করোনাভাইরাস সংক্রমণ আরো বৃদ্ধি পাওয়ায় এবারও ঈদগাহে বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত আদায় করা যাবে না। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে পড়তে হবে ঈদের নামাজ। একইসঙ্গে মসজিদে জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো পরিহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ধর্মমন্ত্রণালয়।

গতকাল সোমবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত আদায় সংক্রান্ত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে। হিজরী শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া সাপেক্ষে আগামী ১৩ বা ১৪ মে দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ঈদের দিন মুসলমানরা মসজিদ কিংবা ঈদগাহে দুই রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ আদায় করে থাকেন। করোনার সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আট দিনের কঠোর লকডাউন (বিধিনিষেধ) শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। সেই মেয়াদ শেষ হয় গত বুধবার মধ্যরাতে। পরে লকডাউনের মেয়াদ আগামী ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আয়োজনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়বে। আগামী ৫ মে পর্যন্ত এই ‘বিধিনিষেধ’ বহাল থাকবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইসলামী শরিয়তে ঈদগাহ বা খোলা জায়গায় পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামাত আদায়ের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বসহ আমাদের দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিজনিত কারণে মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে ঈদের নামাজের জামাত নিকটস্থ মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনে একই মসজিদে একাধিক জামাত আদায় করা যাবে।

ঈদের নামাজের জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসতে পারবেন;
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদে ওযুর স্থানে সাবান-হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে।

প্রত্যেকে নিজ নিজ বাসা থেকে ওযু করে মসজিদে যেতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। ঈদের নামাজের জামাতে আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে যেতে হবে। ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যে কোন অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ঈদের নামাজের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে। করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিন এর দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামগণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে। মসজিদের খতিব ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন। উল্লেখিত নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।