Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে টিসিবি’র কার্যক্রম কিছুটা জোরদার দক্ষিণাঞ্চলে

নিম্নবিত্তের সাথে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজনও লাইনে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০২১, ৫:২১ পিএম

রমজানকে সামনে রেখে এবার শবেবরাতের আগে থেকেই নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য সংস্থা-টিসিবি দক্ষিণাঞ্চলে পণ্য বিক্রী কার্যক্রম অবশেষে কিছুটা যোরদার করছে। গত কয়েক মাস ধরে চাল,ডাল,চিনি ভোজ্যতেল আর রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে দক্ষিণাঞ্চলের নি¤œ ও নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে দূর্ভোগের সাথে সংসারে অচলবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এরসাথে রান্নার গ্যাসের অগ্নিমূল্য ভোগান্তি আরো বৃদ্ধি করছে। এ অবস্থায় টিসিবি বরিশাল মহানগরীতে ৫টি পয়েন্টে সিমিতাকারে মুসুর ডাল, চিনি আর ভোজ্যতেল বিক্রী করছে। সাথে বৃহস্পতিবার থেকে ৫টাকা দাম বাড়িয়ে পেয়াঁজ বিক্রীও শুরু করেছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে সয়াবিন তেলও লিটার প্রতি ১০ টাকা দাম বাড়িয়ে ৯০ টাকা করেছে। ১২ টাকার পেয়াজ প্রথমে ১৫ টাকা থেকে এখন ২০ টাকায় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এরপরেও প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত টিসিবি’র পণ্যবাহী মিনি ট্রাকের পেছনে নারী-পুরুষের লম্বা লাইন সাধারন মানুষর সংসারের বাস্তবতার জানান দিচ্ছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহল মহল। বরিশাল মহানগরীর বাইরে অন্য ৫টি জেলা সদরে ২টি করে মিনি ট্রাকে টিসিবি’র পণ্য বিক্রী হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি জেলা সদরের বাইরে ১টি করে উপজেলা সদরেও টিসিবি সিমিতাকারে তার পণ্য বিক্রী শুরু করেছে।
বাজারে পেয়াঁজের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে টিসিবি পুনরায় এ পণ্যটি বিক্রী শুরু করলেও তার প্রভাব পড়তে সময় লাগবে। রমাজানকে সামনে রেখে ছোলা বুট বরিশালের গুদানে পৌছলেও বিক্রী শুরু হচ্ছে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। তবে নিত্যপণ্য মূল্যের উর্ধগতি রোধে রাষ্ট্রীয় এ বাণিজ্য সংস্থাটির কার্যক্রম প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারনের দাবী করেছেন সাধারন মানুষ।
গত প্রায় ৪ মাস ধরে দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে চালের দর উর্ধমুখি প্রবনতার মধ্যেই ডাল, ভোজ্য তেল ও চিনির মূল্য বৃদ্ধিতেও অনেক পরিবারেই নভিশ^াস উঠেছে। এরসাথে রান্নার গ্যাসের দাম প্রায় ২৫ ভাগ বেড়ে এখন হাজার টাকার ওপরে। সামনের রমজানে কিভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে নি¤œ ও নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবারগুতে উদ্বেগ বাড়ছে।
গত একমাসে দক্ষিণাঞ্চলের পাইকারী বাজারে চালের দাম বেড়েছে প্রকারভেদে ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। আগের ৩ মাসেও কেজি প্রতি ৫ টাকা দাম বেড়েছে চালের। ভাল মানের সয়াবিন তেলের লিটার এখন ১৩৫-১৪০ টাকা। চিনির কেজি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছে খুচরা পর্যায়ে ৭২Ñ৭৫ টাকা কেজি। মুগ ডালের কেজি ১৩৫-১৪০টাকা। মুসুর ডাল ৯০ থেকে ১১৫ টাকা। আমদানীকৃত পেয়াঁজের দামও ইতোমধ্যে ৪০ টাকায় পৌছেছে। দেশী পেয়াঁজ আবার ৪৫ টাকার ওপরে। রসুন ও আদার দাম আগের অবস্থানেই ভোক্তাদের ক্রয়সীমার মধ্যে রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বানিজ্য সংস্থা-টিসিবি আমদানীকৃত পেয়াঁজের বোঝা নিয়ে ইতোপূর্বে বিপাকে থাকলেও এতদিন তাদের ভান্ডার চিনি, ডাল ও সয়াবিন তেল শূণ্য হয়ে পড়ায় বিক্রী প্রায় বন্ধ ছিল। তবে সপ্তাহখানেক আগে বরিশাল মহানগরীর বাইরে অন্য ৫টি জেলা একটি করে উপজেলা সদরে ভোজ্য তেল, চিনি ও মুসুর ডাল বিক্রী শুরু করে।
টিসিবি’র দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, রমজানের আগেই তারা পেয়াঁজের পাশাপাশি বাজারে সয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল ও ছোলাবুট বিক্রী কার্যক্রম আরো যোরদার করতে যাচ্ছেন। পাশাপশি ৯০ টাকা কেজিতে খেজুর বিক্রী করা হবে রমজানে। আর এসব পণ্য বিক্রী অব্যাহত থাকবে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এতেকরে এসব নিত্যপণ্যের দাম রমজনে নিয়ন্ত্রনে থাকবে বলে টিসিবি কতৃপক্ষ আশা প্রকাশ করলেও সরকারী এ সিমিত উদ্যোগে কতটা ক্যর্াুকর হবে সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে ওয়াকিবাহাল মহলে। পাশাপাশি ঠিক কবে নাগাদ সরকার টিসিবি’র মাধ্যমে পণ্য বিক্রী কার্যক্রম আরো গনমুখি করবে, তা বলতে পারেন নি কতৃপক্ষ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ