বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কলাপাড়াসহ উপকূলীয় এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ এখন পুরো হুমকীর মুখে, দক্ষিনাঞ্চলের মানুষজন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে জীবন ও সম্পদ রক্ষা কারী বৃক্ষরাজি সমুলে পুড়িয়ে ফেলায় ও উজাড়ে এ হুমকীর সৃষ্টি হয়েছে। ইটভাটা মালিক, করাত কল মালিক, ইমারত ভবন নির্মানকারী কাজের সাথে জড়িত প্রভাবশালীরা বন উজাড়ে সক্রিয় থাকায় বন আইন স্পর্শ করছে না তাদের । একটি সংঘবদ্ধ বনদস্যু চক্র গাছ পাচারের নেট ওয়ার্ক গড়ে তুলেছে সমগ্র উপকূল জুড়ে। যারা গঙ্গামতি, ফাতরা, নিশানবাড়িয়া, কাটাভাড়ানি সহ মহিপুর ও কলাপাড়া রেঞ্জের বনাঞ্চল থেকে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ কেটে অবাধে বিক্রী করে দিচ্ছে ইটভাটা ও করাতকল গুলোতে। এতে প্রতিনিয়ত পরিবেশ বিপন্ন হলেও বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার এ বিষয়ে কোন বক্তব্য নেই। তবে পটুয়াখালীর উপকূলীয় বন সংরক্ষক বললেন করাতকল গুলোতে আমাদের বনাঞ্চলের গাছ চেরাই করা হলে আপনারা আমাদের লিখিত ভাবে জানান। তখন আমরা এটি দেখবো।
স্থানীয় ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, নৌ-ঘাঁটি সহ সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলায় কলাপাড়ায় কদর বেড়েছে ইট ভাটার। সরকারী ও ব্যক্তি মালিকানাধীন উন্নয়ন কর্ম যজ্ঞে প্রায় অর্ধ-শতাধিক ইটভাটা ইটের সরবরাহ করেও চাহিদার যোগান দিতে পারছেনা। কয়লার পরিবর্তে ইটভাটা গুলোতে দেদারছে পুড়ছে গাছ। ইমারত নির্মান কাজের লেইনটিন, ছাদ ঢালাইয়ের সেন্টারিং, কলাম, ভিম তৈরীতে লোহার সরঞ্জামাদির পাশাপাশি ব্যবহার বেড়েছে বাঁশ ও কাঠের। এসব কাঠ সাইজ অনুযায়ী তৈরীতে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কেটে সংঘবদ্ধ বনদস্যু চক্র জড়ো করছে চিহ্নিত কয়েকটি করাতকলে। যা দিয়ে সেন্টারিংয়ের কাঠ তৈরী করে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে নির্মান সাইডে। এসব কিছুই হচ্ছে বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জ্ঞাত সারে। মাঝে মধ্যে বনকর্মকর্তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখালে তখন দেখতে পান তারা। অবস্থা এমন হয়ে দাড়িয়েছে যেন বেড়ায় ক্ষেত খাওয়ার মত অবস্থা।
সূত্রমতে আরও জানা যায়, কলাপাড়ার চাকামইয়া ইউনিয়নের আনিপাড়া এলাকা থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে বড় বড় সাইজের প্রায় অর্ধশত ছইলা, কেওড়া, বাইন ও গোমা প্রজাতির গাছ কেটে বিক্রীর জন্য স্বমিলে উঠায় একটি চক্র। এরা আড়পাঙ্গাসিয়া নদীর অপর পাড় আঙ্গারপাড়া, চাউলা পাড়া গ্রাম সংলগ্ন জঙ্গল থেকে বন কর্মীদের উপস্থিতিতেই গাছ কেটে মাহেন্দ্র গাড়ীতে তুলে রাতের আঁধারে পৌঁছে দিচ্ছে ইটভাটায়। একই ভাবে ফাতরা বনাঞ্চল থেকে প্রকাশ্যে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে করাত কল ও ইটভাটায়। অথচ গাছ কাটা চক্রের মদদ দাতারা বরাবরই থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। দু’একটি মামলা হলে হচ্ছে চুনোপুটির নামে। মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর, সুধিরপুর, নিজামপুর, নীলগঞ্জ ও চাকামইয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা বনদস্যু চক্রের সদস্যদের কর্মকান্ড জানলেও বন আইনের খড়গ কখনও স্পর্শ করছেনা তাদের।
কলাপাড়া বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আ: সালামের কাছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তার কোন বক্তব্য নেই, কিছুই জানেননা বলে এড়িয়ে যান তিনি, যেনো উনি ধোয়া-তুলসী পাতা, ভাজা মাছটি উল্টে খেতে জানেননা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বহু এলাবাসীর অভিমত পাছ কাটার সংগে বন কর্মকর্তা আ: সালাম জড়িত থাকতে পারে বলে তারা ধারনা করছেন।
পটুয়াখালী উপকূলীয় বন সংরক্ষক মো: আমিনুল ইসলাম বলেন, ইট পোড়ানো আইন অনুয়ায়ী ইট ভাটায় গাছ পোড়ানো হলে সেটি ডিসি সাহেব ও ইউএনওকে জানাতে হবে। এছাড়া করাতকল গুলোতে আমাদের বনাঞ্চলের গাছ চেরাই করা হলে আপনারা আমাদের লিখিত ভাবে জানান। তখন আমরা এটি দেখবো এবং তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।