Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে শ্রমিক ও স্থানীয়রা

বাঁশখালীতে শ্রমিক আন্দোলন : নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ১২:১০ এএম

দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারায় এস আলম গ্রæপের নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং আশপাশের গ্রামে এখনও আতঙ্ক কাটেনি। গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এলাকার লোকজন। আতঙ্কিত শ্রমিকেরাও এখনও পুরোদমে কাজে যোগ দেননি। গ্রেফতারের ভয়ে আহত শ্রমিকদের অনেকে পালিয়েছেন হাসপাতাল ছেড়ে। বিনা চিকিৎসায় তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। হাসপাতালে যারা আছেন তারা চিকিৎসার ব্যয় টানতে হিমশিম খাচ্ছেন। অসহায় পরিবারগুলো এখন দিশেহারা।

এদিকে পুলিশের গুলিতে আহত আরো দুই জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৭ এপ্রিল আন্দোলরত শ্রমিকদের উপর পুলিশের গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত জনে। নিহত সবাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিক। বুধবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিমুল আহমেদ (২২) নামে এক শ্রমিক মারা যান। তার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে। তিনি ওই এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকেরা।
তার আগে মঙ্গলার ভোর রাতে নগরীর পাঁচলাইশের বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে মারা যান গুলিবিদ্ধ রাজেউল ইসলাম (২৫)। তিনি দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে। হাসপাতালের মহাব্যবস্থাপক তালুকদার জিয়াউর রহমান জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত রাজেউল ইসলামের পরিবারের অভিযোগ টাকার অভাবে তার সঠিক চিকিৎসা করা যায়নি। কারখানা কর্তৃপক্ষ তার কোন খোঁজ খবরও নেয়নি।
গত ১৭ এপ্রিল গন্ডামারা ইউনিয়নের পূর্ব বড়ঘোনা এলাকায় নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর পুলিশ গুলি করে। গুলিতে ওইদিনই পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। পুলিশ ও শ্রমিকসহ আহত হন আরও কমপক্ষে ৫০ জন।

আন্দোলনরতদের উপর পুলিশ ওই দিন ৩২২ রাউন্ড গুলি বর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। আহত শ্রমিকদের সবাই গুলিবিদ্ধ। মাসের ৫ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, পবিত্র রমজান মাসে কর্মঘণ্টা ১০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টা করা, শুক্রবার ৮ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে চার ঘণ্টা করা, ইফতার ও মাগরিবের নামাজের বিরতি দেয়াসহ কয়েক দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলো শ্রমিকেরা।

অপরদিকে ঘটনার পাঁচদিন পরেও এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরেনি। বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেশিরভাগ শ্রমিক এখনও কাজে ফিরেননি। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ও এস আলম কর্তৃপক্ষ থানায় দুটি মামলা করে। এই দুটি মামলায় শ্রমিক, গ্রামবাসীসহ সাড়ে তিন হাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশী অভিযানের মুখে পালিয়ে বেড়াচ্ছে স্থানীয়রা। তবে থানার ওসি এসএম শফিউল কবির বলেন, যারা আসামি পুলিশ তাদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করছে। গ্রামবাসীকে হয়রানি করা হচ্ছে না। এই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের দুটি তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।

 



 

Show all comments
  • Jack Ali ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ১২:১৯ পিএম says : 0
    আমরা কেন হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর কাছ থেকে দেশকে স্বাধীন করেছিলাম?? তারা নয় মাস যাবত আমাদেরকে হত্যা-গুম করেছিলো. আর এখন আমাদের দেশের সরকার আমাদেরকে নির্বিচারে গুম, গুলি করে মারছে. সরকার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর থেকেও শত শত গুন নিষ্ঠুর. স্বাধীনতার পর যদি আমাদের দেশ কোরআন দিয়ে চলত তাহলে কখনো মানুষ দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামতো না কেননা ইসলামে মানুষের সাধারণ চাহিদা পূরণ করে যা বেঁচে থাকার জন্য খুবই প্রয়োজন অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসা. আমাদের দেশের সরকার প্রধান আমাদের ট্যাক্সের টাকায় রাজা বাদশার মতো জীবন যাপন করে আর আমরা খুব কষ্ট করে জীবন যাপন করছি”
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শ্রমিক

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ