বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বৈশ্বিক মহামারি করোনা বিস্তার রোধে সারাদেশের মতো গণজমায়েত নিষেধ করেছে সরকার। দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মসজিদে নামাজ পড়ার বিষয়েও কড়াকাড়ি আরোপের পাশাপাশি নামাজের আগে-পরে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মাদরাসা, এতিমখানা, হেফজখানাও বন্ধ করাসহ ওয়াজ মাহফিল, ওরস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অথচ সব নিষেধাজ্ঞা আমান্য করে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হাজার হাজার মানুষ পণতীর্থ গঙ্গাস্নানে অংশ নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) রাতেই সাধক ও পণতীর্থ গঙ্গাস্নানের প্রবর্তক শ্রী অদ্বৈত আচার্য্যের জন্মস্থান যাদুকাটা নদীতীরের নবগ্রামে গিয়ে পৌঁছেন। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ভোর থেকেই হাজার হাজার পুণ্যার্থী স্নান সম্পন্ন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাহিরপুরের পণতীর্থ গঙ্গাস্নানে যাওয়ার সড়কের প্রবেশপথে আব্দুজ জহুর সেতুতে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। আজ শুক্রবার সকালে স্নান সেরে ফেরা হাজার হাজার মানুষের মাঝে ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মানার সামান্যতম চেষ্টা। শারীরিক দূরত্ব থেকে শুরু করে মাস্ক পরা― এসবের বালাই ছিল না তাদের মাঝে। তারা জানান, আজ ভোর ৫টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত স্নানের সময় ছিল। তাই তারা নির্ধারিত সময়ে স্নান সেরে বাড়ি ফিরছেন।
জানা যায়, কয়েকশ’ বছর ধরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের যাদুকাটা নদীতে গঙ্গারূপী তীর্থ মনে করে মনোবাসনা পূরণের জন্য স্নান উৎসবের শুরু হয়। একই সময়ে পাশের মুসলিম সম্প্রদায়ের সাধক শাহ আরেফিনের মাজারেও ওরস চলে আসছিল। তবে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এবার শাহ আরেফিনের মাজারে ওরস বাতিল করা হয়।
এদিকে গত ৩১ মার্চ রাতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন পণতীর্থ গঙ্গাস্নান ও শাহ্ আরফিনের ওরস অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
সভায় জানানো হয়, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত ১৮ দফা নির্দেশনা সবাইকে পালন করতে হবে। দোকানপাট, গণপরিবহন ও জনসাধারণের স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার কথা জানায় জেলা প্রশাসন। সভায় উপস্থিত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান পণতীর্থ গঙ্গাস্নান ও শাহ্ আরফিনের ওরস বন্ধ করতে কড়াকড়ি হওয়ার কথা জানান। তবে ওরস বন্ধ করে কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও পণতীর্থ গঙ্গাস্নান বন্ধের ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
দিরাই রাজনগরের বাসিন্দা অদৈত সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছি। রাতে গিয়ে পৌঁছে আজ সকালে স্নান করেছি। এখন ভালো লাগছে। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ স্নান করেছে বলে জানান তিনি। সিলেটের নবীনগর থেকে স্নান করতে এসেছিলেন রিপন দত্ত। তিনি জানান, পুলিশ রাতে যাদুকাটা নদীতীরের গিয়ে আমাদের চলে যেতে বলেছে। কিন্তু বৃষ্টির মাঝে এত রাতে কীভাবে যাব। তাই কেউ যেতে পারেনি। সকালে নদীতে স্নান করে এখন বাড়ি ফিরছি।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জের জয়কলসের বাসিন্দা সুবরি রায় জানান, এবার স্নানের সময় বেশি ছিল না। মাত্র দেড় ঘণ্টায় সবাই নদীতে স্নান করেছে। তাই কিছুটা ভিড় হয়েছে।
এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ সরদার বলেন, গতকাল থেকেই পুলিশ পুণ্যার্থীদের নিষেধ করছে। তাদের গাড়ি ফিরিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু লুকিয়ে লুকিয়ে তারা পুণ্যস্নান সম্পন্ন করেছেন। তবে আমরা কঠোর হওয়ায় এখন তাদের উপস্থিতি কমেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।