Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মার্কেটগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

নিউমার্কেট এলাকার চিরচেনা রূপ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

লকডাউনের’ কারণে টানা চার দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল খুলেছে ঢাকার দোকানপাট ও বিপণিবিতান। একই চিত্র দেশের অন্যান্য মহানগর ও জেলার ক্ষেত্রেও। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল নয়টা থেকে বিপণিবিতান খোলেন ব্যবসায়ীরা, খোলা থাকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। কিন্তু রাজধানীর মার্কেটগুলোতে যেসব স্বাস্থ্যবিধি ও নিয়ম মানার কথা ছিল তা কোথায় মানতে দেখা যায়নি। এছাড়া সকালে ক্রেতা সমাগম না থাকলেও দুপুরের পর ও বিকেল হতেই পুরোনো রূপ পায় মার্কেটগুলো।

সরেজমিনে রাজধানীর নিউমার্কেট, নিউ সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা, গাউছিয়া, চাঁদনিচকসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, কোন মার্কেটের প্রবেশ পথেই জীবাণুনাশক ট্যানেল নেই। শারীরিক দূরত্ব মানার বালাই নেই। ক্ষেত্র বিশেষে সাধারণ মাস্ক ব্যবহারেও অনীহা দেখা গেছে অনেকের মাঝেই। সকালে এসব ফাঁকা মার্কেটের দোকানদারদের সাফ সাফাইয়ের কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেলেও দুপুরের পর থেকে তাদের ক্রেতা সামাল দিতেই বেশি সময় ব্যয় করতে হয়েছে।
নিউমার্কেট এলাকার চিরচেনা রূপ:
নিউ সুপার মার্কেটের দোতলার প্রবেশ পথে একজন নিরাপত্তা কর্মীকে মাস্ক ছাড়া মানুষদের মার্কেটের ভেতরে প্রবেশ করতে বাঁধা দিতে দেখা গেলেও এর বেশি আর কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। এদিকে নিউ মার্কেটের একদল নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীদের দেখা গেছে সেই মার্কেটের দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কি না সেই বিষয়ে তদারকি করতে। তবে এতে দোকানদার ও ক্রেতাদের খুব একটা আগ্রহী হতে দেখা যায়নি।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন দোকান মালিকদের হুঁশিয়ার করে বলেছেন, যে স্বাস্থ্যবিধি মানবে না তার দোকান বন্ধ করে দেয়া হবে। এমন অবস্থায় ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারায় আমরা স্বস্তি অনুভব করছি। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টির ওপর সর্বাত্মক জোর দিচ্ছি। ক্রেতাদের চলাফেরায় জটলা এড়াতে মার্কেটে ফাঁকা জায়গা নিশ্চিত করায় জোর দেয়া হচ্ছে।
নিউ মার্কেটের দিপ্তি-মনি বস্ত্রালয়ের মালিক আনসার হামিদ বলেন, বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকা ও করোনা ভীতির কারণে মার্কেট খোলার প্রথম দিনে ক্রেতা সমাগম তুলনামূলক কম, বিক্রিও কম। তবে বেচা বিক্রি বাড়বে। সামনে রমজান এবং ঈদ। এটাই ব্যবসার মূল মৌসুম। আশা রাখি বেচাকেনা হবে। আবারও আমরা লোকসান কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াব।
সুপার মার্কেটের আদিল গার্মেন্টসের বিক্রিয় কর্মী বলেন, সকাল থেকে কাস্টমার ছিল না। বিকেলে কিছুটা ক্রেতা সমাগম হলেও বিক্রি হচ্ছে না। একই মার্কেটের দোকানদারি ফ্যাশনের বিক্রয় কর্মী লাবলু ইসলাম বলেন, লোক সমাগমের তুলনায় বিক্রি হচ্ছে কম। এই অবস্থায় অল্প লাভে মাল বিক্রি করে দিচ্ছি আমরা। আর সময়ের সৎ ব্যবহার করছেন ক্রেতারা। তারা ন্যায্য দাম চাইলে মাল কিনতে অনীহা প্রকাশ করতেছে।
সন্তানদের নিয়ে গাউসিয়া মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা শামসুন্নাহার বলেন, ঈদ ও রমজানকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে এসেছি। স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টা মাথায় আছে কিন্তু এসবও তো জরুরি। তবে মার্কেট কর্তৃপক্ষের উচিত ছিলো স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে আরও সচেতন পদক্ষেপ নেয়া।
চাঁদনিচক মার্কেটের এআরবি ফ্যাশনের মালিক আলাউদ্দীনের সাথে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, কখন কোন সিদ্ধান্ত আসে সেটা অনুমান করা মুশকিল। আমরা আয়োজন করে সব কিছু করলাম পরে দেখা গেলো দুই দিন পর আবার সব বন্ধ করে দিল। তখন ব্যাপারটা কেমন হবে? আজকে যখন মার্কেট খোলা হলো তখন ঘোষণা এলো ১৪ তারিখ থেকে সর্বাত্মক লকডাউনে যাওয়ার কথা ভাবছে সরকার। এই যে দোটানা, এই কারণেই কোন কিছু সঠিকভাবে হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ৫ এপ্রিল থেকে সারা দেশে সাত দিনের জন্য ‘লকডাউন’ কার্যকর হয়। বন্ধ হয়ে যায় শপিং মলগুলোও। এরপর টানা আন্দোলন চালায় নিউমার্কেট এলাকার বিপণিবিতানগুলো, বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ও ঢাকার আরও কিছু বিপণিবিতানের ব্যবসায়ী-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনে গতকাল থেকে সরকারি নিয়ম মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলার ঘোষনা দেয় সরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ