Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাব্যতা সঙ্কটে নৌবন্দর অচলের শঙ্কা

ভৈরব নদে জোয়ারের অপেক্ষায় পণ্যবাহী জাহাজ

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

ভৈরব নদের বিভিন্নস্থানে নাব্যতা সঙ্কট ও পলি জমে, চর জেগে দেশের অন্যতম বৃহৎ যশোরের অভয়নগর নওয়াপাড়া নৌবন্দর অচল হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদী খনন ও অবৈধ দখলদার মুক্ত না করা গেলে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। ফলে এর সাথে জড়িত হাজার হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। রেল, মহাসড়ক ও নৌপথ এর চমৎকার যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে গড়ে ওঠা উপজেলার শিল্প-বাণিজ্য ও বন্দরনগর নওয়াপাড়া এখন দেশের প্রথম শ্রেণির নৌবন্দর। নওয়াপাড়া মোকাম থেকে নদী পথে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে প্রতিদিন শত শত কার্গো জাহাজ বোঝাই বিভিন্ন প্রকারের খাদ্য শস্য, পাথর, কয়লা, সারসহ নানা প্রকারের দ্রব্য সামগ্রী আসে ও খালাস হয়। আবার এ বন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একইভাবে পন্য সরবরাহ হয়ে থাকে।

সরেজমিনে নওয়াপাড়া বন্দর এলাকার সিডল টেক্সটাইল মিলের পূর্বপাশে ভৈরব ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় দেখা যায়, বিশাল এলাকা জুড়ে পলি জমে চর জেগে নদের গতি পথ ছোট হয়ে গেছে। অপরদিকে উৎসবে মেতে ওঠেছে অবৈধ দখলদাররা। সুযোগ বুঝে প্রথমে নদী পথের ঘাট পড়ে ইমারত তৈরি করে নিচ্ছে। এতে নদের গতিপথ ছোট হয়ে নৌচলাচল বাধাগ্রাস্থ হচ্ছে। সময় মতো মালামাল লোড আনলোড না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কার্গো মালিক ও পন্য আমদানীকারকরা। এই মুহূর্তে খনন ও দখলদারমুক্ত করা না হলে নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে করে এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য মারাতক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ফলে হাজার হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয় নৌযান শ্রমিক ফেডারেসনের নেতা ও এমভি হাজেরা-৪ মাস্টার মো. হাসান জানান, নওয়াপাড়া ভৈরব সেতু থেকে চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত প্রায় ২ নাটিক্যাল নদের তীরে অধিকাংশ স্থানেই চর জেগে ওঠেছে ও নাব্যতা হারিয়ে গতিপথ ছোট গেছে। জোয়ারের সময়ও মালবাহী কার্গো চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।

তবে ভৈরব নদের খুলনা নিউজপ্রিন্ট থেকে নওয়াপাড়া চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত প্রায় ১৫ নাটিক্যালের মধ্যে কিছু কিছু স্থানে নদের তীরে ছোট ছোট চর দেখা দিয়েছে। ভৈরব নদের এই ১৫ নাটিক্যাল এলাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে ড্রেজিং না করা হলে মালবাহী জাহাজ চলাচল অসম্ভব হয়ে পরবে এবং নওয়াপাড়া নৌবন্দর অচল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিবে। তিনি আরও বলেন, নওয়াপাড়া নৌবন্দরে প্রতিদিন জাহাজ পন্য খালাস করতে এসে জোয়ারের অপেক্ষায় বসে থাকে। ফলে আমদানীকারক ব্যবসায়ীরা একদিকে পন্য খালাসে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে অন্যদিকে জাহাজ ড্যামারেজসহ গুনতে হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। নওয়াপাড়া হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফাল্গুন মন্ডল বলেন, ভৈরব নদে পলি জমে চর জাগায় আমরা শংকিত হয়ে পরছি।

এ প্রসঙ্গে বিআইডবিøউটি-এর নওয়াপাড়া নৌবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমি জানতে পেরেছি ভৈরব নদের বিভিন্নস্থানে নাব্যতা কমে পলি জমে চর জেগেছে। চর জায়গা স্থানগুলো চিহ্নিত করে ড্রেজিং-এর জন্য ডিজি মহাদয়ের নিকট পত্র পাঠিয়েছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে ভৈরব নদ ও বন্দর এলাকায় খনন কার্যক্রম শুরু হবে। অভয়নগরসহ আশপাশের উপজেলার প্রায় ২০ হাজার পুরুষ-নারী শ্রমিক এ বন্দরের কাজ করে। এ বন্দর বন্ধ হলে শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, নদের পার যারা দখল করে আছেন তাদের যাচাই-বাচাই করে অবৈধ দখলদারদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাসহ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ