পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি, হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান, ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির সাবেক মহাসচিব ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস (৭৪) আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৪ টায় রাজধানী ঢাকার মহাখালীস্থ শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজিউন।
মুফতি ওয়াক্কাসের ইন্তেকালের খবরটি নিশ্চিত করেছেন রাজধানীর গুলিস্তান পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতিব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ৪ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমের নামাজে জানাজা আজ বাদ মাগরিব যশোরের মনিরামপুরস্থ তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইমদাদিয়া মাদানীনগর মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন মরহুমের বড় ছাহেবজাদা মাওলানা সুহাইল আহমদ। জানাজায় লাখো মুসল্লির ঢল নামে। মাদরাসা মসজিদ সংলগ্ন স্থানে মরহুমের লাশ দাফন করা হয়েছে।
মরহুমের নামাজে জানাজায় বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র সহসভাপতি শাইখুল হাদিক ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, সারাদেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরামসহ বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন। মরহুম মুফতি ওয়াক্কাসের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ ও সহমর্মিতা জানাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, আওয়ামী লীগ, বিএনপির নেতা-কর্মী, উপজেলা চেয়ারম্যান, যশোর, বরিশাল, খুলনা অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম গতকাল বিকেলে মনিরামপুরে তার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসায় জড়ো হন।
মুফতি ওয়াক্কাস যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার বিজয়রামপুর গ্রামে ১৯৪৮ সালের ১৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। মরহুম মুফতি ওয়াক্কাস তিন-তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। একবার ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও হুইপের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দেওবন্দী ধারার আলেম ও মুফতি। হেফাজতে ইসলামের শীর্ষস্থানীয় যে কয়জন নেতা কারাবরণ করেছেন তিনি তাদের অন্যতম। মরহুম মুফতি ওয়াক্কাসের ইন্তেকালে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ এবং তার রূহের মাগফিরাত কামনা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদন জ্ঞাপন করেছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, মরহুম মুফতি ওয়াক্কাস একজন সাহসী অভিভাবক, বিদগ্ধ শায়খুল হাদিস ও শিক্ষাবিদ ছিলেন। মেধাবী, সৎ, স্পষ্টভাষী এবং অত্যন্ত আশাবাদী একজন মানুষ ছিলেন। রাজনৈতিক বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী মুফতী মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের ইন্তেকালে দেশবাসী একজন বরেণ্য আলেমেদ্বীন ও রাজনীতিবিদকে হারালো। তিনি দ্বীন ও ইসলামের বহুমুখি খেদমত আঞ্জাম দিয়ে গেছেন। এমপি হিসেবে তিনি ছিলেন সব ধরনের লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে। তার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনে রয়েছে তরুণ প্রজন্মের জন্য শিক্ষণীয় অনেক কিছু। শিক্ষাজীবনে তিনি যে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তার রীতিমতো বিস্ময়কর। মহান রব্বুল আলামীন মরহুমের সকল নেককাজকে কবুল করে জান্নাতের উচুঁ মাকাম দান করুন, আমীন।
মরহুমের ইন্তেকালে যেসব নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তারা হচ্ছেন, বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই, নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই ও মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের মধুপুর পীর সাহেব আল্লামা আব্দুল হামিদ, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর সভাপতি ও কওমি মাদরাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ অথরিটি আল হাইয়াতুল উলইয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান ও বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর শায়খুল হাদিস আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী ও মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী ও মহাসচিব মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমীর মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজি ও মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র সহসভাপতি শাইখুল হাদিস মাওলানা ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াতের সভাপতি ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূরুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল্লামা শায়খ যিয়া উদ্দীন ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান, গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মোহতামিম ও খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশ এর আমির আল্লামা মুফতি রুহুল আমিন, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফারুক রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী ও মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মাওলানা মুজিবুর রহমান ও নির্বাহী সভাপতি মাওলানা এ কে এম আশরাফুল হক, বাতিল প্রতিরোধ পরিষদের সভাপতি হাজী জালাল উদ্দিন বকুল, নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি আলহাজ মাওলানা আব্দুর রশিদ মজুমদার ও মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ আব্দুল কাইয়ূম, ইসলামী ঐক্য জোটের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরী সভাপতি মাওলানা ইলিয়াস আতহারী ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোসেন আনছারী, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি হাফেজ জাকির বিল্লাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।