পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জহুর হকার্স মার্কেটের প্রবেশপথে প্রচন্ড ভিড়। ভিড় ঠেলে ক্রেতারা ঢুকছেন মার্কেটে। ঠেলাঠেলি, হুড়োহুড়িতে বেহাল অবস্থা। নারী, পুরুষ থেকে শুরু করে ছেলে-বুড়ো সবাই যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এমন দৃশ্য দেখা যায় বন্দরনগরীর জহুর হকার্স মার্কেটে। পাশের রেয়াজুদ্দিন বাজার, নিউমার্কেটসহ নগরীর প্রায় প্রতিটি মার্কেট, শপিংমল ও বিপণি কেন্দ্রে এখন উপচেপড়া ভিড়। অভিজাত শপিংমল থেকে শুরু করে হকার্স মার্কেট এবং ফুটপাতেও ব্যাপক ক্রেতা সমাগম। মানুষে গিজগিজ অবস্থায় উধাও হয়ে গেছে স্বাস্থ্যবিধি।
ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক পড়লেও মানা যাচ্ছে না শারীরিক দূরত্ব। ঈদ বাজারকে ঘিরে মানুষের এমন হুড়োহুড়িতে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা বেড়েই চলেছে। তবে সীমিত পরিসরে মার্কেট খোলায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে খুশি। ব্যবসায়ী, দোকান মালিকেরা গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তৎপর। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতেও নানা উদ্যোগ নিয়েছে মার্কেট ও শপিংমল কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসনের ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পালা করে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। এরপরও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। মুসলমানদের প্রধান এ ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে ঈদ বাজার জমে উঠেছে। গত বছর করোনা লকডাউনের কারণে মার্কেট, বিপণি কেন্দ্র বন্ধ ছিল। এবারও রোজার শুরু থেকে কঠোর লকডাউন চলছে। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সীমিত আকারে খুলে দেয়া হয়েছে মার্কেট, শপিংমল। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেই দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয় সরকারি তরফে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে মার্কেট কর্তৃপক্ষের চেষ্টার কোন কমতি নেই।
বড় বড় মার্কেট, শপিংমলে ক্রেতারা মাস্ক পরেই প্রবশে করছেন। প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাও রয়েছে। বিভিন্ন দোকানেও রাখা হয়েছে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার। যাদের মাস্ক নেই তাদের মুখে মাস্ক পরিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে মানুষের প্রচÐ ভিড়ের কারণে মার্কেট, শপিংমলে সামাজিক তথা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। নগরীর অভিজাত শপিংমলগুলোতে স্বাস্থবিধি মানতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে সক্রিয় দেখা গেছে। ক্রেতারাও পারতপক্ষে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার চেষ্টা করছেন। তবে যেসব মার্কেটে ক্রেতার ভিড় বেশি সেখানে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে।
নগরীর স্যানমার ওশান সিটি, আখতারুজ্জামান সেন্টার, আফমি প্লাজা, মিমি সুপার, ফিনলে স্কয়ার, ইফকো সেন্টারসহ অভিজাত শপিংমলগুলোতে ক্রেতার ভিড় রয়েছে। এসব শপিংমলে বেশিরভাগ ক্রেতা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। বিক্রেতারা সময় ক্ষেপণ না করে মোটামুটি ন্যায্যদামেই ঈদের পোশাক ছেড়ে দিচ্ছেন। তাতে দর কষাকষি করতে না হওয়ায় ক্রেতারাও কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছর তারা লোকসান দিয়েছে। এবার ভাল বেচাকেনা হবে সে প্রত্যাশা নিয়ে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু রোজার শুরুতে লকডাউন শুরু হওয়ায় কঠিন দুশ্চিন্তায় পড়েন তারা। এ অবস্থায় সরকার সীমিত আকারে হলেও মার্কেট খুলে দেয়ায় তারা খুশি। বেশি লাভ না করে ন্যায্যদামে পোশাক বিক্রি করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান তারা। তবে দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও রয়েছে।
চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স, সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেট, লাকী প্লাজা, সাউথ ল্যান্ড সেন্টার, নিউমার্কেট, আমিন সেন্টার, গুলজার টাওয়ার, শাহ আমানত শপিং কমপ্লেক্স, আর এফ পুলিশ প্লাজা, চকভিউ মার্কেট, বহদ্দারহাট হক মার্কেট, বে-শপিং কমপ্লেক্স, মহাজন টাওয়ার, ঝনক প্লাজা, আলী শাহ শপিং কমপ্লেক্স, কর্ণফুলী মার্কেটে সব শ্রেণি পেশার মানুষের ভিড় রয়েছে। এসব মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা কিছুটা কম। সবচেয়ে বেহাল অবস্থা নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজার ও জহুর হকার্স মার্কেটে। এসব মার্কেটে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ক্রেতার ভিড়ে ত্রাহি অবস্থা। অলিগলিতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের ভিড় লেগেই আছে। অনেকের মুখে মাস্ক নেই, গরম আর ভিড়ের অজুহাতে মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন ক্রেতারা। বিক্রেতাদের মধ্যেও নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আজ শুক্রবার এবং আগামীকাল শনিবার মার্কেটে ক্রেতার ভিড় আরও বাড়বে। গত বছর মানুষ কেনাকাটা করতে পারেনি। নি¤œ এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা মূলত ঈদ সামনে রেখেই বছরে একবারেই কেনাকাটা করেন। সে হিসেবে এবার মার্কেটে ক্রেতার চাপ বাড়ছে। তাছাড়া ঈদে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না অনেকের। ফলে ঈদের আগের দিন তথা চাঁদ রাত পর্যন্ত নগরীর ঈদ মার্কেটে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লেগেই থাকবে।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই দেখছেন স্বাস্থ্যবিধি না মানার প্রবণতা। বুধবার রাতেও নগরীর বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালিয়ে ৬১ মামলায় ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ করেছেন এক হাজার মাস্ক। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যু কিছুটা কমলেও দেশের অন্য এলাকার তুলনায় সংক্রমণ এখনও বেশি। গত কয়েকদিনে দেশে গড় সংক্রমণের হার আট শতাংশে নেমে আসলেও চট্টগ্রামে তা ১৪ থেকে ১৫ শতাংশে ঘুরপাক খাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা না গেলে সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।