Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ী ও কৃষক

কুড়িগ্রামে হিমাগার সঙ্কট

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

কুড়িগ্রামের হিমাগারের অভাবে আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছে আলুচাষিরা। অতিরিক্ত আলুর চাপে হিমাগারগুলোর সামনে ট্রলি, ঘোড়ার গাড়ি, ভ্যান ও মহিষের গাড়ির দীর্ঘ সারি। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ধারণক্ষমতা না থাকায় তারা হিমাগারের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়েছেন। তারপরেও ভিড় করছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। বাজারে আলুর দাম হ্রাস, ক্রেতার অভাব ও বিদেশে রফতানি কমে যাওয়ায় আলু উৎপাদন করে এখন মাথায় হাত কৃষকের।

সরেজমিনে কয়েকটি হিমাগার ঘুরে দেখা যায়, হিমাগারগুলো প্রধান ফটক বন্ধ। মাঠে ও রাস্তায় শত শত বস্তা আলু নিয়ে অপেক্ষমান কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। দু’টি পিকআপ নিয়ে বাবর কোল্ড স্টোরেজের সামনে রাস্তায় বসে আছেন পিকআপ চালক সাইদুল মিয়া। কিন্তু ভেতরে ঢুকতে পারছেন না। একই অবস্থা হক হিমাগারের সামনে বসে থাকা রাজারহাটের ঘড়িয়াল ডাঙার কৃষক রিয়াজুল ইসলাম। তিনি জানান, ৭০ বস্তা আলু নিয়ে দু’দিন ধরে অপেক্ষা করেও হিমাগার কর্তৃপক্ষের সাড়া পাচ্ছেন না।

হক হিমাগারের কর্মচারি নুর ইসলাম জানান, এই হিমাগারে ১ লাখ ৭০ হাজার বস্তা ধারণক্ষমতা প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। আর আলু নেয়ার সুযোগ নেই। সেকেন্দার কোল্ট স্টোরেজের স্টোর কিপার আইয়ুব আলী জানান, এই হিমাগারে ১ লাখ ৮০ হাজার বস্তা ধারণ ক্ষমতার পুরোটাই পূরণ হওয়ায় আলু নেয়া যাচ্ছে না। জমিতে এখনও প্রচুর আলু তোলা বাকি। এই অতিরিক্ত আলু কৃষকদের বাড়িতে সংরক্ষণ করা ছাড়া উপায় নেই।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ৪টি হিমাগারে মোট ধারণ ক্ষমতা ৬ লাখ ২০ হাজার বস্তা। ধারণ ক্ষমতার প্রায় পুরোটাই পূরণ হওয়ায় অতিরিক্ত কিছু আলু সংরক্ষণের চেষ্টা করছে এসব হিমাগার কর্তৃপক্ষ।

সদর উপজেলার সন্ন্যাসী গ্রামের কৃষক আব্দুল বাতেন, রাজারহাটের দেবালয় গ্রামের কৃষক আজম আউয়াল দোলনসহ কয়েকজন কৃষক জানান, প্রতি কেজি আলুর মূল্য ৬-৭ টাকায় নেমে গেছে। তাও ক্রেতা মিলছে না। হিমাগারেও জায়গা মিলছে না। ফলে আলু চাষ করে তারা বিরাট লোকসানের মুখে পড়েছেন। তারা আরো জানান, এ বছর আলু বীজের দাম বেশি থাকায় প্রতি একর জমিতে আলু চাষ করতে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ পড়েছে।

সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারের আলু ব্যবসায়ী ছোলেমন আলী জানান, অন্যান্য বছর বিদেশে আলু রফতানির কারণে আলুর বাজার স্থিতিশীল থাকলেও এ বছর রফতানি চাহিদা কম থাকায় এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে আলুর বাজারে। দিনে কমছে দাম।

আলু রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান এগ্রি কনসার্ণের ডেপুটি ম্যানেজার সাহানুজ্জামান জানান, বর্তমানে তারা শ্রীলংকা ও সিঙ্গাপুরে সীমিত পরিমাণ আলু রফতানি করছেন। তবে ডোনাটা, সানসাইন ও কুম্বিকার মতো কিছু জাতের আলুর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশে এসব জাতের আলু আবাদ কম হওয়ায় রফতানির সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ