পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ প্রতিরোধে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য সরকারী কার্যক্রম সুসমন্বয়ের লক্ষ্যে সরকারের সিনিয়র সচিব, সচিব এবং সচিব পদমর্যাদার ৬৪ সচিবকে দেশের ৬৪ জেলার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর আগে গত বছর করোনা মহামারির প্রথম পর্যায়েও মহামারি মোকাবিলায় ৬৪ জেলায় ৬৪ সচিবকে এমন দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তবে গত বছর কনোনার কমে যাওয়ায় সেই বছর আর সচিবরা তেমন কাজ করেনি। আবার সচিবদের জেলার দায়িত্ব দেয়ার কারণে অনেক জেলার সরকারি দলের মন্ত্রী ও এমপিরা বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি বলে জানা গেছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন সচিব। তাদের মধ্যে আছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেন। তবে যারা দায়িত্ব পালন করতে পারবে না, সেই জেলায় অন্যদের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
আগামী ১৪ জুলাই থেকে করোনা মোকাবিলায় সরকার কঠোর লকডাউনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে স¤প্রতি এ দায়িত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত এই নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট সচিবদের কাছে পাঠানো হয়েছে। করোনাকালীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য সরকারি কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে সরকার ৬৪ জেলায় ৬৪ জন সচিবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে একজন সচিব একটি জেলায় এসব কাজ সমন্বয় করবেন।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ কামরুল হাসান ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের জেলায় দায়িত্ব প্রাপ্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম স্যারের সঙ্গে আমরা সমন্বয় সভা করেছি। সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আজ থেকে পুরো লকডাউন বাস্তবায়ন করা হবে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, জেলা পর্যায়ে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য সরকারী কার্যক্রম সমন্বয়ে ৬৪ সিনিয়র সচিব ও সচিবকে ৬৪ জেলার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মৃত্যুর মিছিলও যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার থেকে ৫ এপ্রিল থেকে প্রথম সাত দিন পরে ২ দিনের লকডাউন ঘোষণা দেয়। কিন্তু সেই লকডাউন খুব বেশি একটা কাজে আসেনি। মানুষের মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগ্রাসী ভ‚মিকায় কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও লকডাউনের মধ্যে সরকার ঘোষিত ও নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে শিথিলতাই লক্ষ্য করা গেছে। প্রথম দফায় সরকার ঘোষিত লকডাউনের মেয়াদ গত রোববার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। পরে দুই দিন বাড়ানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি মানায় মানুষের উদাসীনতা ও করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়ঙ্কর রূপে দেখা দেয়ায় সরকার থেকে আজ বুধবার থেকে সর্বাত্মক কঠোর লকডাউনে নামার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আজ থেকে শুরু হওয়া সাতদিনের এই কঠোর লকডাউনে মানুষকে আগের মতো ঘরে থাকতে বাধ্য করতে সরকার থেকে নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। একমাত্র জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ছাড়া শিল্পকলখানা ও ব্যাংক আজ থেকে খোলা থাকছে। এছাড়া সাতদিনের জন্য সরকারী-বেসরকারী অফিস, আদালত, গণপরিবহন, সবকিছু বন্ধ করে দেয়া হবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান আজ বুধবার থেকে সাত দিনের জন্য কঠোর লকডাউন শুরু হচ্ছে। এ সময় জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ছাড়া সরকারী-বেসরকারী সব অফিস বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে গণপরিবহন শপিংমল, দোকানপাটসহ সবকিছু।
জানা গেছে, সরকারের দ্বিতীয় দফা এই কঠোর লকডাউনের সময় প্রথমবারের মতো করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে সমন্বয় এবং সরকারী ত্রাণ তৎপরতা, স্বাস্থ্যসেবাসহ সবকিছু মোকাবিলায় এই ঘোরতর সঙ্কটে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের একেকটি জেলার সমন্বয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব ও সচিবরা দায়িতপ্রাপ্ত জেলায় করোনা মোকাবিলায় সবকিছু মনিটরিং এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত জারিকৃত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব/সচিবরা সমন্বয় কাজে তার মন্ত্রণালয়/ বিভাগ/ দফতর সংস্থার উপযুক্ত সংখ্যক কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করতে পারবেন। এছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণমাধ্যম, ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয়সাধন করে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনার কাজ (সচিবরা) তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ করবেন। আদেশে বলা হয়, তারা (সিনিয়র সচিব/সচিব) জেলা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করবেন। সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত সমস্যা/ চ্যালেঞ্জ বা অন্য বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ বিভাগ/দফতর/সংস্থাকে লিখিত আকারে জানাবেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে নিয়মিত অবহিত করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অবসর বা বদলির কারণে সিনিয়র সচিব/ সচিবের দফতর পরিবর্তন বা পদ শূন্য হলে সেখানে নিযুক্ত সিনিয়র সচিব/সচিব দায়িত্ব পালন করবেন। যেসব সচিব করেনায় আক্রান্ত তারা হলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমানারা খানুমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে চুড়াডাঙ্গা জেলায়। তবে তিনি আগে চেয়ে ভালো আছেন বলে তার একান্ত সচিব জানিয়েছেন।
গত ১ এপ্রিল রাত থেকে শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে স¤প্রতি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে বদলি হওয়া সচিব মো. আব্দুল মান্নানের। এরপর করোনা শনাক্ত হয় তার। পরে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এখন তিনি বাসায় আইসোলেশনে আছেন। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মান্নানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলায়। শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান বলেন, একটু আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় আসার পরে শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো আছে।
তথ্য ও স¤প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া মার্চের শেষের দিকে করোনায় আক্রান্ত হন বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। তার একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল আহসান জানান, স্যার এখন ভালো আছেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নড়াইল জেলায়।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাসায় আইসোলেশনে আছেন। তার একান্ত সচিব (উপসচিব) মুহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন খান জানান স্যার করোনায় আক্রান্ত। সাতদিন হাসপাতালে থাকার পর বর্তমানে তিনি বাসায় আছেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গোপালগঞ্জ জেলায়। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মাদারীপুর জেলায়। তিনি গত ২৩ মার্চ আক্রান্ত হলেও এখন করোনামুক্ত। গত ৩ এপ্রিল তার করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। বর্তমানে তিনি অফিস করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।