Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সীমান্তে চোরাচালান -পূর্বাঞ্চল দিয়ে আসছে ভারতীয় মোটর সাইকেল ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী মাদক মশলা ও শাড়ি

প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব রিপোর্ট : দেশের পূর্বাঞ্চল সীমান্ত হয়ে চোরাই পথে আসছে ভারতীয় বিভিন্ন কোম্পানীর মোটর সাইকেল, গাড়ির যন্ত্রাংশ, ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক। বৃহত্তর সিলেটের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেটের কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, তামাবিল, গোয়াইনঘাট, হবিগঞ্জ, আখাউড়া, কুমিল্লা ফেনী সীমান্তে দিনে রাতে আসছে ভারতীয় পণ্য। ফেনীর ৩৮ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে চোরাকারবারীরা সক্রিয়। প্রতিদিন এ সীমান্ত পথ দিয়ে ভারতীয় শাড়ি ও থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন কাপড়ের চালান আসছে। এসব চোরাকারবারে নেতৃত্বে দিচ্ছে ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায়ের সরকারদলীয় নেতারা। পুলিশ, বর্ডার গার্ড ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তাদের তালিকা থাকলেও এ চক্রকে ধরা হচ্ছে না। চৌদ্দগ্রামে ৪৩ কিমি সীমান্ত রাতে চোরকারবারিদের দখলে থাকে।
সিলেটের সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় শাড়ি থ্রি-পিস. মশলাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক চোরাচালান বৃদ্ধি পেয়েছে। চোরাচালান বৃদ্ধির কারণে ভারতীয় পণ্য উদ্ধার এবং এ সংক্রান্ত মামলাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সিলেট বিভাগের ৪ জেলার বিভিন্ন আদালতে বর্তমানে ১ হাজার ৭৫৩টি চোরাচালান মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারিরা ভারত থেকে মদ, ফেনসিডিল, বিয়ার, হুইস্কি, গাড়ির পার্টস, কাপড়, বিড়ি, মোটরসাইকেল, তেজপাতাসহ নানা পণ্য নিয়ে আসছে। বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে আসছে। এর মধ্যে মাদকদ্রব্য বেশি আসছে। অন্যদিকে মেলামাইন, মশারি, ডিজেল, পেট্রোল, খাদ্যজাত সামগ্রীসহ নানা পণ্য কৌশলে ভারতে পাচার করছে। চোরাচালানীরা মাঝে মধ্যে হরিণ ও বাঘের চামড়া পাচার করে। মাদকদ্রব্য প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কখনো কমিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। বরং বেড়েই চলেছে। ফলে দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।
সিলেট বিভাগে চলতি বছরের গত ৮ মাসে ১ হাজার ৯৮৯টি চোরাচালান মামলা রেকর্ড হয়েছে। আঞ্চলিক চোরাচালান মামলা মনিটরিং সেল জানায়, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সিলেটের বিভিন্ন আদালতে ১ হাজার ৭৪৬ টি চোরাচালান মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে রয়েছে, বর্ডার গার্ড’র ৯শ’ ৪৬টি, পুলিশের ৭৫৩টি, কাস্টমস’র ৩টি, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৩১৮টি, মহানগর পুলিশের ১৫টি ও র‌্যাবের ২০০টি মামলা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ আদালতে ২৮৬টি চোরাচালান মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে বর্ডার গার্ডের ৭৩টি, পুলিশের ১৩৩টি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৩৪টি, র‌্যাবের ৩০টি ও অন্যান্য সংস্থার দায়েরকৃত ১৬টি চোরাচালান মামলা। হবিগঞ্জে ১৩৭টি চোরাচালান মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে বর্ডার গার্ডর ৩০টি, পুলিশের ১০০টি ও র‌্যাবের ৭টি। মৌলভীবাজারে ২২১টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে বর্ডার গার্ডের ৭৪টি, পুলিশের ১৪৩টি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৪টি মামলা। এ হিসেবে সর্বোচ্চ চোরাচালানীর ঘটনা ঘটছে সিলেট জেলার সীমান্ত এলাকার। সর্বনিম্ন চোরাচালানীর ঘটনা ঘটছে হবিগঞ্জ জেলায়।
বর্ডার গার্ড জানায়, সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করতে নানা সমস্যায় পড়তে হয়।কারণ প্রয়োজনীয় রাস্তা-ঘাট ও যোগাযোগ সমস্যা। সবস্থানে পানির জন্যে অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। সীমান্তে মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জনসাধারণেরও সহযোগিতা প্রয়োজন।
কুমিল্লায় বিজিবি’র জিরো টলারেন্স দমাতে পারছে না সীমান্ত চোরাচালান
আমাদের কুমিল্লা প্রতিনিধি সাদিক মামুন জানান, কুমিল্লার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে মাদক, শাড়ী, থ্রিপিস, অস্ত্র চোরাচালান থেমে নেই। বিজিবির ‘জিরো টলারেন্স’ দমাতে পারছে না সীমান্তের চোরাচালান। কুমিল্লায় দু’শতাধিক চোরাকারবারি সীমান্ত এলাকায় ২০টিরও বেশি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছে চোরাচালান ব্যবসা। এসব চোরাকারবারিদের নামের তালিকা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বছর বছর সংযোজন, বিয়োজন করলেও আটকের খাতায় সিকিভাগের নাম খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ, এরা গডফাদার। তাই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকেই চোরাচালান ব্যবসার দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। বিজিবি ও পুলিশের তালিকায় চোরাচালান ব্যবসায়ীদের মধ্যে যাদের নাম রয়েছে তাদের বেশিরভাগই হচ্ছে কুমিল্লা সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, সদর দক্ষিণ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অনেকেই চোরাকারবারিদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন এমন তথ্য রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। কিন্তু তাদের ধারে কাছেও যেতে পারছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
কুমিল্লার পাঁচ উপজেলার ৭৪ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় বিজিবির বর্ডার পোস্ট বা বিওপি রয়েছে ১৫টি। এসব বর্ডার পোস্টে বিজিবি সতর্কাবস্থানে থাকলেও তাদের ‘জিরো টলারেন্স’ ডিঙ্গিয়ে চোরাচালান চলছেই। কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল, আশাবাড়ি, নয়নপুর, বুড়িচং উপজেলার চড়ানল, বারেশ্বর, সংকুচাইল, রাজাপুর, আদর্শ সদর উপজেলার বিবির বাজার, বৌয়ারা, গোলাবাড়ি, শাহাপুর, শিবের বাজার, সদর দক্ষিণ উপজেলার একবালিয়া, তালপট্টি, সুবর্ণপুর, চৌয়ারা, যশপুর, বৌয়ারা, শ্রীপুর, কনেশতলা, দড়িবটগ্রাম, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গোমারবাড়ি, আমানগন্ডা, ছফুয়া, জগন্নাথদিঘি, গোলপাশা, বসন্তপুর, সাতবাড়িয়া, কাইচ্ছুটি ও পদুয়া সীমান্ত পথে ভারত থেকে মাদক অস্ত্রসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী চোরাচালানের মাধ্যমে কুমিল্লায় আসে। তারমধ্যে শাড়ি, থানকাপড়, থ্রীপিস, প্যান্ট, শার্ট, স্যুয়েটার, শাল, চাদর, মসলা, গুঁড়োদুধ, কসমেটিকস, মটরসাইকেল পার্টস, গাড়ীর যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, গরু, বাঁশসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য কুমিল্লার বাজারে অহরহ চোরাচালান হচ্ছে। আবার ওইসব সীমান্ত পথে প্রতিনিয়ত আসছে ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা, মদ, বিয়ারসহ বিভিন্ন রকমের মাদক দ্রব্য। মুড়ি-মুড়কির মতো মাদক আসছে কুমিল্লায়। ঠেকানো যাচ্ছে না মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। মাদকের সহজলভ্যতার কারণে কুমিল্লায় হু হু করে বাড়ছে মাদকসেবির সংখ্যা। প্রতিদিন ২০/২৫ লাখ টাকার মাদক বেচাকেনা হয় এই কুমিল্লায়।
কুমিল্লার পাঁচ উপজেলার ওইসব সীমান্ত পথে চোরাচালান ব্যবসায় ২০টিরও বেশি সিন্ডিকেটে দু’শতাধিক চোরাকারবারি সক্রিয় রয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য চোরাকারবারিরা হলেন- কুমিল্লা সদরের শুভপুরের আলী, টিক্কাচরের আবদুস সাত্তার, বারপাড়ার আজাদ, নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের অশোক, ধর্মপুর-রেলওয়ের এলাকার রেজাউল, কোটেশ্বরের নুরুল ইসলাম ও ফারুক, শালঘরের ইদন, ছাওয়ালপুরের শফিক মেম্বার, ঝাকুনিপাড়ার জামাই রফিক, পশ্চিম মাঝিগাছার শচীন ও মধ্যম নন্দিরবাজারের রফিক। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার একবালিয়ার এনা, দরিবট গ্রামের মোস্তফা, নোয়াপাড়ার মাছুম মিয়া, পাঠানকোটের দেলু, আবুল বাশার ও কবির মিয়া, গোয়ালমথনের সাত্তার, সামবকসির জাফর, বৌয়ারার সেকান্দর, মালেক, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকার কসমেটিকস সেলিম। বুড়িচং উপজেলার রাজাপুরের ফয়েজ, কংশনগরের বাবুল, লতিফ ও খায়ের, শংকুচাইলের নেহারুল, সেলিম, শাহআলম, রবি ও মিজান, রাজাপুরের কবির, ছালাম ও মিরপুরের মমতাজ। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সদরের রফিক, গনি, বিল্লাল সরকার, শশীদলের শাহআলম, হুমায়ুন, নাইঘরের শানু মিয়া ও কৃষ্ণা খোকন। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বইদ্দেরখীলের আব্দুল বারেক, লক্ষীপুরের আলী আহম্মেদ, আরব আলী ও ইসমাইল মিয়া, সাতবাড়িয়ার রোমান, শফিক, চিওড়ার সিরাজ, আমানগন্ডার রূপ মিয়া, মতিটুলির ভাগিনা রিপন, বসন্তপুরের দেলোয়ার, নোয়াপাড়ার সুমন, মিয়াবাজারের লোকমান। ভারত সীমান্ত থেকে চোরাচালান পণ্য এখানে আসার পর তা নির্বিঘেœ চোরাকারবারিদের হাতে পৌঁছানোর জন্য সীমান্তে লাইনম্যানও নিয়োজিত থাকে। আবার এসব চোরাকারবারিদের হাত ধরে কুমিল্লার সীমান্ত পথে ভারতেও স্বর্ণসহ এখানকার অনেক পণ্য চোরাচালান হয়ে থাকে।
চৌদ্দগ্রাম থেকে আমাদের প্রতিনিধি মোঃ আকতারুজ্জামান জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ৪৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে ভারত সীমান্ত। এ সীমান্তের অন্তত ৩০টি রুট দিয়ে প্রতিদিন মাদকসহ বিভিন্ন ভারতীয় পণ্য অবৈধ পথে বাংলাদেশে আসছে। মাঝে মধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)সহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে কিছু মালামাল আটক করলেও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় মূলে হোতারা। আর আটককৃত মালামাল পাচার হওয়া মালামালের দশ শতাংশও নয় বলে সীমান্তবর্তী মানুষের ধারণা।
একটি সূত্র জানায়, আগে বিজিবির লাইনম্যান থাকলেও এখন আর লাইনম্যানের প্রয়োজন হয়না। কারণ, বিজিবির কিছু অসাধু অফিসার লাইনম্যানের দায়িত্ব পালন করে চোরাকারবারিদের থেকে মাসোহার নেয় বলে জানা গেছে। জানা গেছে, দেশের লাইফ লাইনখ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাড়কের ১শ’ ৫০ গজ থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে ভারত সীমান্ত। ফলে চোরাকারবারিরা খুব সহজেই মোটর সাইকেল, নছিমন, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট ও সিএনজি বেবি টেক্সি বিভিন্ন যানবাহনে ভারতীয় অবৈধ মালামাল বোঝাই করে পালিয়ে যেতে পারে। চৌদ্দগ্রাম সীমান্ত দিয়ে আসা ভারতীয় মালামালগুলো হলো; ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা, ব্যাকপাইবার হুইস্কি, রিকোডেস্ক, বিয়ার, শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট ও প্যান্টের থান কাপড়, মোটর সাইকেল, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, গরু মোটাতাজাকরণের ষ্টেরয়েড ট্যাবলেট, হলুদ, জিরা, এলাচি, দারুচিনি, গোলমরিচসহ যাবতীয় মসলা, মুভ, ইসগার্ড, লিভ ৫০২, রিভাইটেল, সেনেগ্রা, ভায়াগ্রা, এডিগ্রা, ডক্টরেট, পেয়ার এন্ড লাভলিসহ বিভিন্ন কসমেটিকস্। যেসব রুট দিয়ে মাদক আসে, সেগুলো হলো চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের, আলকরা ইউনিয়নের দত্তশার, দক্ষিণ কাইচ্ছুটি, সোনাইছা, গোলাইকরা, জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের সাতঘড়িয়া, দক্ষিণ বেতিয়ারা, সোনাপুর, উত্তর বেতিয়ারা, শাহাপুর, কেছকিমুড়া, চিওড়া ইউনিয়নের ডিমাতলী, সুজাতপুর, বাতিসা ইউনিয়নের দূর্গাপুর, নানকরা, কালিকাপুর, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চন্ডিপুর, বৈদ্দেরখীল, রামরায়গ্রাম, গোমারবাড়ি, রামচন্দ্রপুর, ঘোলপাশা ইউনিয়নের বীরচন্দ্রনগর, মতিয়াতলী, আমানগন্ডা, বাবুর্চি বাজার, কালিকাপুর ইউনিয়নের ছুপুয়া, বিজয়পুর, উজিরপুর ইউনিয়নের চকলক্ষীপুর, শিবের বাজার, চাঁন্দশ্রী।
এদিকে বিজিবি ১০ ব্যাটেলিয়ানের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের মেইলে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসানের নির্দেশনায় প্রতিদিনই কোন না কোন সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভারতীয় মালামাল আটক করা হচ্ছে। চোরাকারবারিদের সাথে কোন আপোস নেই বলে দাবি করে বিজিবি।
কুমিল্লা জেলার ৫টি উপজেলার সীমান্তের অর্ধশতাধিক পয়েন্ট দিয়ে অবাধে দেশে আসছে ভারতীয় শাড়ি, থ্রিপিস, থান কাপড় ও কসমেটিকস সামগ্রী। শুধু কুমিল্লা ১০ বিজিবির অভিযানে গত ১০ মাসে ৯৪ কোটি ২৭ লাখ ৯২ হাজার ৬৫ টাকার বিভিন্ন ভারতীয় পণ্য আটক করা হয়। জানা যায়, জেলার আদর্শ সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, সদর দক্ষিণ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ১২৫ কিমি. এলাকাজুড়ে ভারত সীমান্ত। এর মধ্যে ১১ কিমি. এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। অন্য এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও চোরাকারবারিরা বিকল্প রাস্তা তৈরি করেছে। এসব এলাকা দিয়ে প্রতিদিনই অবাধে আসছে ভারতীয় ঈদপণ্য।
আমাদের প্রতিনিধিরা জানান, ঈদ উপলক্ষে যেসব সীমান্ত পয়েন্টে চোরাচালান জমে উঠেছে সেসব স্থানে চোরাকারবারিদের মধ্যে ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। খোশ মেজাজে আছে আইন শৃংখলা ও সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণও। ঈদ উপলক্ষে প্রশাসনের বিভিন্ন সংস্থাকে অতিরিক্ত ‘মাসোহারা ও বখশীশ’ লেনদেনের মাধ্যমে ম্যানেজ করা হচ্ছে, ফলে অপেক্ষাকৃত নিরাপদেই চলছে অবৈধ সীমান্ত বাণিজ্য। আখাউড়া সরাইল, জাফলং-জকিগঞ্জ, ফেনীর পরশুরাম ও কুমিল্লা সদর, চৌদ্দগ্রামসহ কুমিল্লা জেলার অন্তত ২০টি পয়েন্ট এখন চোরাকারবারের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়ে উঠেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সীম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ