Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নিত্যপণ্যের বাজার বেসামাল

সৈয়দ শামীম শিরাজী, সিরাজগঞ্জ থেকে : | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

প্রতি বছরের মত এবারও রমজান কে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর পাগলা ঘোড়া ছুটে চলেছে। প্রতিদিনই প্রায় লাফিয়ে লাফিয়ে কোন না কোন দ্রব্যের দাম বাড়ছে। দ্রব্যের অগ্নিমূল্যে সিরাজগঞ্জবাসী যেন হাপিয়ে উঠেছে।

প্রতি বছর রমজান এলেই সরকারিভাবে ও স্থানীয় প্রশাসক থেকে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে বলা হলেও সেদিকে কেউ তোয়াক্কা না করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা যার যার খেয়াল খুশি মতো দাম বৃদ্ধি করছে। আর পক্ষে দেখাচ্ছে নানা অযুহাত। যা ধোপে টেকে না। এদিকে মরার উপর খাড়ার ঘা’র মতো মহামারী করোনা যুক্ত হয়ে যেন বাজারকে লাগামহীন করে ফেলেছে।

কয়েকদিন পরেই পবিত্র রমজান মাস শুরু। তবে রোজা আসার আগেই তার প্রভাব পড়েছে নিত্য পণ্যের বাজারে। একদিকে করোনার প্রকোপ বাড়ছে, অন্যদিকে নিত্য পণ্যের বাজার বেসামাল হয়ে উঠছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ইফতারির জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখন চড়া। নতুন করে বেড়েছে বেসন তৈরির অন্যতম উপকরণ অ্যাংকার ডালের দাম। আরও বেড়েছে বোতলজাত সয়াবিন, রসুন, আদার দাম। বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। মোটা চালের দামও আবার বেড়েছে।

সিরাজগঞ্জ বাজারে বাজার করতে আসা হোসেন আলী বলেন, সামনে রোজা এমন সময় করোনা বাড়ছে। অথচ এই সময়েও জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে। সীমিত আয়ের মানুষের জন্য এটা অসহনীয়। এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা বাড়ছে। যে কারণে জিনিসপত্রের দামও বাড়ছে। চিকন বা সরু চালের দাম বেড়েছে মোটা চালের দামও। চিকন চাল ও মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। প্রতি কেজি চিকন চালের দাম ৬০-৬৫ টাকায়। আর প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৩৮ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেসন তৈরির অ্যাংকার ডালের দাম। ৪০ টাকা কেজি অ্যাংকার ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৫ টাকা কেজি। ৯০ টাকা কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি আদার কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। বাজারে ৫ লিটার ওজনের সয়াবিনের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৬৩০ টাকা। গত সপ্তাহে এই সয়াবিন বিক্রি হয় ৫১৫-২০ টাকা। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগি। গরু ও খাসির মাংস দীর্ঘদিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আলুর দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২-৩ টাকা। ১৩-১৪ টাকা কেজি আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬ টাকা কেজিতে। তবে কাঁচামরিচ, পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে।

সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮৫-১৯০ টাকা।আর সোনালী মুরগির কেজি ২৭৫-২৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। পটল, বেগুন, ঢেঁড়স, সজনে ডাটাসহ প্রায় সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ সবজির কেজি এখন ৫০ টাকার ওপরে। বাজারে সজনে ডাটা এক কেজি কিনতে ক্রেতাদের ৬০ টাকা গুনতে হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে সজনে ডাটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। এছাড়াও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পটল, বেগুন, ঢেঁড়স। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। শশা আগের সপ্তাহের মতো ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ১৫-২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ২০-২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পেঁপের কেজি আগের মতোই ৩০-৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গাঁজরের কেজিও আগের সপ্তাহের মতো ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে কাচাঁ মরিচ ৩০ টাকা, দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা। সবকিছু মিলিয়ে মহামারী করোনা ও রোজাকে সামনে রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়ের ক্রেতাদের নাভিশ্বাস বইছে। তারা দুচোখে যেন সরিষার ফুল দেখছে। এসব দেখার যেন কেউ নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিত্যপণ্য

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ