পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অপরাধী যে-ই হোক, আইনের মুখোমুখি হতে হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজধানীর গুলশানের অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার নিয়ে রহস্য বেড়েই চলছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা হলেও এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা সেই প্রশ্ন উঠেছে। পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, মুনিয়াকে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য সিলিং ফ্যানের সঙ্গে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হতে পারে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তারা বিষয়টি অনেক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ছাড়াও পারিপার্শ্বিক ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করছেন। বাসা থেকে ফুটপ্রিন্টসহ সব ধরনের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। মুনিয়া আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে, বিষয়টি ক্লিয়ার হতে কিছু সময় লাগবে।
গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডির বাসভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, গুলশানে কলেজছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় করা আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তের পর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, যেই অপরাধী হোক না কেন তাকে আইন ও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এটা তদন্তাধীন। তদন্তের পর আমরা বলতে পারব।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, আমরা সবগুলো বিষয় সামনে রেখেই তদন্ত করছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে অনেক কিছুই ক্লিয়ার হবে। এছাড়া ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ, ভিসেরা পরীক্ষাসহ সবকিছুই করা হচ্ছে। আত্মহত্যা করে থাকলে মেয়েটি কেন আত্মহত্যা করলো তার কারণও জানার চেষ্টা চলছে। আসামিকে ধরতে এ পর্যন্ত কোনো অভিযান চালানো হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাকে গ্রেফতারে এখনও কোনো অভিযান চালানো হয়নি। সব ধরনের তথ্য-প্রমাণ পেলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি স্পর্শকাতর। এখানে হুটহাট করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। তথ্য-প্রমাণ হাতে নিয়ে সামনের দিকে এগোতে হবে। তা না হলে আসামি মামলা থেকে স্কিপ করার সুযোগ পেয়ে যাবে। এজন্য ফরেনসিক পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মুনিয়ার মোবাইল ফোনসহ অনেক কিছুই ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে। মুনিয়ার ডায়েরির লেখাগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
পুলিশের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, মুনিয়ার মৃত্যু রহস্যের সঙ্গে আরও কিছু বিষয়ের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে। চট্টগ্রামের এক হুইপের ছেলের সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রæপের এমডি সায়েম সোবহানের মেয়ে ঘটিত বিষয় নিয়ে দ্ব›দ্ব ছিল। এছাড়া ৫০ লাখ টাকা পাওয়া নিয়ে সায়েম সোবহান ও মুনিয়ার একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এসব বিষয়েও আমরা অনুসন্ধান করছি। তদন্ত শেষে বিষয়গুলো পরিষ্কার হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া বাদী হয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহানের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ডায়েরিতে সুখ-দুঃখের স্মৃতি:
মুনিয়ার ঘর থেকে বড় ফ্রেমে টাঙানো আনভীর ও তার দুটি কাপল (দম্পতি) ছবি জব্দ করা হয়েছে। সঙ্গে জব্দ করা হয়েছে হাতে লেখা ৬টি ডায়েরি। ডায়েরিগুলোতে গত ২ বছরের বেশ কয়েকটি ঘটনা তারিখসহ লেখা আছে। ডায়েরির বেশ কয়েকটি অংশে আনভীরের নাম ও তার সঙ্গে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া এবং প্রেমের দিনগুলোর বিষয়ে লিখেছেন মুনিয়া। ডায়েরির লেখাগুলোর শেষের দিকে মুনিয়া লিখেছেন ‘জীবনের চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছি’। মুনিয়ার বোন নুসরাত বলেছেন, এটাই তার ‘সুইসাইড নোট’।
এ বিষয়ে পুলিশ জানায়, মুনিয়ার ফোনটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে। মোবাইল থেকে কোনো তথ্য মুছে ফেলা হয়েছে কি না সেগুলো যাচাই করা হচ্ছে। পাশাপাশি ওই ভবনের প্রবেশমুখ ও করিডোরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়েও যাচাই করছে পুলিশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।