পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে চার খাতে গুরুত্ব দেয়ায় আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ২০২১-২২ অর্থছরের বাজেটে কোন খাতে সরকারের বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত, সে বিষয়ে মতামত জানাতে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ আহ্বান জানান সংগঠনের নেতারা। আসন্ন বাজেটে করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের একটি সুনিদিষ্ট দিক-নির্দেশনার পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজনে ‘প্রাক-বাজেট আলোচনা : অর্থবছর ২০২১-২২’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এবং ব্র্যাক-এর চেয়ারপার্সন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।
ড. মসিউর রহমান বলেন, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে এবং এটিকে সকল জনগনের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, শুল্ক বা করের হার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে না থাকলে, তা ব্যবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে। তিনি অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ব্যাহত না করে কি হারে রাজস্ব বাড়ানো যায় তার একটি দিক-নির্দেশনা সরকারকে প্রদানের আহ্বান জানান। উপদেষ্টা বলেন, ৭-১০ বছরের জন্য একটি টেকসই ও সহনশীল কর কাঠামো দেশে বিনিয়োগ স¤প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। এছাড়াও তিনি দেশের জিডিপিতে করের অবদান বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন এবং বিভিন্ন খাত কে বিভিন্ন হারের কর অব্যাহিত দেওয়ার কারণে জিডিপিতে করের অবদান কমছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ট্যাক্সেরহার নির্ধারণ ও সরকারের ব্যয়ের বিষয়ে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে, সেই সাথে নাগরিকদের উপর আরোপিত ট্যাক্স সেই নাগরিকের নিকট গ্রহণযোগ্য কিনা সেবিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন। উপদেষ্টা আরো বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে মূসক আদায়ের ফলে অনেক ক্ষেত্রে সার্বিক ভাবে এর হার বেড়ে যায়। সেই সাথে ঘন ঘন করের হার বাড়ানো-কমানো ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাজেট শুধুমাত্র কর আহরণের বিষয় নয়, এটি সরকারের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের একটি রপরেখা। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করছি, যেটা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে এবং বাজেটে করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের একটি সুনিদিষ্ট দিক-নির্দেশনা থাকতে হবে, সেই সাথে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিও বাজেটে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, দেশের এসএমই খাত কে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে এবং এসএমই খাতের জন্য আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতকল্পে মাইক্রো ফাইন্যান্স ইন্সটিটিউট (এমএফআই) গুলোকে বিবেচনা করা যেতে পারে এবং প্রণোদনা প্যাকেজ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের নিকট পৌঁছানো যায়, সে লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, তৈরি পোষাক ও রেমিট্যান্স এর পর আমাদের প্রবৃদ্ধির নিয়ামকগুলো কি হবে, সেগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। সেই সাথে তিনি দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে আমাদের একটি যুগান্তকারী পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন, যেখানে সরকার ও বেসরকারী খাত একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাত নিয়েও চিন্তা করতে হবে এবং বিশেষকরে গ্রামীণ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকল্পে বেসরকারী বিনিয়োগ খুবই জরুরি।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, সরকার ব্যবসাবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থা, শিল্পায়নের বিকাশ এবং উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে যেতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। করোনা পরবর্তী অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গুরুত্ব বিবেচনায় বেসরকারিখাতের প্রত্যাশা পূরণে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ যেমন- আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর, আর্থিক খাত, শিল্প ও বাণিজ্য এবং জ্বালানী, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য অবকাঠামো খাত প্রভৃতি খাত সমূহকে বাজেটে গুরুত্ব প্রদান করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
ওয়েবিনারে ৪টি খাতের উপর সরকারী ও বেসরকারীখাতের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেতাদের মতামত প্রদান করেন। ‘আর্থিক খাত’ সেশনের আলোচনায় আইপিডিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয়, নগদ-এর সিইও রাহেল আহমেদ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম অংশগ্রহণ করেন।
মমিনুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে বন্ড মার্কেট উন্নয়নে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের জন্য ব্যাংকের উপর চাপ কমানো সম্ভব হবে। নাসের এজাজ বিজয় বলেন, এসএমইদের ঋণ সহায়তা পেতে হলে একটি স্কিম থাকা প্রয়োজন। তিনি ভূমির মৌজা ভ্যালু কমানোর প্রস্তাব করেন, সেই সাথে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের জন্য সহায়তা আরো বাড়ানো আহ্বান জানান। রাহেল আহমেদ বলেন, ডিজিটাল লেনদেন কার্যক্রমে প্রণোদনা দিতে হবে এবং ডিজিটাল লেনদেনে মোবাইল অপারেটরদের যে চার্জ আছে তা কমানো প্রয়োজন, সেই সাথে স্মার্ট ফোন আমদানি ও উৎপাদনে কর অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব করেন। আসিফ ইব্রাহীম বলেন, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানীর কর হার কমানো প্রয়োজন এবং লিস্টেড কোম্পানীর কর্পোরেট কর হার কমানো প্রয়োজন।তিনি এসএমই কোম্পানী সমূহকে স্টক মার্কেটে আসার জন্য তালিকাভুক্ত হওয়ার ৫ বছর পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে কর সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।
‘শিল্প ও বাণিজ্য’ সেশনের আলোচনায় বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স এসোসিয়েশন’র সভাপতি কাজী ইনাম আহমেদ, বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল হক, বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ-এর ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ড. মো. মাসুদুর রহমান অংশগ্রহণ করেন।
কাজী ইনাম আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩০০টির মত সুপারশপ রয়েছে। করোনো পরিস্থিতিতেও সুপারশপ সমূহ নির্ধারিত মূল্যে পণ্য প্রদান করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।