রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
করোনাভাইরাসের সংক্রমন উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় লকডাউন দিয়ে চলাচলে কড়াকড়ি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে জীবন-জীবিকা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সবাই। অন্যদিকে ভোগাচ্ছে বাজার দরও। আগের থেকে বাজারের সব জিনিসপত্রের দাম বাড়তি। এর মধ্যে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সবজির দামও। বাজারে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়ছেন স্বল্প আয়ের মানুষসহ খেটে খাওয়া শ্রমজীবিরা।
সাধারণ ভোক্তারা বলছেন, বাজারে চাল, ডাল, তেল, চিনি, মাছ, গোশতসহ যেভাবে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে সেখানে একমাত্র ভরসা ছিল সবজি ও শাকপাতা। এদিকে অভাবের সংসারে টিকে থাকে তরকারি ও ভর্তা ভাত খেয়ে। এতদিন অন্য পণ্যের দাম বাড়লেও দীর্ঘসময় ধরে সবজি বাজারে স্বস্তিতে ছিলেন ভোক্তারা। লকডাউন পরিস্থিতিতে এখন সেই সবজির দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে।
নওয়াপাড়া বাজারের দিনমজুর কাশেম হাওলাদার বলেন, বয়স বেড়েছে, বেশি বোঝা টানতে পারিনা। ভোরবেলা অল্প কিছু বস্তা টেনে সামান্য কিছু আয় হয়। তা দিয়ে মাছ-গোশত কেনার সাধ্য নেই। তরিতরকারি কিনেই সংসার চলে। দাম কম থাকায় মাঝে একটু নিশ্চিন্ত ছিলাম, এখন সবজি-শাকপাতার দামও হু হু করে বাড়ছে। দুশ্চিন্তাও বাড়ছে। এখন তো ভর্তা ভাত খাওয়াটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সবজির দাম বাড়ায় বিপদে রয়েছেন আরেক দিনমজুর সাহেব আলী। তিনি বলেন, আগে ফার্নিচারের দোকানে জিনিসপত্র টানার কাজ করতাম। এখন বেচাকেনা না থাকায় সে কাজও বন্ধ। এখন সকালে বাজারে টুকিটাকি দিন মজুরের কাজ করে তরিতরকারি কিনে বাড়ি ফিরি। কিন্তু সেটার দামও দিন দিন বাড়ছে। সবজিটাও যদি কিনে না খেতে পারি তাহলে বেঁচে থাকব কিভাবে? নওয়াপাড়া বাজার, পায়রা বাজার, সুন্দলী বাজার, প্রেমবাগ বাজার, নাউলী বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বেগুন, পটল, বরবটি, ঢেঁড়স, শিম অন্যতম। গত সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া পটলের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। ঢেঁড়সের কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বরবটি কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বেগুন কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। শিমের কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। একই দামে ধুন্দল ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে। পাকা টমেটোর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা। তবে চলতি সপ্তাহে শসার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। তাছাড়া লাউয়ের দাম বেড়েছে অনেক। পিস প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। শান্তি নেই শাকপাতার দামেও। শাকের আটি তে সর্বোচ্চ ৫ টাকা পর্যন্ত দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। এছাড়া লালশাক, ঘিকাঞ্চন শাক, কলমি শাক, ও পালংশাকের আঁটিও এখন ১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এবাবে চলতে থাকলে এক সময় সাধারন দিন মজুরের ক্রয় ক্ষমতা আর হাতের নাগালে থাকবে না।
খেটে খাওয়া মানুষের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে তাহলে সবজির বাজারসহ অন্যান্য পণ্য ক্রয় ক্ষমতার নাগালে থাকবে।
এই বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, করোনার দোহায় দেখিয়ে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ী আছে যারা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মূল্য বৃদ্ধি করে। মাঝেমধ্যে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে অভিযোগ পেলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগও আমাদের কাছে আসছে। আমরা এদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রায়ই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।