Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপকৃত হবে সোয়া কোটি পরিবার

করোনায় ৫৭৪ কোটি টাকা সহায়তা সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৪ এএম

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে লকডাউনের কারণে কর্মহীন মানুষের মানবিক সহায়তায় সরকার এ পর্যন্ত ৫৭৪ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এতে প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ পরিবার উপকৃত হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। কেউ খাদ্য কষ্টে থাকলে ৩৩৩ ফোন করলে তাকে তালিকাভুক্ত করে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। কাউন্সিলদের বলেছি যে যে যেখানে থাকুন না কেন, খাদ্য কষ্টে থাকলে তাকে এনআইডির ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা দিতে হবে বলেন তিনি।

গতকাল রোববার সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বিক ত্রাণ বরাদ্দ ও বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার ফলে বাংলাদেশে চলাচল সীমিতকরণের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সারা দেশের কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জন্য সরকার গত বছর বিপুল পরিমাণ খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছিল। এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে কর্মহীন মানুষের মানবিক সহায়তায় এ পর্যন্ত ৫৭৪ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক স¤প্রতি দেশের সকল সিটি করপোরেশনের অনুক‚লে শিশুখাদ্য ক্রয়ের জন্য আরও টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত এসব অর্থের মাধ্যমে শিশুখাদ্য ক্রয় করে তা বিতরণ করা হবে। এর ফলে প্রায় এক কোটি ২৪ লাখ পরিবার উপকৃত হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জিআর ক্যাশ দিয়েছি ১২১ কোটি টাকা, ভিজিএফ দিয়েছি ৪৭২ কোটি টাকা। বড় সিটি করপোরেশনগুলোকে ৫৭ লাখ টাকা করে, ছোটগুলোকে ৩২ লাখ টাকা করে দিয়েছি। পৌরসভায় ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোতেও টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়া করোনাসহ যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে সব সময় অর্থ বরাদ্দ-মজুদ রাখা হয়। এ ক্যাটাগরি জেলার জন্য ৩ লাখ টাকা, বি ক্যাটাগরির জন্য আড়াই লাখ টাকা এবং ‘সি’ ক্যাটাগরি জেলার জন্য ২ লাখ টাকা করে সব সময় মজুদ রাখা হয়, যা জেলা প্রশাসকরা যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যয় করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী অতি স¤প্রতি কর্মহীন মানুষকে আর্থিক সহায়তায় ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।

এনামুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রায় ৩৫ লাখ পরিবারকে ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যামে সরাসরি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়া হিটশকে ক্ষতিগ্রস্ত ১ লাখ কৃষক পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণের জন্য সাড়ে ৭ কোটি টাকার প্যাকেটজাত খাবার ক্রয় করা হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটে চাল, ডাল তেল, লবণ, চিনি, নুডুলস, চিড়াসহ বিভিন্ন আইটেম আছে। ১০ কেজি চালসহ প্রতিটি প্যাকেটের মধ্যে প্রায় ১৭ কেজি ওজনের খাদ্যসামগ্রী থাকবে যা দিয়ে একটি পরিবারের প্রায় একসপ্তাহ চলবে বলে আশা করা যায়। আরও ১০ কোটি টাকার খাদ্যসামগ্রী কেনা হবে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণের জন্য খুব শিগগিরই ৪০ কোটি টাকার ঢেউটিন কেনা হবে। টিআর/কাবিখা খাতে তৃতীয় কিস্তিতে ৯৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান থাকায় কর্মহীন মানুষ এ কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবে। কালবৈশাখী, ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যাসহ বিভিন্ন প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে দেশের ৬৪টি জেলার জন্য ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন এলাকায় যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সেটা পর্যাপ্ত কি না এমন প্রশ্নের প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই পর্যাপ্ত নয়। কারণ যে পরিমাণ মানুষ কর্মহীন রয়েছে, তাকে সেখানে এই ৫০-৫৭ লাখ টাকা কোনো অংকই না। মেয়ররা বলেছেন ৫০ লাখ না দিয়ে যদি ৫ কোটি দেন তাও এখানে কুলাবে না। আমরা বলেছি প্রধানমন্ত্রী আমাদের নগরের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে বলেছেন, নগরে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেশি। আমরা প্রস্তুত আছি, এটা বিতরণ করুন। আবার চাহিদা পাঠান, আমরা দেব।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, দুইহাত ভরে দেবে, যাতে মানুষ জানে যে শেখ হাসিনার সরকার মানুষের পাশে আছে। এবার সপ্তাহব্যাপী পরিকল্পনা করে আমরা দিচ্ছি, সেজন্য পরিমাণটা একটু শুনতে কম শোনা যাচ্ছে। লকডাউন কন্টিনিউ করলে আমরা দিয়ে যাব। এনামুর রহমান বলেন, আমরা ৩৩৩ নম্বরটি প্রচার করছি। কেউ খাদ্য কষ্টে থাকলে ফোন করলে তাকে তালিকাভুক্ত করে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। কাউন্সিলদের বলেছি যে যে যেখানে থাকুন না কেন, খাদ্য কষ্টে থাকলে তাকে এনআইডির ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা দিতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমদানি, লোকাল ক্রয় এবং বোরো উৎপাদন মিলিয়ে আমরা মজুদের ক্ষেত্রে স্বস্তিকর অবস্থায় আছি। আমাদের খাদ্য সংকট হবে না। আমাদের সরকারের সামর্থ্য আছে, যতদিন প্রয়োজন আমরা এই মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ