Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আটকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে র‌্যাব

ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার অভিযোগে আটক চার সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে র‌্যাব। অভিযুক্তদের বিষয়টি তদন্তে এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে র‌্যাব সদর দফতর। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে সেনাবাহিনীর তিন জনকে র‌্যাবের কাছে এবং অপর একজন বিমান বাহিনীর সদস্য হওয়ায় তাকে ওই বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে--ল্যান্স করপোরাল দুলাল মৃধা, সৈনিক রোকন মিয়া, ল্যান্স করপোরাল মো. রনি ও সৈনিক সাগর। তাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলা তদন্ত করছে পুলিশ। পলাতক একজন বিজিবির ও আরেকজন সাধারণ নাগরিককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গতকাল শনিবার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায়ের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত চার জনের মধ্যে সেনাবাহিনীর তিনজনকে র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।ওই তিনজন র‌্যাবের হেফাজতে রয়েছেন। ওই ঘটনা তদন্তে গত শুক্রবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।

তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর অভিযুক্তদের তাদের মাতৃবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরে ওই মাতৃবাহিনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অপর একজন বিমান বাহিনীর সদস্য হওয়ায় তাকে ওই বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। তার বিষয়ে মাতৃবাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

হাতিরঝিল থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী রাইয়ানা হোসেন নামের এক তরুণী। তিনি এজাহারে অভিযোগ করেন, তার বড় ভাই তামজিদ হোসেন (২৭) তাদের মীরবাগের বাসা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় উত্তরায় যাওয়ার কথা বলে বের হন। দুপুর ১২টার দিকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাকে ফোন করে র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জানান, তার ভাই তামজিদ র‌্যাবের হেফাজতে আছেন। থানা পুলিশ বা ডিবি পুলিশকে জানালে তার ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। একথা বলে ফোন কেটে দেন ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি।

রাইয়ানা অভিযোগে আরো বলেন, আমি পরে অনেকবার ফোন করলে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি রিসিভ করেননি। পরে আনুমানিক দুপুর দেড়টায় ফোন রিসিভ করে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি জানান আমার ভাইকে র‌্যাবের সিনিয়র অফিসাররা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তার নামে অস্ত্র ও মাদক মামলা হবে।
রাইয়ানা অভিযোগে আরো বলেন, আমার ভাইকে র‌্যাবের কোন অফিসে, কোন সিনিয়র অফিসার জিজ্ঞাসাবাদ করছেন জানতে চাইলে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি জানান, এই মুহূর্তে আমার ভাই কোন অফিসে আছে তা বলা যাবে না। তাকে ক্রসফায়ারও দেয়া হতে পারে। যদি আপনার ভাইকে বাঁচাতে চান তাহলে দুই কোটি টাকা রেডি করেন। এর কিছুক্ষণ পর র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দানকারী সেই ব্যক্তি মোবাইল ফোনে আমার ভাইকে তাদের সহযোগীদের দ্বারা মারধরের শব্দ শোনান এবং আমার ভাইকে মোবাইল ফোন দিলে আমার ভাই কাঁদতে কাঁদতে জানায়, তাকে চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে বেদম মারধর করছে। আমি তাদেরকে বলি, আমরা গরিব মানুষ। এত টাকা কোথায় পাব? একপর্যায়ে র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দানকারী সেই ব্যক্তি ১৫ লাখ টাকা দাবি করেন। আমাদের কাছে কোনো টাকা নেই জানালে সেই ব্যক্তি নগদ ১২ লাখ টাকা নিয়ে রাজধানীর একটি অভিজাত মার্কেটে যেতে বলে। পরে পুলিশের সহায়তায় ভাইকে উদ্ধার ও জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: র‌্যাব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ