবিপ্রবি সূত্র জানায়, ওই দুই রোগীকে আলাদা করে চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি ভারত থেকে ফেরার পথে তার সংস্পর্শে আসা সকল ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টিনে নিয়ে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এদিকে গত শুক্রবার পর্যন্ত বিশেষ ছাড়পত্রে ভারত থেকে বেনাপোল সীমান্ত পথে দেশে এসেছেন মোট ২৪৮৭ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৬ জন। বাকিরা আবাসিক হোটেল, এতিমখানা ও ক্লিনিকসহ বিভিন্নস্থানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।