পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে মৃত্যু প্রতিদিন রেকর্ড বাঙছে। লকডাউন, স্বাস্থ্যবিধি, টিকাগ্রহণ কোনোটিতেই যেন এ ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা এক দিনে দেশে করোনায় মৃত্যুর নতুন রেকর্ড।
এর আগে ১০ এপ্রিল এক দিনে করোনায় ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৭৩৯ জনের। নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৮১৯ জন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫৬ জনে। গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ২১২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন পাঁচ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯০ জন। সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২৪৮টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১২১টি, জিন এক্সপার্ট ৩৪টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন ৯৩টি। এসব ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ২৯ হাজার ২৯৮টি। আগের নমুনাসহ মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৩৭৬টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫০ লাখ ২ হাজার ৮৬৫টি।
এতে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ২০ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪২ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৭৮ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৪৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ জন, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে ৪ জন করে ৮ জন, সিলেট বিভাগে ২ জন। এছাড়া রংপুর বিভাগে এক জন রয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালেই মারা গেছেন ৭৭ জন, বাড়িতে এক জন। মৃতদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৪৮ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে সাত জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছয় জন, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে একজন রয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৫৩৩ জন ও আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২২৬ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন এক লাখ ১১ হাজার ১৩১ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৯৫ হাজার ৫৭১ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৫ হাজার ৫৬০ জন।
এর আগে গত ৭ এপ্রিল দেশে এক দিনে করোনা শনাক্ত হয় ৭ হাজার ৬২৬ জন। যা দেশে এক দিনে করোনা শনাক্তে সর্বোচ্চ রেকর্ড। আর গত ৬ এপ্রিল এক দিনে করোনা শনাক্ত হয়েছিল সাত হাজার ২১৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার বাড়তে থাকে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব মতে ২০২০ সালের জুন থেকে আগস্ট এই তিন মাস করোনার সংক্রমণ ছিল তীব্র। মাঝে নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বাড়লেও বাকি সময় সংক্রমণ নিম্নমুখী ছিল। ২০২১ সালের মার্চে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউয়ের চেয়ে এবার সংক্রমণ বেশি তীব্র। মধ্যে কয়েক মাস ধরে শনাক্তের চেয়ে সুস্থ বেশি হওয়ায় দেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা কমে আসছিল। কিন্তু মার্চ থেকে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যাও আবার বাড়তে শুরু করেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ২৯ মার্চ বেশকিছু বিধিনিষেধসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে ঘরের বাইরে গেলে মাস্কের ব্যবহার অন্যতম। কিন্তু সংক্রমণ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে থাকলেও জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে এখনো উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই।
আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার থেকে জানা যায়, সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১৩ কোটি ৬০ লাখ ১ হাজার ১১২ জন। এ মহামারিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৯ লাখ ৩৯ হাজার ৪০ জন। এখন পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১০ কোটি ৯৩ লাখ ৬২ হাজার ১০৬ জন।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৩ জন মারা গেছেন। এছাড়া করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫০ জনের। যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ব্রাজিল। আক্রান্ত ও মৃত্যু বিবেচনায় দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়। এই দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩৪ লাখ ৪৫ হাজার ৬ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৪৬৯ জন। তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। এশিয়ার মধ্যে ভারত করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩৩ লাখ ৫৫ হাজার ৪৬৫ জন। মারা গেছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০৫ জন।
করোনাভাইরাস শনাক্তের তালিকায় চারে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫০ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৯৮ হাজার ৬০২ জন। তালিকার পঞ্চম স্থানে থাকা রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২ হাজার ৬৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনাক্ত ৪৬ লাখ ৩২ হাজার ৬৮৮ জন। এরপর করোনাভাইরাস শনাক্তের দিক থেকে তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, ইতালি, স্পেন ও জার্মানি। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।