Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মীয় নেতাদের গ্রেফতার ধর্মপ্রাণ মানুষের বুকে আঘাত: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২১, ৫:২১ পিএম

মিথ্যা মামলায় দেশের ধর্মীয় নেতা-আলেম-ওলামাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ধর্মীয় নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে আজকে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের বুকে আঘাত করা হচ্ছে এবং তাদের আবেগ, সেন্টিমেন্টে সেখানে আঘাত করা হচ্ছে। ধর্মীয় নেতাদেরকে এভাবে অপমান করা, তাদেরকে এভাবে হয়রানি করা এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ কোনোভাবে মেনে নেবে না। তিনি এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন। সোমবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত কয়েকদিন ধরে লকডাউনে সুযোগ নিয়ে ক্র্যাকডাউন করা হচ্ছে। ক্র্যাকডাউনে একদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অন্যদিকে দেশের ধর্মীয় নেতা, আলেম-ওলামাদেরকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে যারা আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় মানুষ, শ্রদ্ধেয় আলেম, এদেশে মানুষের কাছে যারা অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র তাদেরকেও গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্যক মিথ্যা মামলাও দেয়া হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে এই সমস্ত মামলা-মোকাদ্দমা তুলে ফেলা, ধর্মীয় নেতা, আলেম-ওলামা এবং বিএনপি নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন।

হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে বিএনপির অবস্থান পরিস্কার করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হেফাজতে ইসলামের ব্যাপারে আমরা বরাবরই বলেছি যে, তাদের সাথে আমাদের কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। এটা কোনো রাজনৈতিক দলও নয়। সম্পূর্ণভাবে একটি ধর্মীয় সংগঠন।

গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র আগমনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ২৬ মার্চকে কেন্দ্র করে যে ঘটনাগুলো সংগঠিত হয়েছে এটা তো সরকারের তৈরি করা। আমি এর আগেও বলেছি। সরকার খুব পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনাগুলো যাতে ঘটে তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছেন। ওইদিন কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠনের ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধীতা করে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছিলো। বায়তুল মোকাররমে সেই বিক্ষোভ কর্মসূচি হচ্ছিল শান্তিপূর্ণ। এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে ও হামলা চালায়। সেই কারণে চট্টগ্রামের হাটাজারিতে ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়াতে ঘটনাগুলো সংগঠিত হলো। সেই কথাগুলো কিন্তু তারা (সরকার) কখনোই বলছেনা। তারা বার বার করে দোষ চাপাচ্ছে যে, এই সমস্ত ধর্মীয় সংগঠনগুলো এবং বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপি এইসব ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওইসব ঘটনাগুলোর সাথে বিএনপি কখনো জড়িত ছিলো না। আমরা প্রতিবাদ করেছি বিক্ষোভ করেছি-অবশ্যই। সেটা যখন মানুষকে বিনা কারণে হত্যা করা হলো। স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর ৫০ বছর তাকে কুলষিত করা হয়েছে জনগণের মানুষের রক্ত দিয়ে- সেটারই আমরা বিরোধিতা করেছি, আমরা প্রতিবাদ করেছি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আওয়ামী লীগের সাথে গণতন্ত্রের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তারা এখন সম্পূর্ণ একটা গণবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। রাজনৈতিকভাবে তারা দেউলিয়া হয়ে গেছে বলেই তাদের এখন রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ওপর ভর করে রাজনীতি করতে হচ্ছে। তাদেরকে রাজনীতি করতে হচ্ছে বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশনকে দলীয়করণ করে। সেই ক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদের সাহেবের সেই অধিকারই নেই যে, তারা এখনো বলবেন, আমরা গণতান্ত্রিক দল।

গত ১৭ এপ্রিল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তসমূহ ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব তুলে ধরেন। এই বৈঠকে দেশের করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি, লকডাউনে নি¤œ আয়, দিন আনে দিন খায় মানুষজন, শ্রমিক, প্রান্তিক কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সংকট, টিকার অনিশ্চিয়তা, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্রে কর্মরত শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

মহাসচিব ছাড়া বৈঠকে খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Mohammad Shahidullah ১৯ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৪২ পিএম says : 0
    BNP's last resort of selling religion is about to end. What will they do then? Actually, BNP and Jamat has no difference. Both are politically bankrupts, highly corrupted trader of religion. They use religious sentiments of people for their gains.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ