পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ সাত বছর পর আগামী ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশের ব্যবসায়ী মহলে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পুরোনো দুই শিবিরে ভাগ হয়ে নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নেমেছে পোশাক রফতানিকারকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিজিএমইএ। নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে নানামুখী প্রচার-প্রচারণা। প্রায় প্রতিদিনই রাজধানীর নামিদামি হোটেল-রেঁস্তরায় নির্বাচনী বৈঠক করছেন দুটি প্যানেল। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আগামী দু’বছর তৈরি পোশাক শিল্পকে এগিয়ে নিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার কথা বলছেন তারা। আর নতুন নতুন কর্মকৌশল নিয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলারও অঙ্গীকার তাদের।
সূত্র মতে, গত ৪ মার্চ প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর ঘরোয়াভাবে প্রচার শুরু করেছেন ‘ফোরাম’ ও ‘সম্মিলিত পরিষদ’ নামে দুটি প্যানেলের প্রার্থীরা। পাশাপাশি ঘটা করে প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠান করার প্রস্তুতিও চলছে। এবারের নির্বাচনে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সমিতির ৩৫টি পরিচালক পদের জন্য দুই প্যানেলের ৩৫ জন করে মোট ৭০ জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। আর স্বাধীনতা পরিষদের নেতা জাহাঙ্গীর আলম এর আগে পূর্ণ প্যানেল নিয়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও এখন সম্মিলিত পরিষদের সঙ্গে একীভূত হয়ে নির্বাচন করছেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৪ এপ্রিল ঢাকায় হোটেল র্যাডিসন ব্লুতে এবং চট্টগ্রামে বিজিএমইএ’র আঞ্চলিক কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ নির্বাচনের ভোট হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ঢাকা অঞ্চলে ১ হাজার ৮৫৩ জন এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৪৬১ জন ভোটার রয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে বর্তমান সভাপতি ড. রুবানা হকের প্যানেল ‘ফোরামের’ নেতৃত্ব দিচ্ছেন হান্নান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম শামসুদ্দিন মিয়া। রুবানা হক নিজেও তার প্যানেল থেকে নির্বাচনে থাকছেন।
এবিএম শামসুদ্দিন মিয়া বলেন, পোশাক খাতের উন্নয়নে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার শপথ করেছেন ফোরাম মনোনীত সব প্রার্থী। তিনি বলেন, বিজিএমইএ’কে আরো শক্তিশালী করতে অভিজ্ঞ ও তরুণ উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে এবারের প্যানেল গঠন করা হয়েছে, যারা নির্বাচিত হলে যে কোন পরিস্থিতিতে বিজিএমইএ তথা বাংলাদেশের পোশাক খাতকে সমৃদ্ধির পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে। ফোরাম কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ এই করোনা মহামারীর সময় ড. রুবানা হকের মাধ্যমে আপনারা দেখতে পেয়েছেন।
এবিএম শামসুদ্দিন মিয়া বলেন, কেউ কেউ বিজিএমইএ’র পদ পদবি ব্যবহার করে শিল্পের স্বার্থে কাজ না করে মন্ত্রী-এমপি হওয়ার জন্য ব্যস্ত ছিলেন। তারা এখন সম্মিলিত পরিষদে ভিড়েছেন। তিনি বলেন, আমরা সম্পূর্ণ শিল্পের স্বার্থ এবং মালিকদের জন্য প্রয়োজনীয় দর কষাকষিতে থাকতে চাই।
‘ফোরামের’ নেতৃত্ব দেয়া এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, আমাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হককে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ফোন করে যে কোনো সমস্যার কথা বলতে পেরেছেন ভোটাররা। কিন্তু অন্য প্যানেল থেকে নেতা নির্বাচিত হলে সেই সুযোগটি পাওয়া যাবে না বলেই ভোটারদের ধারণা।
সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার ফারুক হাসান বলেন, তারা বিজয়ী হলে নতুন বাজার স¤প্রসারণে উদ্যোগ নেয়া হবে। নতুন বাজারে পোশাক রফতানির জন্যে প্রণোদনা ৪ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ উন্নীত করা হবে। সম্ভাবনাময় নতুন বাজার যেমন- দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, রাশিয়া ল্যাটিন আমেরিকা, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে রোড শো আয়োজন এবং গুরুত্বপূর্ণ মেলাগুলোতে বিজিএমই সদস্যদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় আমাদের পোশাকের শুল্কমুক্ত রফতানি নিশ্চয়তার জন্য কাজ করবে সম্মিলিত পরিষদ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ফারুক হাসান বলেন, সম্মিলিত পরিষদ যখনই ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নিয়েছে তখনই মেম্বারদের, দেশের জন্য, সেক্টরের জন্য অনেকগুলো কাজ করেছে।
এদিকে ‘সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের সংস্কৃতি’ থেকে বেরিয়ে আসার দাবি নিয়ে ২০১৯ সালে ‘স্বাধীনতা পরিষদ’ নামের নতুন প্যানেল গঠন করা ডিজাইন অ্যান্ড সোর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এবার পূর্ণ প্যানেল নিয়ে ত্রিমুখী প্রতিদ্ব›িদ্বতার আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তিনি তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে সমঝোতা করে নিজের প্যানেল নিয়ে সম্মিলিত পরিষদে ভেড়েন।
যদিও এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার মূল দাবিটি ছিল নির্বাচন যেন চলমান থাকে। তাই সম্মিলিত পরিষদের সিনিয়র নেতাদের অনুরোধে ওই প্যানেলের সঙ্গে জোট করে এবার নির্বাচন করছি। এবারের নির্বাচনে স্বাধীনতা পরিষদ থেকে কেবল জাহাঙ্গীর আলমকেই জোটের প্রার্থী হিসাবে রেখেছে সম্মিলিত পরিষদ। তবে অনেক বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম ফোরাম নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গেও সহমত প্রকাশ করেছেন।
পরিচালক পদে ‘ফোরাম’ থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ব্যালট নং-১৭ এমজি নিট ফ্লেয়ারের নাভিদুল হক ইনকিলাবকে বলেন, সকল সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। নির্বাচনে ভোটারদের রায়ের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। তবে পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে সবসময়ই এই শিল্পের সঙ্গে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নাভিদুল হক।
সূত্র মতে, এর আগে ২০১৯ সালে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে ৩৫টি পদের সবগুলোতে বিজয়ী হয়েছিল। তারও আগে ২০১৩ সালে এ দুই প্যানেল প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে বিজিএমইএ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। সেবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম সম্মিলিত পরিষদ থেকে বিজিএমইএ সভাপতি হয়েছিলেন। দুই বছর পর সমঝোতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব নির্বাচনে যায় দুই প্যানেল। সম্মিলিত পরিষদের সিদ্দিকুর রহমানকে বিজিএমইএ’র সভাপতি করে নতুন পরিষদ গঠন করা হয়।
এরপর নানা কারণে কমিটির মেয়াদ দুই বছর থেকে তিন দফায় বাড়িয়ে চার বছর (৪৩ মাস) করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে আবারও সমঝোতার নেতৃত্ব আনার চেষ্টা করা হলেও শেষ মুহূর্তে স্বাধীনতা পরিষদের উত্থানে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়।
চূড়ান্ত প্রার্থী যারা
ফোরাম : এ প্যানেলে হান্নান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম শামসুদ্দিন মিয়া প্যানেল লিডার হিসাবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। ঢাকা অঞ্চলে এমজি শার্টেক্সের রুবানা হক, হান্নান ফ্যাশনসের এ বি এম সামসুদ্দিন, এজে ফ্যাশনসের আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, আমিতি ডিজাইনের শিহাবুদৌজা চৌধুরী, অনন্ত গার্মেন্টের এনামুল হক খান বাবু, দেশ গার্মেন্টের ভিদিয়া অমৃত খান, দিগন্ত সোয়েটারের কামাল উদ্দিন, ড্রেসম্যান গার্মেন্ট মাশিদ রুম্মান আবদুল্লাহ, দুলাল ব্রাদার্সের এম এ রহিম ফিরোজ, এভিটেক্স ড্রেস শার্ট শাহ রায়িদ চৌধুরী, ফেব্রিকা নিট কমপোজিটের মিজানুর রহমান, ফ্যাশন ডটকমের খান মনিরুল আলম, ফ্যান্ডস স্ট্যাইলওয়্যারের এ এম মাহমুদুর রহমান, ইমপ্রেস নিউটেক্স কমপোজিট টেক্সটাইলের নাফিস উদ দৌলা, কেইলক নিউএজ বাংলাদেশের আসিফ ইব্রাহিম, ম্যাগপাই নিটওয়্যারের মজুমদার আরিফুর রহমান, মানামি ফ্যাশন্সের তাহসিন উদ্দিন খান, এমজি নিট ফ্লেয়ারের নাভিদুল হক, নেক্সাস সোয়েটারের রশীদ আহমেদ হোসাইনি, ওডিশা ফ্যাশন্সের ইকবাল হামিদ কোরাইশী আদনান, রাইজিট অ্যাপারেলসের মাহমুদ হাসান খান বাবু, সফটটেক্স সোয়েটারের রেজওয়ান সেলিম, সুরমা গার্মেন্টের ফয়সাল সামাদ, ট্রাউজার লাইনের রানা লায়লা হাফিজ, ওয়েগা ফ্যাশন সুয়েটারের মেজবাহ উদ্দিন আলী ও জিসাস ফ্যাশন্সের নজরুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে অ্যারিয়ন ড্রেসের মোহাম্মদ আতিক, চিটাগং এশিয়ান অ্যাপারেলসের মোহাম্মদ আবদুস সালাম, ক্লিপটন অ্যাপারেলসের এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, ম্যাগি অ্যান্ড লিজ অ্যাপারেলসের এনামুল আজিজ চৌধুরী, মেলো ফ্যাশনসের শরীফ উল্লাহ, রিজি অ্যাপারেলসের মির্জা মো. আকবর আলী চৌধুরী, রেন্সকো সোয়েটারের মোহাম্মদ দিদারুল আলম, দ্য নিড অ্যাপারেলসের রিয়াজ ওয়েজ ও উল ওয়ার্ল্ডের খন্দকার বেলায়েত হোসেন ফোরাম থেকে নির্বাচন করছেন।
সম্মিলিত পরিষদ : জায়ান্ট টেক্সটাইলের ফারুক হাসান প্যানেল লিডার হিসাবে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। ঢাকা অঞ্চলে অ্যাডামস অ্যাপারেলসের শহিদুল হক মুকুল, ব্রাদার্স ফ্যাশন্সের আবদুল্লাহ হিল রাকিব, ক্লাসিক ফ্যাশনসের শহীদউল্লাহ আজিম, ক্রনি ফ্যাশনসের নীরা হোসনে আরা, ডেনিম এক্সপার্টের মহিউদ্দিন রুবেল, ডিজাইন অ্যান্ড সোর্সের জাহাঙ্গীর আলম, ডিজাইন টেক্সট নিটওয়্য্যারের খন্দকার রফিকুল ইসলাম, এনভয় ডিজাইনের শিরিন সালাম ঐশী, এনভয় ফ্যাশন্সের তানভীর আহমেদ, হামিদ সোয়েটারের ইন্তেখাবুল হামিদ অপু, জে এফ কে ফ্যাশন্সের কফিল উদ্দিন আহমেদ, লায়লা স্টাইলের ইমরানুর রহমান, মেইকস গার্মেন্টের আশিকুর রহমান তুহিন, মিসামি গার্মেন্টের মিরান আলী, নিপা ফ্যাশন্সের খসরু চৌধুরী, পশমী সোয়েটারের মশিউল আজম সজল, সাদমা ফ্যাশন্স ওয়্যারের নাছির উদ্দিন, সেহা ডিজাইনের এস এম মান্নান কচি, স্পারো অ্যাপারেলসের শোভন ইসলাম, তরকা ফ্যাশন্সের মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, টিআরজেড গার্মেন্টের হারুন অর রশীদ, তুসুকা ফ্যাশন্সের আরশাদ জামাল দিপু, উর্মি গার্মেন্টের আসিফ আশরাফ, ভিনটেজ ডেনিমের সাজ্জাদুর রহমান মৃধা শিপন ও ইয়াং ফরেভারের রাজীব চৌধুরী।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে এএসআর অ্যাপারেলের এ এম শফিউল করিম খোকন, অ্যামেকো ফেব্রিক্সের এম আহসানুল হক, ফোর এইচ অ্যাপারেলের মো. হাসান জেকি, এইচকেসি অ্যাপারেলের রকিবুল আলম চৌধুরী, লেগেসি ফ্যাশন্সের তানভীর হাবিব, এনএলজেড ফ্যাশনসের মোহাম্মদ মেরাজ-ই- মোস্তফা, আরএসবি ইন্ড্রাস্ট্রিয়ালের অঞ্জন শেখর দাশ, টপ স্টার ফ্যাশনসের আবসার হোসেন ও ওয়েল ডিজাইনার্সের সৈয়দ নজরুল ইসলাম এ প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।