পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারকে নানা ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। গত ২৯ মার্চ এ সংক্রান্ত জারি করা ১৮ দফা নির্দেশনার মধ্যে একটি ছিল গণপরিবহন চলবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে। আর তার জন্য যাত্রীদের দিতে হবে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া। গতকাল বুধবার সকাল থেকে দু’সপ্তাহের জন্য কার্যকর হয়েছে নতুন এই নিয়ম।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আসাদগেট, জিগাতলা, ধানমন্ডি, কলাবাগান, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নীলক্ষেত, আজিমপুর, চানখারপুল, যাত্রাবাড়ীসহ সহ আশপাশের এলাকা ঘুরে বাসগুলোকে নির্দেশনা মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়েই চলতে দেখা গেছে। তবে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাস না পাওয়ার বিড়ম্বনা। কোনো কোনো বাসে আবার ৬০ শতাংশের পরিবর্তে ১০০ শতাংশ বেশি ভাড়া নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে বাস যাত্রীদের তর্ক-বিতর্ক লেগেই ছিল। সব মিলে প্রথম দিনে চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। ভুক্তভোগিরা বলেছেন, মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ না করে হঠাৎ করে বাসের আসন খালি রাখার নিয়ম নিয়ম চালু করায় বিশৃঙ্খলা বেড়েছে। সকালে অফিস সময় বাস না পেয়ে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। যা গত বছরও হয়নি।
কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকালের দিকে অফিসমুখী মানুষজন অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারেননি অনেকে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা ইছমত আরা নামে একজন বলেন, বাস আসামাত্রই সবাই হুড়োহুড়ি করে একটি বা দুইটি ফাঁকা সিটে উঠে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা অনেক নারী চাকরিজীবী অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো গাড়িতে উঠতে পারছি না।
আরেক যাত্রী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, আজ প্রথম দিন হওয়াতে খুব ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। এমন সংকট তৈরি হবে তা হয়তো অনেকেই ভাবতে পারেননি। চলাচল নিয়ন্ত্রণ না করে এমন নিয়ম চালু করা ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, কিছু কিছু মানুষ আছে যারা কোনো কাজ ছাড়াই বাসা থেকে বের হয়। মতিঝিল, গুলশান, বনানী, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় আড্ডা দিয়ে বাসায় ফেরে। এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে কাজের জন্য যারা বের হচ্ছেন তাদের কষ্ট লাঘব হবে না।
আবার যাত্রীদের কাছ থেকেও বাড়তি ভাড়া আদায়ে অনেক ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে পরিবহন শ্রমিকদের। বিকাশ পরিবহনের কন্ডাক্টর আবু বক্কর বলেন, অনেক যাত্রীই অতিরিক্ত ভাড়া দিতে চাচ্ছেন না। আমাদের এখানে কী করার আছে? সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। একদিকে যাত্রীরা বাড়তি ভাড়া দিতে চাচ্ছেন না, অন্যদিকে আমরা অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করলে পুলিশের কাছে জরিমানা গুনতে হচ্ছে।
একই ধরনের অভিযোগ ঠিকানা পরিবহনের কন্ডাক্টর শহীদুল ইসলামেরও। তিনি বললেন, বাড়তি ভাড়া আদায় করতে গিয়েই বিড়ম্বনার সৃষ্টি হচ্ছে। কোনো কোনো যাত্রী বলছেন বাড়তি ভাড়া দেব না, তুমি অতিরিক্ত যাত্রী উঠাও। আর অন্যদিকে বাড়তি যাত্রী পরিবহন করলে আমাদের জরিমানার ভয় থাকছে। আজিমপুরে দায়িত্ব পালনরত ডিএমপির ট্রাফিক সার্জেন্ট মোহাম্মদ আলী বলেন, গণপরিবহনগুলোর যাত্রী সংখ্যার দিকে আমরা নজর রাখছি। বাড়তি ভাড়া নিয়ে বিড়ম্বনার কোনো অভিযোগ আমরা এখনও পাইনি।
মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে গুলিস্তান থেকে শনিরআখড়ার বাস ভাড়া ১৫ টাকা। ৬০ শতাংশ বাড়লে সেই ভাড়া দাঁড়ায় ২৪ টাকা। কিন্তু যাত্রীদের কাছে থেকে নেয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। অর্থাৎ এই রুটে বাস ভাড়া দ্বিগুণ হয়েছে। এ নিয়ে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সকালে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালিতে শত শত যাত্রীকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। মমিন নামে এক যাত্রী বলেন, আমার সাথে আমার স্ত্রী আছে। যাত্রীর তুলনায় বাস কম। এ কারণে একটা বাস আসলেই সবাই হুড়োহুড়ি করে উঠছে। নারী যাত্রীরা তাতে সুযোগই পাচ্ছে না। তিনি বলেন, আমি একা হলে ঠেলাঠেলি করে হয়তো উঠতে পারতাম। কিন্তু স্ত্রী থাকায় তা পারছি না। তানিয়া ইসলাম নামে একজন বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, এমন অরাজকতা আগে কখনও দেখিনি। এমনকি গত বছরও এমন ভোগান্তি হয়নি। সরকারের উচিত ছিল মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রনে কঠোর হয়ে তারপর এ নিয়ম চালু করা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।