Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমদানি তালিকা থেকে ভারতকে বাদের আহ্বান

পেঁয়াজের এক পঞ্চমাংশ উৎপাদনই বগুড়া অঞ্চলে

মহসিন রাজু | প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০২১, ৫:৪৬ পিএম

টিসিবি ও কৃষি দফতরের হিসেবে দেশে বার্ষিক চাহিদার কাছাকছি পৌছে গেছে পেঁয়াজের উৎপাদন । অন্যদিকে উৎপাদন পরিসংখ্যান বিশ্লেষন করে দেখা যাচ্ছে পাবনা ,সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট ও বগুড়া জেলাকে নিয়ে গঠিত বগুড়া কৃষি অঞ্চলেই পেঁয়াজ উৎপাদন হয় মোট জাতীয় চাহিদার এক পঞ্চমাংশ ।
বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন বা টিসিবির হাল নাগাদ এক পরিসংখ্যান অনুযায়ি বর্তমানে দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ২৭ লাখ মেট্রিক টন। টিসিবির মতে দেশে বার্ষিক গড় পেঁয়াজের উৎপাদন ১৭ লাখ মেট্রিন টন। ফলে বাকি ১০ / ১১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয় নিকট প্রতিবেশি ভারত থেকে। পচনশীল কৃষি পন্য পেঁয়াজ ভারতে কোন কারনে উৎপাদন বিপর্যয় বা ভারতের রাজনৈতিক ও স্বার্থগত বিবেচনায় বাংলাদেশে রফতানি সাময়িকবাবে বাধাগ্রস্ত হলে দেশে পেঁয়াজ নিয়ে তুলকালাম ঘটে যায়।
এদিকে বগুড়া কৃষি অঞ্চলের এক হিসাবে দেখা যায় , গত ১৯/২০ অর্থবছরে বগুড়া অঞ্চলের ৪ জেলাতে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৯৩৮ মেট্রিক টনের স্থলে ৭ লাখ ৫ হাজার ৮৩৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়েছে। চলতি ২০/২১ অর্থ বছরে বগুড়া কৃষি অঞ্চলের পাবনা জেলায় ৫৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর, সিরাজগঞ্জে ১ হাজার ১২ হেক্টর,জয়পুরহাটে ৮৪৫ হেক্টর এবং বগুড়ায় ৩ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ।
বগুড়া কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড, মাহবুবুর রহমানের ধারণা , আবহাওয়া এখনতক অনুকুলে থাকায় মধ্য এপ্রিল নাগাদ উৎপাদনের চাহিদা অর্জন হয়ে যাবে।
এদিকে বগুড়া কৃষি বিভাগের পেঁয়াজ সংক্রান্ত তথ্য পরিসংখ্যান সঠিক হলে দেখা যাচ্ছে দেশের চাহিদার এক পঞ্চমাংশ পেঁয়াজের উৎপাদনই হচ্ছে বগুড়া কৃষি অঞ্চলে । কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ি উত্তরাঞ্চলীয় জেলা, পাবনা ছাড়াও , কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে চাষ হয় পেঁয়াজের । এর মধ্যে মানে গুনে পাবনা ও ফরিদপুরের পেঁয়াজের মান ভাল ।
পেঁয়াজের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে বগুড়া সৈয়দপুর ও ইশ^রদী , পাবনার , সাঁথিয়া , সুজানগর ও বেড়ার কয়েকজন প্রবীন পেঁয়াজ ব্যাপারীর সাথে কথা বলে জানাগেল , সরকারের কৃষি ও বানিজ্য মন্ত্রনালয় একটু তৎপর হলেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানীর প্রয়োজন হবেনা । কয়েকজন পেঁয়াজ ব্যাপারী জানাল , পাকিস্তানের ২৫ বছরে যখন কৃষির এতটা উন্নতি হয়নি তখনতো ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানীর প্রয়োজন পড়েনি । ওই সময়ে পেঁয়াজের দামেরও তেমন হেরফের ঘটেনি ।
ব্যবসায়ীদের স্মৃতি অনুযায়ি এরশাদের শাসনামলে সর্বপ্রথম পেঁয়াজের সংকট ও উচ্চমুল্য এবং মজুদদারির প্রথা চালু হয় । এরশাদের পতনের পর ভারত থেকে সব নিত্যপণ্যের আমদানি নির্ভরতায় যোগ হয় পেঁয়াজের নাম । গত ১৯ ও ২০ সালে পেঁয়াজের দাম বেড়ে ট্রিপল সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যায় । বগুড়ার পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের মতে সংকটের সময় গত কয়েক বছরে ভারত যে স্বার্থপরতা দেখিয়েছে তাতে আমদানি তালিকা থেকে স্থায়ীভাবেই ভারতকে বাদ রাখা উচিৎ । তাদের মতে দেশী পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আলুর মত কোল্ড চেম্বারে পেঁয়াজ সংরক্ষনের ব্যবস্থা করলে পেঁয়াজ সংকটের স্থায়ী সমাদান হবে ।
সরকারি নির্দেশনায় বগুড়া মশলা গবেষনাগারের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যেই গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উদ্ভাবন এবং পাউডার আকারে পেঁয়াজ সংরক্ষসের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন । গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ নিয়ে গবেষনা নিয়োজিত সিনিয়র সায়েন্টিস্ট মোঃ নুর আলম চৌধুরী জানান, উৎপাদক চাষী পর্যায়ে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়লে দেশে অতিরিক্ত ১০ লাখ মেট্রিক উৎপাদন সম্ভব হবে । তখন আর পেঁয়াজ আামদানি নিয়ে বানিজ্য মন্ত্রনালয়কে চিন্তিত হতে হবেনা ।



 

Show all comments
  • Harunur Rashid ২৬ মার্চ, ২০২১, ১:২৫ এএম says : 0
    This is how you take care of business.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ