পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাতিল হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। প্রায় এক দশক আগে এ প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছিল। এজন্য সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা প্রণয়নও করা হয়েছে। যা ২০১৬ সালে অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী। শেষ পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েটি আর নির্মাণ করা হচ্ছে না। এতে করে গচ্চা দিতে হবে প্রায় ৯৮ কোটি টাকা।
এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। শিগগিরই তা পাঠানো হবে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে (সিসিইএ)। সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণের কথা ছিল। এজন্য সিসিইএ থেকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। তাই প্রকল্প বাতিল প্রস্তাবও যাচ্ছে ওই কমিটিতে। দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন বলা হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরকে। এ রুটে যানবাহনের সংখ্যা দ্রæত বৃদ্ধি পাওয়ায় চার লেনের মহাসড়কের পাশে ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয় ২০১৯ সালে। প্রধানমন্ত্রী ওই বছর ১৭ অক্টোবর এক্সপ্রেসওয়ের বিষয়ে কয়েক দফা নির্দেশনা/অনুশাসন প্রদান করেন। এগুলো হলোÑঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কার্যক্রম বাতিল, বিদ্যমান চার লেনবিশিষ্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও এ মহাসড়কের উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ এবং প্রশস্তকরণসহ মহাসড়কের উভয় পাশে সার্ভিস লেন নির্মাণের জন্য বৈদেশিক অর্থ সহায়তা সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
প্রস্তাবে বলা হয়, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি পদ্ধতিতে নির্মাণের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনক্রমে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কার্যক্রম বাতিলের বিষয়টি অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সদয় অবগতির জন্য উপস্থাপন করা হয়। এদিকে, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের লক্ষ্যে ৯৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই ও ডিজাইন প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে এক্সপ্রেসওয়ে না হওয়ায় এ অর্থ গচ্চা যাচ্ছে। তবে এজন্য গৃহীত ঋণ আগামী ২৪ বছরে পরিশোধ করতে হবে।
সূত্র জানায়, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা প্রণয়ন করে। তবে রুট চূড়ান্তের পর তা নির্মাণের জন্য তদবির শুরু করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। যদিও এত বড় অবকাঠামো নির্মাণের কোনো ধরনের দক্ষতা বা প্রয়োজনীয় জনবল নেই সংস্থাটির। পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড ট্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। তারাও এক্সপ্রেসওয়ের বিষয়ে আপত্তি তোলে। এতে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। এর পরিবর্তে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড রেললাইন নির্মাণের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হয়েছে।
যদিও হাইস্পিড ট্রেন বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, হাইস্পিড ট্রেন নির্মাণে খরচ পড়বে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা। এছাড়া এটি পরিচালনা ব্যয়ও অনেক বেশি। হাইস্পিড ট্রেনে ভাড়া পড়বে অনেক বেশি। আবার হাইস্পিড ট্রেন যাত্রীদের সব ধরনের চাহিদা মেটাতেও সক্ষম নয়; কারণ এ ট্রেন পণ্য পরিবহনেও কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। ফলে হাইস্পিড ট্রেন কখনোই এক্সপ্রেসওয়ের বিকল্প হতে পারে না। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. শামছুল হক বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক রুট। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য তাই এ রুটে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা জরুরি ছিল। কারণ সারাবিশ্বেই এক্সপ্রেসওয়ের ধারণা এসেছে ব্যবসা-বাণিজ্যকে ফ্যাসিলিটেট করার জন্য। গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে যাচ্ছে সরকার। তাই এখনই সময় দেশের সড়ক অবকাঠামোকে প্রস্তুত করে নেয়ার।
তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এক্সপ্রেসওয়ে। কারণ রেলের একটি সীমাবদ্ধতা হলো, এটি স্টেশনভিত্তিক ব্যবস্থা। এতে যাত্রীরা একটি নির্দিষ্ট স্টেশনে থেকে ওঠানামা করতে পারেন। কিন্তু যেকোনো স্থানে যাওয়ার জন্য সড়ক হলো আদর্শ ব্যবস্থা। আবার পণ্য পরিবহনসহ যাত্রীদের যে কোনো ধরনের চাহিদা পূরণে সড়ক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে হয়।
জানা গেছে, পিপিপির ভিত্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণে পৃৃথক প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) চূড়ান্ত করা হয়েছিল। ২০২২ সালে ‘সাপোর্ট টু এক্সপ্রেসওয়ে’ প্রকল্পটি শেষ হলে মূল নির্মাণকাজ শুরুর কথা ছিল। এক্ষেত্রে পিপিপির ভিত্তিতে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে গ্যারান্টার হতে চেয়েছিল এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংক।
বিদ্যমান মহাসড়কের পাশ দিয়ে এটি নির্মাণের জন্য অ্যালাইনমেন্ট চূড়ান্ত করা হয়। এতে এক্সপ্রেসওয়েটির দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় ২১৮ কিলোমিটার। ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে থাকা কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতুও নির্মাণ করতে হতো ছয় লেনের। এছাড়া সার্ভিস রোড, সাতটি ইন্টারচেঞ্জ, তিনটি সার্ভিস স্টেশন, ৬৪টি ওভারপাস, ৪৪টি ভেহিকল আন্ডারপাস, চারটি মাঝারি সেতু ও ২৮টি ছোট সেতু নির্মাণ করতে হতো। এজন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৮ হাজার ১৮৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সে অনুপাতে টোলের হার ও ভিজিএফ (ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ড) চূড়ান্ত করা হয়। ২০১৮ সালের ১৫ মে প্রকল্পটির জন্য ভিজিএফ প্রদানে নীতিগত অনুমোদন দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।