Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গ্র্রেফতারের ১০ দিনের মাথায় জামিনে মুক্ত

করোনা কিট জালিয়াতি চক্র। মামলাটি তদন্ত করবে র‌্যাব

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

র‌্যাবের অভিযোনে অনুমোদনহীন করোনা কিটসহ বিভিন্ন মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট সরবরাহকারী জালিয়াতি চক্রের সবাই গ্রেফতারের ১০ দিনের মাথায় নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। ভার্চুয়াল কোর্ট থেকে তাদের জামিন দেয়া হয়েছে। বিশেষ ক্ষমতা আইন ও জনস্বাস্থ্য বিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। র‌্যাবের দায়ের করা এই মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। তবে সব আসামি জামিনে মুক্ত হওয়ার পর মামলাটির তদন্তভার নিতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে র‌্যাব। আইন-শৃংখলা বাহিনী সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।

র‌্যাবের মিডিয়া ইউং প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গতকাল শুক্রবার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, করোনা কিটসহ বিভিন্ন মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট সরবরাহকারী জালিয়াতি চক্রের গ্রেফতারকৃত ১০জন সবাই নিম্ন আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। এই মামলাটি বর্তমানে পুলিশ তদন্ত করছে। যেহেতু র‌্যাব এর আগেও এ ধরনের মামলা তদন্ত করেছে তাই এ মামলাটি তদন্ত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনা কিটসহ বিভিন্ন মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট সরবরাহকারী জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা আরো কোন অপরাধে জড়িত রয়েছে কিনা তা তদন্ত করছে র‌্যাব। একই সাথে এই চক্রের সাথে অন্য কার কার সম্পৃক্ততা রয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ১৬ এপ্রিল অনুমোদনহীন মেডিক্যাল ডিভাইস আমদানি ও মেয়াদোত্তীর্ণ মেডিক্যাল টেস্টিং কিট, রি-এজেন্ট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকায় রাজধানীর তিনটি প্রতিষ্ঠানের ১০ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-২। গ্র্রেফতারকৃতরা হলো- বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শামীম মোল্লা (৪০), ম্যানেজার শহিদুল আলম (৪২), এক্সন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের এমডি মাহমুদুল হাসান (৪০), হাইটেক হেলথকেয়ার লিমিটেডের এমডি এস এম মোস্তফা কামাল (৪৮), বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনানের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ আল বাকী সাব্বির (২৪), জিয়াউর রহমান (৩৫), মো. সুমন (৩৫), জাহিদুল আমিন পুলক (২৭) ও সোহেল রানা (২৮)। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অনুমোদনহীন করোনা টেস্ট কিট, রি-এজেন্ট উদ্ধার করা হয়। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে রাজধানীর বনানী, হাজারীবাগ ও বসিলা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাব। এসময় তাদের সঙ্গে ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ছিলেন। এই ঘটনায় গত ১৭ এপ্রিল র‌্যাব বাদী হয়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করে।
মামলার এজাহারে র‌্যাব উল্লেখ করে, চক্রটি অননুমোদিত মেডিক্যাল ডিভাইস আমদানি করে ভেজাল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ মেডিক্যাল টেস্টিং কিট এবং রি-এজেন্টে জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন করে মেয়াদ বসিয়ে বিক্রয় ও বাজারজাত করে আসছিল। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মহামারির প্রাদুর্ভাবকে পুঁজি করে অবৈধ লাভবান হওয়ার জন্য বেআইনিভাবে বিভিন্ন নামে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে। তারা এসব প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে যথাযথ অনুমতি ও কাগজপত্র ব্যতীত ভেজাল এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী খাঁটি হিসাবে বিক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য বিতরণ এবং বাজারজাত করছিল। এই অপরাধ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-গ(গ)(ঘ)(ঙ) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও র‌্যাব দাবি করে।
মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান মোহাম্মদপুর থানার এসআই দেবাশীষ। তিনি বলেন, আমি আসামিদের আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ড চাই, আদালত তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে। এরপর আসামিদের জামিন হয়ে যায়। আদালত জামিন দিলে আমাদের কিছু করার থাকে না।
আদালত সূত্র থেকে জানা গেছে, মামলার সব আসামিই জামিন পেয়েছেন। গত ২৬ এপ্রিল মামলার তিন ও চার নম্বর আসামি মাহমুদুল হাসান (৪০) ও এস এম মোস্তফা কামাল (৪৮) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের আদালত থেকে প্রথমে জামিন পান। এরপর গত ৩ মে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ উর রহমানের আদালত থেকে অপর আসামিরা জামিন পান।
ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের বলেন, আমি আসলে বিষয়টি পরবর্তীতে জানতে পেরেছি। ভার্চুয়াল কোর্ট তাদের সবাইকে জামিন দিয়েছেন। ভার্চুয়াল কোর্টে ওই আদালতের পিপি অংশ নিয়েছিলেন। আদালত কোন গ্রাউন্ডে, কেন তাদের জামিন দিলো, তা দেখতে হবে। এসব মামলা আরও সতর্কভাবে দেখা উচিৎ। বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা এই মামলায় তাদের সিএমএম থেকে জামিন পাওয়ার কথা না। কারণ তারা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। লকডাউন থাকায় জামিন বাতিলের জন্য আবেদন করা সুযোগ নেই। তবে লকডাউন শেষ হলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ