Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নাজিরপুরে শ্রীরামকাঠী-ভরতকাঠী খেয়া পারাপারে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার পাঁচগুন আদায়

নাজিরপুর (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৩৫ পিএম

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের শ্রীরামকাঠী বাজারের পূর্ব টার্মিনালের সাথে ফেরি ঘাটের পাশে শ্রীরামকাঠী-ভরতকাঠী খেয়াঘাটে সরকারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে পাঁচগুন ভাড়া বেশি নেয়ার আভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে প্রকাশ্যে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে খেয়া ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। এতে জিম্মি হয়ে পরেছে প্রতিদিন খেয়া পারাপার হওয়া নাজিরপুর উপজেলা ও নেছারাবাদ উপজেলার কয়েক হাজার জনসাধারন।
সরেজমিনে শ্রীরামাকাঠী ইউনিয়নের বাজার সংলগ্ন শ্রীরামকাঠী-ভরতকাঠী খেয়া নামে পরিচিত ঘাটে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকার চেয়ে অতিরিক্ত পাঁচগুন ভাড়া আদায়ের সত্যতা পাওয়া গেছে।
সরকারি তালিকানুযায়ী মানুষ জন প্রতি ভাড়া ৩ টাকা ঘাটে ২ টাকা খেয়ায় আদায় করার কথা থাকলেও মূলত আদায় হচ্ছে জনপ্রতি ১০ টাকা, চালকসহ মটরসাইকেল নেয়া হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন যাবৎ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। রাতের বেলায় এ ভাড়া আরো বৃদ্ধি করে তাদের ইচ্ছেমত আদায় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের এক যাত্রী এস এম জাহিদুল হক জানান, আমি প্রায়ই মটরসাইকেল নিয়ে খেয়া দিয়ে পারাপার হই। আসতে ৪০ টাকা ও যাইতে কোন দিন ৫০ টাকা বা তারও বেশি তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী দিতে হয়। আমরা জানি সরকারি তালিকার ভাড়া আরোও কম কিন্তু কি করবো, তাদের ইচ্ছামত না দিলে খেয়া পার হতে পারি না। এনিয়ে অনেকবার প্রতিবাদ করলে আমরা যদি এর বিরুদ্ধে কথা বলি বা ভাড়ার তালিকা দেখতে চাই তা হলে তারা বলে আপনাকে কেন দেখাব যেটা ভাড়া আমরা সেটাই নেই।

নাজিরপুর উপজেলার শ্রীরামকাঠী সদর বাজারের স্থানীয় এক যাত্রী মোঃ রাজু হাওলাদার জানান আমি প্রতিনিয়ত খেয়ায় পারাপার হই কিন্তু জুলুম করে আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে এবং ইচ্ছাখুশি মত তাদের খেয়া পারাপার করে।

জানা যায়, দুটি উপজেলার সংযোগ পথ হিসাবে এ খেয়াটি পিরোজপুর জেলা পরিষদের মাধ্যমে ইজারা দেয়া হয়। গত ২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে পিরোজপুর পঙ্গু,দুঃস্থ ও বেকার মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতি লিমিটেড শ্রীরামকাঠী-ভরতকাঠী ঘাট জেলা পরিষদ কোঠায় সমঝোতার ভিত্তিতে ইজারা প্রাপ্ত সমির কুমার বাচ্চুর নামে এটি ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারারাদারের পক্ষে বর্তমানে জিহাদ আলী শেখ খেয়া পরিচালনা করছে বলে জানা যায়।
খেয়ার মাঝি মিজানুর রহমান অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ পথে যাত্রী কম হয়ে থাকে। তাই আমরা মানুষ জন প্রতি ১০ টাকায় এবং মটরসাইকেল ৪০ টাকায় পারপার করে থাকি। তবে কাম্য অনুযায়ী আমরা সেই পরিমান যাত্রী পাইনা বলেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করি। আমরা চলব কিভাবে। ঘাট পরিচালনাকারী জিহাদ আলী শেখকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন পঙ্গু,দুঃস্থ ও বেকার মুক্তিযোদ্ধা সমবায় সমিতি লিমিটেড এর আওতায় এই খেয়া আনা হয়েছে তবে আমরা অতিরিক্ত কোন ভাড়া আদায় করি না বলে অস্বীকার করেন।
এদিকে খেয়ার ইজারাদার সমিরকুমার বাচ্চু মুঠোফোনে জানান আমরা এ পর্যন্ত কারো কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি আমি একটু কাজে ব্যস্ত আছি কয়েকদিনের মধ্যেই ঘাটে এসে বিষয়টি শুনব এবং জানব। তবে আমাদের খেয়া পারাপারের জন্য মোট ০৫ টাকা হারেই টাকা তোলার কথা রয়েছে। যদি কোন ট্রলার বা নৌকা তাদের ইচ্ছামত টাকা তোলার অভিযোগ আসে তা হলে সেই ট্রলার বা নৌকা আমি বন্ধ করে দেব।
নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ওবায়দুর রহমান বলেন এই ইজারা আমাদের অফিস থেকে তো হচ্ছে না এটি জেলা পরিষদ থেকে সেখানে যে রেট আছে সেই রেটের বাইরে নেওয়ার কোন সুযোগ নাই যদি কেউ রেটের বাইরে গিয়ে ভাড়া আদায় করে তা হলে আমাদের অভিযোগ আসলে তা খতিয়ে দেখব।
এবিষয়ে পিরোজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন মহারাজ মুঠোফোনে জানান আমার তো এই মুহুর্তে মুখস্থ নাই, মূলত ঐ খেয়ায় রেট কত তা আমার জানা নাই তবে একটা অভিযোগ একজনারে দিয়া আমার অফিসে নির্বাহী বরাবরে পাঠান আমি ব্যবস্থা গ্রহন করব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ