ব্যর্থতার ভিতে গড়ে তুলতে হবে সাফল্যের সুউচ্চ মিনার
আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্বাধীনতা দিবসের ক্রোড়পত্রে প্রকাশের জন্যে দৈনিক ইনকিলাবের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে
সকলের অবদানে সকলের জন্য স্বাধীনতা
মোবায়েদুর রহমান
একে তো স্বাধীনতা দিবস। তার ওপর এ বছর ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। সুতরাং এবার এই দিবসটি হবে সার্বজনীন, সেটাই সকলের প্রত্যাশা। কিন্তু সেই সার্বজনীনতার মাঝেও কোথায় যেন ফাঁক দেখা যাচ্ছে। যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, অথবা যারা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম বা দ্বিতীয় প্রজন্ম তাদের মাঝেও শোনা যাচ্ছে বেদনার এক অস্থির অনুরনন। বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবাসী সরকার হয়েছে, মেহেরপুরের আম্রকানন হয়েছে মুজিব নগর। নয় মাস ধরে যে যুদ্ধ হয়েছে, সেটিও হয়েছে শেখ মুজিবের নামে। কিন্তু শেখ মুজিবের শারিরীক অনুপস্থিতিতে যারা মুক্তিযুদ্ধ অর্গানাইজ করলেন, পাকিস্তান আর্মির সাথে সম্মুখ সমরে অবতীর্ন হলেন, চালালেন প্রবাসী সরকার, তাদের কারো কারো মনে অথবা তাদের প্রজন্মের কারো কারো মনে অপ্রাপ্তি অথবা স্বীকৃতির অভাবের মর্ম বেদনা থাকবে কেন?
আ স ম আব্দুর রব তো সরাসরি যোদ্ধা। তিনি স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনের বিরল সৌভাগ্যের অধিকারী। সেই আ স ম রব এমন প্রজ্জল মূহুর্তে হতাশার হাহাশ্বাস ছাড়েন কেন? আরো বেদনার ব্যাপার হলো এই যে সেই হাহাশ্বাস শেয়ার করেন সোহেল তাজ, যিনি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের কান্ডারী ছিলেন সেই তাজউদ্দিন আহমেদের পুত্র সোহেল তাজ। আ স ম আব্দুর রব এক বিবৃতিতে বলেছেন যে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের ঐতিহাসিক ভ‚মিকা ও অবদান উপেক্ষিত হচ্ছে। যে ঐতিহাসিক মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে তা পরিচালনার কৃতিত্ব প্রবাসী সরকারের। সেই সরকারের অবদানকে অস্বীকার করার অর্থ মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মানিত করা। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা চ‚ড়ান্ত রূপ লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধের এই গৌরবময় অধ্যায়কে আড়ালে রেখে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করা হবে সত্য থেকে বিচ্যুতি এবং লাখো শহীদের আত্মত্যাগের মহিমাকে অমর্যাদা করা। প্রবাসী সরকারের ঐতিহাসিক ভূমিকা জাতির সামনে উপস্থাপনের জন্য জনাব রব ৪ দফা দাবী উত্থাপন করেন।
আ স ম আব্দুর রবের এই বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে ‘দৈনিক মানবজমিনের’ ২৩ জুন অনলাইন সংস্করণে। অন্যদিকে মরহুম তাজউদ্দিন আহমেদের পুত্র সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ তাঁর ফেসবুক পেজে আ স ম রবের বিবৃতি শেয়ার করেছেন। সেই সাথে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেছেন, ‘কি এক হতভাগ্য দেশ, বিচিত্র দেশ, যে দেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও নিজের ইতিহাস জানে না’।
দুই
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই স্বীকৃতি তো সারা বছর ধরে সাড়ম্বরে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আরো কিছু ঘটনা আছে যেগুলি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি। বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবী করেছেন যে ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল ‘ন্যাশনাল কমান্ড ফর লিবারেশন ওয়ার’ গঠিত হয়েছিল। ঐ তারিখে হবিগঞ্জের তেলিয়া পাড়াতে জেনারেল এম এ জি ওসমানী, জেনারেল জিয়াউর রহমান সহ সেক্টর কমান্ডাররা সেখানে বৈঠকে বসেন এবং ঐ কমান্ডগঠন করেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানই একমাত্র সেনা অফিসার, যিনি পাক আর্মি ক্র্যাকডাউনের পর ঘোষণা করেন, ‘উই রিভল্ট’, অর্থাৎ আমরা বিদ্রোহ করলাম। তারপরই সেনা ছাউনিগুলি যুদ্ধের জন্য রেডি হয়ে যায়। ১৯৭১ সালের ৯ মার্চ পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নেওয়ার জন্য ইয়াহিয়া খানের প্রতি আহবান জানান মওলানা ভাসানী।
এগুলোও ইতিহাস। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ছোট বড় সকলেরই কম বেশি কিছু না কিছু অবদান রয়েছে। কর্নেল অলি আহমদ। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য তাঁকে বঙ্গবন্ধুর সরকার বীরবিক্রম খেতাব দিয়েছেন। অলি আহমদও ছিলেন সম্মুখ সমরে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের মার্চ মাসে আমরা তিনজন চিন্তা করি, পাক বাহিনীর হাত থেকে কিভাবে দেশকে বাঁচানো যায়। আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে স্বাধীনতা যুদ্ধের অনুমতি চাই। কিন্তু তিনি দিলেন না। ৭ই মার্চের ভাষণের পরেও তিনি ইয়াহিয়ার সাথে মিটিং করেন। তখনও আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধের অনুমতি পাইনি। আমি, জিয়াউর রহমান সাহেব এবং ওসমানী সাহেব চিন্তা করি, এটাই উপযুক্ত সময়। এই সময়টি আমাদের কাজে লাগাতে হবে। জিয়াউর রহমান সাহেব স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দেন। এবং আমরা জিয়ার নেতৃত্বে বিদ্রোহ করি।’
আমি নিজের কথা বলছি। এপ্রিল মাসে আমি ব্রাহ্মনবাড়িয়া ব্রিজ দিয়ে সীমান্ত পার হই। ত্রিপুরার অভ্যন্তরে যখন ঢুকি তখন রাত হয়ে গেছে। সারাদিনের ক্লান্তি। সাথে ছিল বদিউজ্জামান বড় লস্কর। পরে সে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক হয়। ক্লান্তিতে আমরা খোলা প্রান্তরে উন্মুক্ত আকাশের নীচে ঘুমিয়ে পড়ি। পরদিন আগরতলার কলেজ টিলা ক্যাম্পে আ স ম আব্দুর রব এবং আব্দুস কুদ্দুস খানের সাথে দেখা হয়। কলেজ টিলা ক্যাম্পে অনেক মেয়েকেও অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নিতে দেখেছি। পত্রিকায় একটি ছবি ছাপা হয়েছিল। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আ স ম রব এবং মমতাজ বেগম গেরিলা এ্যাটাক করছেন। এই ধরণের শত শত নয়, হাজার হাজার খন্ড চিত্র রয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের ছেঁড়া সূতাগুলো একসাথে গাঁথতে হবে। অত:পর এসব বীরের স্মৃতিগাথা সুবর্ণজয়ন্তীতে ফলাও করে প্রদর্শন করতে হবে।
তিন
মুক্ত স্বাধীন স্বদেশ ভ‚মিতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি এটিও ধ্রুব তারার মত সত্য যে, তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং কামরুজ্জামান কারার অভ্যন্তরে ঘাতকের হাতে প্রাণ দিয়েছেন। যারা মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় ভ‚মিকা রাখলেন তারা এই স্বাধীন বাংলাদেশে ঘাতকের হাতে প্রাণ দিলেন। সুবর্ণজয়ন্তীতে তদের অবদানকে সোনালী অক্ষরে লিখে রাখতে হবে।
সুবর্ণজয়ন্তীতে আরো কিছু প্রশ্ন এসে যায়, যার উত্তর আজও মেলে না। বাংলাদেশের কয়েকটি পত্রিকা ৭১ এর মার্চের সেই অগ্নিঝরা, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর রোজনামচা প্রতিদিন সংক্ষেপে বর্ণনা করছে। গত ১৪ই মার্চের ডেইলি স্টারের রিপোর্টে দেখা যায় যে জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচীর জনসভায় বক্তব্য রেখেছেন। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন, সেটি হলো, ইয়াহিয়া এবং ভুট্টোর বিবেচনায় ৭০ এর নির্বাচন হয়েছিল গণপরিষদ গঠনের জন্য, যে গণপরিষদ দ্রুততম সময়ে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনা করবে এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। পক্ষান্তরে শেখ মুজিবের দাবী ছিলো অবিলম্বে মার্শাল ল’ প্রত্যাহার এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। একই সাথে শাসনতন্ত্র রচনার কাজও চলতে থাকবে।
নির্বাচনের আগে ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তানে এক ইউনিট ভেঙ্গে দেন। এরপর যে নির্বাচন হয় সেই নির্বাচনে সামগ্রিকভাবে আওয়ামী লীগ সারা পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। আওয়ামী লীগ পশ্চিম পাকিস্তানে একটি আসনও পায়নি। এই পটভ‚মিতে জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচীর জনসভা থেকে বলেন যে, ভবিষ্যৎ সংবিধান প্রশ্নে শেখ মুজিব এবং তিনি যদি একমত না হন এবং সংবিধান রচনার আগেই যদি ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হয় তাহলে শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানে সরকার গঠন করবেন এবং তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে সরকার গঠন করবেন। তার বক্তব্যের সারমর্ম হলো, ইধার হাম উধার তুম।
২১ মার্চ ডেইলি স্টারের শেষ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ঐ রোজনামচায় যা বলা হয় তার বাংলা অনুবাদ, ‘আজ (১৯৭১ এর ২১ মার্চ) শেখ মুজিব এবং তাজউদ্দিনের সাথে এক অনির্ধারিত বৈঠকে তাদেরকে ইয়াহিয়া খান জানান যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা গঠন সম্পর্কে আওয়ামী লীগ এবং সরকারের মধ্যে যে মতৈক্য হয়েছে সেটি তিনি ভুট্টোকে জানিয়েছেন। তার যে অন্তবর্তীকালীন সাংবিধানিক ব্যবস্থার অধীনে মন্ত্রীসভা গঠন করা হবে সেই আলোচনায় ভুট্টোর থাকা প্রয়োজন। মুজিব উত্তরে জানান যে, ভুট্টোকে যদি আলোচনায় রাখতে হয় তাহলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা গঠনের প্রয়োজন নাই। মুজিব বলেন, তার দলের মধ্যে ভুট্টো সম্পর্কে প্রবল বিরূপ মনোভাব রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় ভুট্টোর অন্তর্ভুক্তি অনক্রমনীয় বাধার সৃষ্টি করবে।
এখানে একটি বিরাট প্রশ্ন রয়ে যায়। ডেইলি স্টারের এই রিপোর্ট মোতাবেক স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্ন ওঠে যে, মুজিব এবং ইয়াহিয়ার মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সাংবিধানিক ব্যবস্থা সম্পর্কে যে মতৈক্য সৃষ্টি হয়েছিল সেই ব্যবস্থাটি কি? এই প্রশ্নের উত্তর আজও পাওয়া যায়নি। গত সোমবার ২২ মার্চ ডেইলি স্টারের রিপোর্টে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২২ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইয়াহিয়া খানের সাথে সাক্ষাত করেন। এই বৈঠকে মি. ভুট্টোও উপস্থিত ছিলেন। ভুট্টোর উপস্থিতিতে মুজিব বিরক্ত হন। কারণ তিনি আগেই ইয়াহিয়া খানকে জানিয়েছিলেন যে, ভুট্টোর সাথে সরাসরি আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না। মি. ভুট্টো তার ঞযব মৎবধঃ ঃৎধমবফু গ্রন্থে ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন এভাবে, ‘এরপর শেখ মুজিব প্রেসিডেন্টর দিকে তাকালেন এবং জানতে চাইলেন যে, আওয়ামী লীগ তার কাছে যে সব প্রস্তাব দিয়েছে সেগুলোতে তিনি (প্রেসিডেন্ট) তার চ‚ড়ান্ত সম্মতি দিয়েছেন কিনা। প্রেসিডেন্ট উত্তরে বলেন যে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার জন্যই এই বৈঠকের আয়োজন। উত্তরে শেখ মুজিব বলেন যে, প্রস্তাবগুলি প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হয়েছে। ভুট্টো যদি ঐসব প্রস্তাবে রাজি থাকেন একমাত্র তাহলেই আলোচনা সম্ভব। তার আগে পর্যন্ত এসব আলোচনাকে অনানুষ্ঠানিক বলে গণ্য করতে হবে। যাওয়ার সময় শেখ মুজিব বলেন যে, তিনি খবরের কাগজকে বলবেন যে, তিনি প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাত করেছেন এবং ঘটনাচক্রে সেখানে ভুট্টোও উপস্থিত ছিলেন। প্রেসিডেন্ট উত্তরে বলেন যে, এটি ঠিক নয়। কিন্তু মুজিব তার পয়েন্টে অনড় থাকেন।’
রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুট্টো বলেন যে, প্রেসিডেন্ট এবং শেখ মুজিবের মধ্যে ব্যাপক ভিত্তিতে যে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেটি তার দল পরীক্ষা করছে। তবে তিনি আশ্বাস দেন যে, বর্তমান সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন। এখানেও একটি জিনিস লক্ষ্য করা যায় যে প্রেসিডেন্ট এবং শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে ব্যাপক ভিত্তিতে একটি ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কি সেই ঐক্যমত্য অথবা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবসমূহ কি ছিল সে সম্পর্কে আজও কিচু জানা যায়নি।
গত মঙ্গলবার ২৩ মার্চের ডেইলি স্টারের খবরে বলা হয়েছে যে ঐদিন অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ ভুট্টো সারাদিন তার হোটেল কক্ষে অবস্থান করেন এবং আওয়ামী লীগের যেসব প্রস্তাব সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া একমত হন সেসব প্রস্তাব ভুট্টো এবং তার দল পরীক্ষা করেন। কিন্তু ঐসব প্রস্তাব তারপরেও প্রকাশ করা হয়নি।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ইয়াহিয়া খানের নিকট দাখিলকৃত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রস্তাবসমূহ জনগণকে জানানো উচিৎ বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।
২০০৬ সালের ২৩ মার্চ দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত রিপোর্ট মোতাবেক তার বাস ভবনের সামনে সমবেত মিছিলকারীদের উদ্দেশ্যে শেখ মুজিব বলেন, ‘আর আলোচনা নয়, এবার ঘোষণা চাই। আগামীকালের মধ্যে (২৫ মার্চ) ঘোষণা না হলে বাঙ্গালীরা নিজেদের পথ নিজেরা বেছে নেবে’। গত ২৪ মার্চ বুধবার ডেইলি স্টারের রিপোর্টে বলা হয় যে, শেখ মুজিব পাকিস্তানকে একটি কনফেডারেল রাষ্ট্র করতে চান, ফেডারেল রাষ্ট্র নয়।
ঐ ২৪ ঘন্টা পর অর্থাৎ ২৫ মার্চ কালোরাতে শুরু হয় পাকিস্তান আর্মির ক্র্যাকডাউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।