Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাশিয়ান স্পুটনিক-ভি টিকার দাম ৯ দশমিক ৯৫ ডলার

দাম কমানোর জন্য দর কষাকষির প্রস্তাব করা হয়েছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকার জন্য তৎপরতার পাশাপাশি নেক্সট জেনারেশন টিকার প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে : বিশেষজ্ঞদের অভিমত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০২১, ১২:০২ এএম

দেশে টিকার চাহিদা মেটাতে সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে স্পুটনিক-ভি টিকা কিনতে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হলেও এখনো দুই দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়নি। রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত যে চুক্তিপত্র পাঠানো হয়েছিল, সেটিতে প্রায় ৩০টি সংশোধনী আনা হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। সেখানে ১০ নং সংশোধনীতে বলা হয়েছে, প্রতি ডোজ টিকার দাম ৯ দশমিক ৯৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অত্যাধিক বলে প্রতিয়মান হয়। তাই টিকার দামের জন্য দরকষাকষি করা আবশ্যক।
সরকারের এই সংশোধনীর প্রস্তাবের সঙ্গে একমত দেশের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, টিকার মূল্য নির্ধারণের বিষয়টির ওপর কূটনৈতিক ও প্রাপ্যতার বিষয়টি নির্ভর করে। তাছাড়া টিকার প্রপ্যতা নিশ্চিতে সরকারের বর্তমান তৎপরতা ঠিক আছে। তবে এই তৎপরতার পাশপাশি নেক্সট জেনারেশন টিকার প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ একবার টিকা দিয়েই করোনা নির্মূল করা সম্ভব হবে না।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইনকিলাবকে বলেন, প্রতি ডোজ ৯ দশমিক ৯৫ ডলার রাশিয়ার পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে। তাদের এই প্রস্তাবের বিপরীতে আমাদের পক্ষ থেকে কিছু সংশোধনী পাঠানো হয়েছে। যেখানে দাম কমানোর জন্য দরকষকাষি করার প্রস্তাবও করা হয়েছে। এটার প্রস্তাবিত দুই ডোজের দামও মর্ডানা বা ফাইজারের এক ডোজের চেয়ে কম।

এছাড়া চায়নার যে টিকা নিয়ে আলোচনা চলছে সেটার কোন প্রস্তাবিত দাম এখনো আমরা পাইনি। আমরা আশা করি দ্রুতই টিকা পাবো। সেজন্য রাতদিন চেষ্টা করছি। কিন্তু চাহিদান তুলনায় টিকার সঙ্কট রয়েছে। তারপরেও আমরা অ্যাস্ট্রাজেনেকার জন্য বেশি চেষ্টা করছি। যেখানে উৎপাদন হচ্ছে বা মজুদ রয়েছে সেখান থেকে আনার চেষ্টা করছি।

প্রস্তাবিত সপ্ল­াই এগ্রিমেন্টে আনিত সংশোধীনতে বলা হয়েছে, দুইটি ডোজের মধ্যবর্র্তী সময়ে (১ অথবা ২ মাস) নির্দিষ্ট থাকায় বিক্রেতা যদি উক্ত সময়ের মধ্যে সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে প্রথম ডোজ গ্রহনকারীর কোন উপকার হওয়ার সুযোগ থাকে না। তাই এই দায়িত্ব বিক্রেতাকেই বহন করতে হবে। এক্ষেত্রে চুক্তিতে প্রথম ডোজ সরবরাহের পর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহনের নির্ধারিত সময়ের আগেই সেটি সরবরাহের বাধ্যবাধকতা থাকা উচিৎ।

মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, প্রথম চালান সরবরাহের আগেই মোট চুক্তির ৫০ শতাংশ দাম পরিশোধের বিষয়টি উল্ল­খ রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতি চালানে যে পরিমান টিকা সরবরাহ করা হবে তার দাম অগ্রিম হিসাবে ‘নোটিস অব রেডিনেস’ প্রাপ্তির ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রেরনের বিষয়টি অন্তর্র্ভূক্ত করাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত চুক্তির ২.৩ এর ‘সি’ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, আমদানিকৃত টিকা কত তাপমাত্রায় ও আদ্রতায় পরিবহণ করতে হবে এবং সংরক্ষণ করতে হবে তার স্পষ্ট উল্লে­খ নেই। কাজেই উল্লেখিত বিষয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতা আছে কিনা এ বিষয়ে ধারণা পাওয়ার জন্য সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকা আবশ্যক বলে মতামত দেয়া হয়েছে।

মূল প্রস্তাবনায় প্রতি ডোজের জন্য শুণ্য দশমিক এক শতাংশ হারে রয়ালিটি প্রদানের বিষয়ে উল্লেখ আছে। এই রয়েলিটি দামের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এই বিষয়টি স্পষ্ট করতে ‘ডেফিনেশন এন্ড ইন্টারপ্রিটেশন’ এর আওতায় মূল্যের প্রকৃত সঙ্গা প্রদান করতে বলা হয়েছে। স্পুটনিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান যদি সরল বিশ্বাসে বা নিয়ন্ত্রন বর্হিভূত কিছু করে থাকে তাহলে তা থেকে অব্যহতি পাবে। এক্ষেত্রে সংশোধনী আনেত অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সরকার।

খসড়ার ১৩.১ এর উল্লেখ করে সংশোধীনর ২৫ নম্বরে বলা হয়েছে, চুক্তির কোন শর্ত লঙ্ঘন বা প্রকাশের জন্য ক্রেতা বিক্রেতাকে ১০ লাখ মার্কিণ ডলার অথবা উক্ত শর্ত প্রকাশের জন্য মোট ক্ষতি এই দুটির মধ্যে যেটি বেশি সেই পরিমান অর্থ বিক্রেতাকে দিতে হবে। কিন্তু ক্রেতার ক্ষেত্রে অনুরূপ লঙ্ঘনের জন্য কোন ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ন্যায্যতার স্বার্থে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন বা প্রকাশের জন্য দায়ী কর্তৃক অপর পক্ষকে ক্ষতিপূরন প্রদানের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। পাশপাশি ক্ষতিপূরণবাবদ এক লাখ মার্কিন ডলার নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত চুক্তিপত্রের ৬.৪ এর উল্লেখ করে সংশোধনীর ১৭ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোন চালানের পণ্যের গুণগত মান ঠিক না থাকলেও মূল্য পরিশোধের কথা বলা হয়েছে। যা পুরোপরি বিক্রেতার পক্ষে যায়। এক্ষেত্রে এই শর্তের পরিবর্তে প্রস্তাব করা হয়েছে, এ ধরনের ক্ষেত্রে দায়দায়িত্ব বিক্রেতার ওপর বর্তায়। এছাড়া চুক্তিপত্রে উভয়পক্ষকে ট্যাক্স পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে যে পক্ষ আয় করবে সেই পক্ষ অথবা প্রত্যক পক্ষ নিজ নিজ দেশে ট্যাক্স-ভ্যাট পরিশোধ করবে মর্মে শর্তে সংযুক্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • Jakaria Sumon ৮ মে, ২০২১, ১:৪২ এএম says : 0
    ভারতের হলে দাম বেশি হলেও চলবে
    Total Reply(0) Reply
  • Muhib Bullah ৮ মে, ২০২১, ১:৪২ এএম says : 0
    ভাল ,ঐ সময় তো সকল প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যম দেশে তৈরি করবে বলছিল ।এখন সময় খারাপ তাই নাকে খদ দিয়ে আন
    Total Reply(0) Reply
  • Monir Khan ৮ মে, ২০২১, ১:৪৪ এএম says : 0
    আমরা যারা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছি। দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারিনি এখন এই রাশিয়ান টিকা কি আমরা নিতে পারবো। সব টিকা একটু একটু করে নিয়ে ভবিষ্যতে পারমাণবিক বোমায় রূপান্তরিত না হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Anwar Shisir ৮ মে, ২০২১, ১:৪৫ এএম says : 0
    বাহরাইনেও এখন রাশিয়ান ভ্যাক্সিন ব্যবহার হচ্ছে। কারন ইদানীং ভারতের কোরোনা পরিস্থিতি অনেক খারাপ। সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অসংখ্য ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Abdullah Abu Noman ৮ মে, ২০২১, ১:৪৫ এএম says : 0
    এখন দেখা যাবে যে কেউ ১ম ডোজ স্পুটনিক ভি নিবে আর দ্বিতীয় ডোজ অক্সফোর্ড এর। গোলমাল যেন না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ করছি
    Total Reply(0) Reply
  • মাজহারুল কাদের ৮ মে, ২০২১, ৩:০৭ এএম says : 0
    সরকারের চেষ্টার কোন ত্রুটী দেখছিনা। আশা করছি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী একটু মনযোগ দিলে অচিরেই সমস্যা কেটে যাবে। আল্লা আমাদের সবাইকে সুস্বাস্থ্য দিয়ে হেফাজত করুন - আমীণ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ