পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সর্বাত্মক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সবাইকে এ বিধিনিষেধ মানতে হবে। এই সাতদিন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এটিএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ অনলাইন সব সেবা। এই সময়ে সমুদ্র, স্থল ও বিমানবন্দর এলাকার ব্যাংক শাখা আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের জন্য খোলা রাখা যাবে। পাশাপাশি রফতানিকারকদের প্রয়োজনে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন করা শাখা (এডি) নির্দিষ্ট দিনের জন্য খোলা রাখা যাবে। এদিকে লকডাউনে ব্যাংক বন্ধ থাকার খবরে ব্যাংকগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক পড়েছে। মানুষ হাতে নগদ টাকা রাখতে ব্যাংকে ভিড় করছেন। আর গ্রাহকের টাকা প্রদানে ব্যাংকগুলোতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যাংকাররা।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের অফ সাইট সুপারভিশন বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানোও হয়েছে। শুধু ব্যাংকই নয়; ব্যাংকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় সর্বাত্মক লকডাউনে বন্ধ থাকবে দেশের পুঁজিবাজারও। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম গণমাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ সব ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এ সময় ব্যাংক শাখার পাশাপাশি আর্থিক সেবা দেয়া ব্যাংকের সকল উপ-শাখা, বুথ ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবাও বন্ধ থাকবে। তবে সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এটিএম, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ অনলাইন সব সেবা। এছাড়া সমুদ্র বন্দর, স্থলবন্দর, বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখা উপশাখা বুথসমূহ খোলা রাখতে বন্দর/কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিধিনিষেধের আওতায় সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা বলেছে সরকার। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে ব্যাংক বন্ধ থাকবে। তবে সমুদ্র, স্থল ও বিমানবন্দর এলাকার ব্যাংকের শাখা ও বুথগুলো খোলা থাকবে। কারণ বন্দর কাস্টমসে পণ্য আমদানি-রফতানিতে প্রয়োজন হতে পারে; তাই সেখানকার সংশ্লিষ্ট শাখাগুলো খোলা থাকবে।
এদিকে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় গতকাল কাজ ও চলাচলের ওপর নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজ নিজ কর্ম এলাকায় অবস্থান করতে হবে। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর ও সংশ্লিষ্ট অফিস এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
কঠোর লকডাউনের কথা ভেবে ব্যাংকে গ্রাহকদের ভিড়
আগামীকাল বুধবার থেকে সরকার কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। রফতানিমুখী শিল্প কারখানা ছাড়া সব কিছুই বন্ধ থাকবে এ সময়। কড়াকড়ি আরোপ করা হবে চলাচলেও। লকডাউনের মেয়াদ এরপরে আরও বাড়বে কি না তা কেউই বলতে পারছেন না। আর এরই মাঝে নিজের কাছে নগদ টাকা রাখতে ব্যাংকে ভিড় জমিয়েছেন গ্রাহকরা। সাধারণ গ্রাহকরা বলছেন, নিত্যপণ্যের বাজার খোলা থাকলেও ব্যাংক বন্ধ থাকবে। সে সময় প্রয়োজনীয় খরচের জন্য নগদ টাকা হাতে রাখতে চাই। গতকাল রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল, দৈনিক বাংলা, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব ব্যাংকের সামনে গ্রাহকদের দীর্ঘ সারি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে প্রতিটি শাখাতেই। মাস্কবিহীন কোনো গ্রাহককে ব্যাংকের শাখাগুলোতে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে গ্রাহের হাত স্যানিটাইজ করে দিয়ে মাপা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বুধবার থেকে কঠোর লকডাউনের কথা ভেবে অনেকেই আগেভাগেই ব্যাংকের কাজ সেরে রাখছেন। অনেকেই বকেয়া ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করছেন। তবে টাকা জমার চেয়ে টাকা উত্তোলনই বেশি হচ্ছে।
এ বিষয়ে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের কর্মকর্তা কাওছার আজিজ বলেন, লকডাউনে ব্যাংক লেনদেন বন্ধ থাকতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে গ্রাহক ব্যাংকে এসে ভিড় জমাচ্ছেন টাকা উত্তোলনের জন্য। আমরা তাদের চাহিদা মতো সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। তবে গ্রাহক উপস্থিতি বেশি হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পূবালী ব্যাংক মৌচাক শাখার গ্রাহক মো. কিবরিয়া বলেন, আমাকে টাকা উত্তোলন করতে হবে। সামনে লকডাউন আছে, তাই আগামীকাল আরও বেশি গ্রাহক উপস্থিতি থাকবে। টাকা এখন প্রয়োজন না হলেও কাছে রাখছি। বলা যায় না, কঠোর লকডাউন কয়দিন থাকবে। ব্যাংক খোলা থাকবে কি না তার জানি না।
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখতে সার্কুলার জারি করেছিল। সে মোতাবেক লেনদেন চলছিল সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। তবে লেনদেনে গ্রাহক উপস্থিতি বাড়ায় লেনদেনের সময়সীমা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত রোববারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবারও ব্যাংকিং লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। আর লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে বেলা ৩টা পর্যন্ত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।