Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকার ভ্যাকসিন নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দুর্নীতির কারণেই ভ্যাকসিন সংগ্রহে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। সরকার কতটা দায়িত্বহীন, অযোগ্য হলে, জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কতটা বিচ্ছিন্ন হলে তারা বিকল্প না রেখে ভারতনির্ভর ভ্যাকসিনের সিদ্ধান্ত নেয়। সেটার কারণটা হচ্ছে- শুধুমাত্র দুর্নীতি, অন্য কোনো কারণ নয়।

এই সরকার মূলত কতগুলো মাফিয়া চক্রের মধ্যে একত্রিত হয়েছে এবং তাদেরকে নিয়ে তারা দেশ চালাচ্ছে-একটা মাফিয়া সরকার তৈরি হয়েছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই মাফিয়ারাই আজকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের পরিণতি যে এটা হবে এটা আমরা কখনো আগে কল্পনাও করতে পারিনি। গতকাল রোববার তিনি এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। ফখরুল বলেন, আজকে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই এখানে একটি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন হতে হবে। সেই সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করার জন্যে একটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার হবে এবং এজন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যারা আজকে ক্ষমতা দখল করে আছে তাদেরকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গত ১ মে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভ্যাকসিনের অভাবে টিকা প্রদানের কার্যক্রম হঠাৎ করেই বন্ধ করায় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সভা মনে করে, দেশের সকল স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিএনপি এই বিষয়ে প্রথম থেকেই সরকারকে সতর্ক করেছে। কিন্ত তারা কোনো কর্ণপাত তো করেননি উপরন্তু তারা বিভিন্ন রকমের বিদ্রæপাত্মক কথা বেেলছন এবং তারা তাদের কাজ সম্পর্কে যথেষ্ট আত্মমভরিতা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন তারা অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে টিকা প্রদান কর্মসূচি পালন করে আসছে এবং এ বিষয়ে কোনো সদস্যা হবে না বলেই তারা নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু আমরা দেখলাম একদিন বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অবস্থা এবং গোটা দেশের মানুষ আজকে অত্যন্ত অনিশ্চিয়তায় ভুগছে, আস্থাহীনতায় ভুগছে এবং আশংকায় ভুগছে।

তিনি বলেন, আমরা বার বার করে বলেছিলাম, ভ্যাকসিনের বিকল্প উৎস্য রাখা উচিত এবং না রাখলে হঠাৎ করে কোনো উৎস্য থেকে বন্ধ হয়ে গেলে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। সরকার কোনো কর্ণপাত না করে শুধুমাত্র তাদের দুর্নীতির জন্যে, ভারত থেকেই সংগ্রহ করে গোটা জাতি বিপদগ্রস্থ করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বলছে, তারা ভারতের চাহিদা পূরনের জন্য বাংলাদেশে টিকা সরবারহ করতে পারছে না। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, ভারতের চাহিদা এখন বেশি এবং সে কারণে সমস্ত রফতাানি বাতিল করে ভারতের চাহিদা পূরণ করছে। ভারত তো তার চাহিদা পূরন করবেই। কিন্তু আমাদের সরকার সম্পূর্ণ দায়িত্বহীনতার সঙ্গে অপরাধমূলক কাজ করেছে। তারা বিকল্প উৎসের কোনো অনুসন্ধান করেনি।

তিনি বলেন, চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের সুযোগ থাকার পরেও তা গ্রহণ করা হয়নি। চীনের একজন মন্ত্রী দেশে এসে তাদের ভ্যাকসিন উৎপাদন ও পরীক্ষার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সরকার সেটাকে সম্পূর্ণভাবে অবজ্ঞা করেছে। সরকারের এই দায়িত্বহীনতা ও দুর্নীতির জন্য অবশ্যই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

স্থায়ী কমিটির সভায় দেশের প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের মজুরী নির্ধারণ, কর্মে নিশ্চয়তা প্রদান এবং লকডাউনে কর্মচ্যুত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ, খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত প্রদান, বিএনপির প্রস্তাবিত প্রণোদনা অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের কর্মপক্ষে তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা হারে এককালীন অনুদান প্রদান, শ্রমিক নির্যাতন ও বৈষ্যম বন্ধ এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পুলিশের গুলিতে নিহতের পরিবার ও আহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও গেফতারকৃত শ্রমিকদের মুক্তি দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান মহাসচিব। একই সঙ্গে ফরিদপুরের সালথায় পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষের ঘটনায় নিরহ গ্রামবাসী হোসেন মাতুব্বর ডিবি হেফাজতের মৃত্যুবরণের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের আইনের আওতা এনে বিচার দাবিও জানান তিনি।

স¤প্রতি ভারত একতরফাভাবে অক্সিজেন রফতানি বন্ধ ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করে স্থায়ী কমিটির সভায় বিকল্প উৎস্য থেকে অক্সিজেনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানীর ব্যবস্থা গ্রহন এবং দেশে অক্সিজেন উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানানো হয় বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ