Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক ইউনিয়নেই ১৮ ইটভাটা

মো. সম্রাট হোসাইন, পঞ্চগড় থেকে | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

পঞ্চগড়ে একটি ইউনিয়নে ১৮টিসহ জেলায় আইন অমান্য করে চলছে অর্ধশত ইটভাটা। এসব অবৈধ ইটভাটার ফলে বায়ু দূষণের কারণে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও। চরম ঝুঁকির মুখে পড়ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও জনস্বাস্থ্য।

স্থানীয়রা জানান, ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও গ্যাসের কারণে এলাকার পরিবেশ দূষণ ও ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত চাষিরা ফসল পুড়ে যাওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন। মৌসুমের আম-লিচুসহ ফলের গাছে ফল নেই। তারা আশঙ্কা করছে এভাবে ভাটার কার্যক্রম চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছর পরেই জমিতে কোনো চাষ করা যাবে না।

এ ব্যাপারে পঞ্চগড়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, দন্ডপাল ইউনিয়নে ১৮টি ইটভাটাসহ জেলায় অর্ধশতরও বেশি অবৈধ ইটভাটা থাকলেও জেলা প্রশাসনের কাছে তথ্য রয়েছে মাত্র ২৬টির। দুই-একটির পরিবেশগত ছাড়পত্র থাকলেও বাকি সবই চলে প্রশাসনকে উৎকোচ দিয়ে। আবহাওয়া ভালো থাকলে একেকটি ভাটা ৩ থেকে ৫ বার ইট উৎপাদন করে। প্রতিবার ৫ লাখ থেকে ৮ লাখ ইট তৈরি হয়। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস, হাট-বাজার ও বসতবাড়ির আশেপাশেই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা। কিন্তু জেলা প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার। বছরে দুই একটির বিরুদ্ধে অভিযান করলেও অজানা কারণে থেমে যায় পরবর্তী কার্যক্রম।

ইটভাটার কতৃপক্ষরা জানিয়েছেন, লাইসেন্স করতে আমরা আগ্রহী কিন্তু হচ্ছে না। তাদের দাবি, পরিবেশের আইনকে শিথিল করে ছাড়পত্র দেয়া। কাগজপত্র ছাড়া অবৈধ ইটভাটা কিভাবে চলছে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, প্রতি বছর ভাটায় আগুন দেয়ার আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দিতে হয় ৭৫ হাজার টাকা। এছাড়াও প্রতি ভাটায় ভ্যাট দিতে হয় বছরে সাড়ে ৪ লাখ টাকা।

দন্ডপাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামেদুল ইসলাম জানান, ইউনিয়নে গড়ে ওঠা ইটভাটা কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি করছে। কৃষককে বুঝানো হচ্ছে তারা যেন মাটি বিক্রি না করে। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক বছর পর ইউনিয়নের কৃষি জমি পুকুরে পরিণত হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা শাখার সদস্য সচিব অ্যাড. জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, আইনকে তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা পরিবেশসহ কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি করছে। প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি এসব ভাটা স্থাপনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার।
জেলা প্রশাসক ডা. সাবিনা ইয়াসমিন জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে ভাটা মালিকদের অবগত করা আছে তারা যেন জিগজ্যাগ ভাটা গড়ে তোলে। এবং মালিকদের ডেকে লাইসেন্স করার জন্য উৎসাহিত করা হয়। আর যেগুলো ইটভাটা অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ