পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে গত ৫ এপিল লকডাউন শুরু হয়। তবে ১৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশে চলছে ৮ দিনের সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মানুষকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন ও অফিসও। তবে নির্দেশনা উপেক্ষা করে কারণে-অকারণে মানুষ শহরের রাস্তায় বের হচ্ছেন। অনেকে আবার পুলিশি ঝামেলা এড়াতে কেনাকাটা না করলেও বাজারের ব্যাগ সঙ্গে রাখছেন। মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব ছাড়ায় ভিড় করে রাস্তায় আড্ডা ও ঘোরাফেরা করছে মানুষ।
গতকাল শনিবার যাত্রাবাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ থাকলেও কাচাবাজারগুলো লোকেলোকারণ্য। অলিগলিতে প্রচুর মানুষ চলাফেরা করছেন। অধিকাংশের মুখে মাস্ক নেই। গুলিস্তান এলাকায় দেখা গেল মুখে মাস্ক থাকলেও অনেকেই থুতনিতে নামিয়ে রেখেছেন।
মিরপুর রোড ও ধানমন্ডি, কলাবাগানের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ। খুব বেশি মানুষের জটলা দেখা না গেলেও পাড়া-মহল্লায় অবাধে চলছে যানবাহন। পাইকারি বাজার, কাঁচাবাজারসহ পাড়া-মহল্লায় সব ধরনের দোকান-পাটও খোলা। অবাধে চলাচল করছেন মানুষ। দুপুর গড়ালেই অলি-গলিগুলো হয়ে উঠছে ভরা হাটবাজার। শুধু মানুষ আর মানুষ।
এ্যালিফ্যান্ট রোড, হাতিরপুল, বাংলা মটর, ফার্ম গেইট, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, পাইকপাড়া, ৬০ ফিট এলাকার বিভিন্ন গলি ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও স্বাস্থবিধির বালাই নেই। যে যার যার মতো অবাধে চলাফেরা করছেন। মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্ব নেই। গলিগুলোতে অবাধে চলাচল করছে মানুষজন। জটলা পাকিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন পাড়ার তরুণ, যুবক ও বয়স্করাও।
রিয়াদ, বাদল, মিজান ও সবুজ ৬০ ফিট রাস্তায় দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তারা জানান, সারাদিন বাসায় বসে থাকতে ভালো লাগে না বলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ক্ষণিকের জন্য বাইরে বের হয়েছেন। এখন কলেজও বন্ধ, পড়াশোনার চাপ নেই। বিকেল পর্যন্ত সবাই একসঙ্গে ঘুরবেন। সন্ধ্যায় ইফতারের আগে বাসায় ফিরবেন। মুখে মাস্ক না পরে রাস্তায় আনারস বিক্রি করছিলেন বাচ্চু। তিনি বলেন, ‘মাস্ক পইরা কি হইব? করোনা হওয়ার থাকলে এমনিতেই হইব। আল্লাহ যেদিন নিবে, হেইদিন চইলা যাইতে হইব। এসব সামজিক দ‚রত্ব দিয়া কিছু হইব না।’ যাত্রাবাড়ি, শনিরআখড়ার অলিগলিতে সন্ধ্যা হলেই আড্ডা জমে উঠে। উঠতি বয়সের তরুণরা মুখে মাস্ক ছাড়াই ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় গল্পগুজব করেন।
মো. জাহিদুল ইসলাম মাস্ক পরেই বের হয়েছেন। তবে তার সংশয় তিনি একা স্বাস্থবিধি মেনে কি করবেন? তিনি বলেন, ‘আশপাশে কেউই তো মানছে না। সবাই মিলে সচেতন না হলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আসবে না। কাজে বের হয়েছি। কিন্তু রাস্তায় দেখি মানুষ আর মানুষ। একটা জিনিস কিনতে গেলে আরও তিনজন এসে গায়ে পড়ে। এ অবস্থায় কিভাবে স্বাস্থবিধি মেনে চলব?’
থুতনির নিচে মাস্ক পরা ফলবিক্রেতা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘মানুষকে ভিড় করতে নিষেধ করলেও শুনে না। বিশেষ করে বিকেল বেলায় প্রচন্ড ভিড় বেড়ে যায়। মানুষের মাথা মানুষ খায়— এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। কারণ ইফতারের আগ মুহূর্তে সবাই একযোগে কেনাকাটা করতে বের হন। সবাই নিজের জায়গা থেকে সচেতন না হলে কেউ একা করোনা ঠেকাতে পারবে না। যতই সরকার লকডাউন দিক না কেন।’
রাজধানীর অলি-গলিতে মানুষের জটলা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম জানান, সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কাঁচাবাজারের জিনিসপত্র বিক্রির নির্দেশনা আছে। এ সময় কিছুটা মানুষের উপস্থিতি দেখা যেতে পারে। তবুও যাতে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত না হয়, সে ব্যাপারে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। সবসময় মাইকিংসহ টহল দিচ্ছে। যাত্রাবাড়িতে দায়িত্বপালন রত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আইন শৃংখলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু মানুষকে সচেতন হওয়া উচিত। করোন কাউকে দেখে কয়ে আক্রমন করে না। অতএব সবার উচিত বিবেকের তাড়নায় হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং লকডাউনের সময় ঘরে থাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।