পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি না মানায় পুলিশের সহযোগিতায় রাজধানীর পল্টনে চায়না টাউন মার্কেট বন্ধ করেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। গতকাল মঙ্গলবার মার্কেট খোলার আগ মুহুর্তে সেখানে অবস্থান নিয়ে সেটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এ খবর মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয়। এ সময় দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেছেন, অন্য কোনো মার্কেটে যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানা হয়, সেগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর সংশ্লিষ্টরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত করতে পারেন, এই মার্কেটি খুলতে দেয়া হবে। এ যেন দোকান মারিক সমিতির সাজানো নাটক! সরকার ও সংশ্লিষ্টদের বোঝানো হচ্ছে মার্কেটের দোকান ও শপিংমলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে তারা আন্তরিক।
বাস্তবতা ভিন্ন। গতকাল রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, গুলিস্তান, নিউ মার্কেট, বায়তুল মোকাররম, মার্কেট, মিরপুর-১, মিরপুর-১০ নম্বর, পল্টন, শান্তিনগর কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে বেশির ভাগ ক্রেতা বিক্রেতা স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না। মুখে মাস্ক থাকলেও বেশির ভাগ ক্রেতাবিক্রেতা ঘেঁষাঘেঁষি করে কেনাকাটা করছেন।
করোনার মধ্যেই শর্ত সাপেক্ষে মার্কেট ও শপিং মল খুলে দেয়া হয়েছে। মুখে মাস্ক বাধ্যতামূলক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দোকানদারি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। মুখেই প্রতিশ্রæতি দেয়া হলেও রাজধানীর বেশির ভাগ মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না।
করোনার মধ্যে সামনে আসছে ঈদ। এই ঈদকে কেন্দ্র করে শপিংমল, বিপণিবিতানে ছুটছে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্তরা। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সব স্তরের ক্রেতা সমাগমে রাজধানীর শপিংমলগুলোয় কেনাকাটার ধুম লেগেছে। এমনকি ফুটপাতেও ক্রেতাদের ভিড় করতে দেখা গেছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানা কথা বলা হলেও মার্কেট ও শপিং মলের ভীড়ের দৃশ্য দেশে মনে হয় না দেশে করোনা মহামারি রয়েছে।
গতকাল, রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, গুলিস্তান, নিউ মার্কেট, বায়তুল মোকাররম, মার্কেট, মিরপুর-১, মিরপুর-১০ নম্বর, পল্টন, শান্তিনগর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বড় বড় মার্কেট ও শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, সবখানেই লেখা ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’। কিন্তু ক্রেতা বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও বেশির ভাগই থুতনিতে মাস্ক রেখে কেনাকাটা করছেন। অনেক মার্কেটে দেখা গেছে প্রচন্ড ভিড়। ক্রেতারা গা-ঘেঁষাঘেঁষি দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন। কোনো কোনো মার্কেটে বিক্রেতা ক্রেতা মোটামুটিভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানলেও ফুটপাতের ভাসমান ব্যবসায়ীদের চিত্র ভয়াবহ। তারা কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এমনকি তাদের ক্রেতারাও না। বরং ক্রেতারা গা-ঘেঁষাঘেঁষি দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন। আর দুপুর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব বাণিজ্যকেন্দ্র এক ধরনের জনসমুদ্রে রূপ নিচ্ছে। মানুষের মধ্যে কেনাকাটার জন্য মার্কেটে যেতে দেখে মনে হচ্ছে সবকিছুই যেন শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই ছুটছেন কেনাকাটা করতে। মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক বছর ধরে কেনাকাটা কম। বেশির ভাগ সময় লকডাউন ছিল। রমজান শেষে ঈদ আসবে। তাই কেনাকাটা বেড়েছে। বায়তুল মোকাররম ও গুলিস্তানের ফুটপাতে প্রচুর মানুষ। এসব ফুটপাতের বিক্রেতারা বলছেন, রাত ৮ টা পর্যন্ত মার্কেট খোলা থাকার কারণে সকালের চেয়ে দুপুর ও বিকেলে ভিড় বেশি হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে বেশি ক্রেতা ছিল না। কিন্তু সোমবার ও মঙ্গলবার ক্রেতাদের উপস্থিতি অনেক বেশি। মার্কেট বন্ধ হলে ফুটপাত খোলা রাখা যায় না। তাই কম পয়সার ক্রেতারা কিনছেন।
একই জায়গায় এক দোকানদারদের মুখে মাস্ক নেই। দোকানিকে ‘স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না কেন? প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি কিভাবে মানবো? এখানে মোড়ে মোড়ে ভিড়। যেখানে তাকাবেন, সেখানেই মানুষের জটলা। এখন কে মাস্ক পরছে, কে পরছে না, আপনি কী করে খেয়াল রাখবেন? মুখে মাস্ক পরলে ক্রেতার সঙ্গে কথা বলবো কেমন করে? আর বিক্রেতারাই বা দরদাম করবেন কেমন করে?
পল্টনে একটি ফ্যাশন হাউসে ঢুকতেই দেখা গেলো, কয়েকজন কর্মচারীর মুখেই মাস্ক নেই। বিধিনিষেধ কেন মানছেন না, জানতে চাইলে দোকান-মালিক বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলি। বেচাকেনা নেই, ক্রেতা নেই। তাই মাস্ক খুলে রেখেছি। অবশ্যই আরেকজন কর্মচারী ইশারায় বলার পর তাদের মাস্ক পরতে দেখা গেছে। বায়তুল মোকাররমের পাশের ফুটপাতে দেখা গেল মাস্ক বিক্রি করছেন যে তার মুখেও মাস্ক নেই। ‘মুখে মাস্ক নেই কেন?’ জানতে চাইলে সাফ জবাব ‘মুখে মাস্ক থাকলে ক্রেতার সঙ্গে কথা বলবো কেমনে?’
নিউমার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি শপিংমল, মিরপুর-১০ নম্বরের শপিং সেন্টার অনেকেই স্বাস্থ্য বিধি মানছেন। স্বাস্থ্যবিধির নিয়ম মেনে দোকানো অনেক ক্রেতা ঢুকতে দেখা গেলেও বেশির ভাগ মার্কেটের ভেতরে চিত্র উলটো। দোকানী মুখে মাস্ক পরলেও ক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। কেউ মুখে মাস্ক পরলেও দোকানের জটলা করছেন।
করোনা দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর প্রতিবেশি দেশ ভারতের বিপর্যয় নেমে এসেছে। প্রায় দুই কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। গতকাল সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন কঠোর বিধি নিষেধ না মালে করোনার ভারতের ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে আসতে পারে। এ অবস্থায় সরকার কঠোর নিধি নিষেধ জারী করেছে। অথচ দোকান খোলা রেখেছে। এর মধ্যে আবার গণপরিবহণ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলার প্রতিশ্রæতি দিলেও রাজধানীর মার্কেটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। ক্রেতা-বিক্রেতা ঘেষাঘেষি করে কেনাবেচা করছেন। মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখে মনে হয় করোনার মধ্যেই রাজধানীর মার্কেটগুলোতে ঈদের কেনাকাটার ধুম লেগে গেছে।
স্বাস্থ্যবিধি না মানায় মিডিয়ায় প্রচার করা পল্টনের যে মার্কেট বন্ধ করে দেয়া হয় তার নাম চায়না টাউন। ওই মার্কেটে চার শতাধিক দোকান রয়েছে। দোকানের বিক্রেতা এবং ক্রেতা- কেউই তেমনভাবে স্বাস্থ্য বিধি মানছিলেন না বলে জানায় দোকান মালিক সমিতি। যদিও সমিতি অনেকবার তদারকি করে বার বার ব্যবসায়ীদের সর্তক করেন। কিন্তু তারা মাস্ক ব্যবহার এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে উদাসিন ছিলেন। এখন দোকান মালিক সমিতির উচিত সবমার্কেটে তদারকী করা।
জানতে চাইলে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, মার্কেটে চার শতাধিক দোকানে কয়েক হাজার কর্মচারী রয়েছেন। করোনার সংক্রমণের ব্যাপারে তাদের করার পরও তারা বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তাই কঠোরভাবে মার্কেটটি বন্ধ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।