Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশে লক্ষাধিক হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম


দেশে আমনের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে ১ লাখ টন বেশি হয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অতিক্রম করার পাশাপাশি গত খরিপ-১ মৌসুমে আউশের উৎপাদনও ছিল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। ফলে দেশে খাদ্য ঘাটতির প্রচারণাকে মানতে নারাজ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) দায়িত্বশীলরা। তবে এ ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে দক্ষিণাঞ্চলে আমনের উৎপাদন ঘাটতি হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১.৭০ লাখ টন। যা প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলে পরিমানটা ৭ লাখ টনেরও নিচে নামিয়ে আনতে পারে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আমনই এখনো প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল। যদিও জাতীয়ভাবে বোরো ইতোমধ্যে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসলের স্থান করে নিয়েছে। তবে আউশের আবাদ ও ফলন ভালো হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে আমনের ঘাটতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে।
সদ্য সমাপ্ত খরিপ-২ মৌসুমে দেশের প্রায় ৫৬ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের মাধ্যমে সব ধরনের ক্ষতি বাদ দিয়ে প্রায় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৩৮ হাজার টন চাল উৎপাদন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবার আমন উৎপাদন লক্ষ্য অর্জন সম্ভব না হলেও আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১ লাখ টন বেশি চাল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ডিএই’র দায়িত্বশীল সূত্র। দু’টি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দক্ষিণাঞ্চলেই ১৭ লাখ ৯৪ হাজার টনের স্থলে উৎপাদন ১৬ লাখ ২৬ হাজার টনে হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু দেশের অন্যান্য এলাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদনের কারণে সব ঘাটতি পুষিয়ে গত বছরের চেয়ে ১ লাখ টন বেশি চাল পাওয়া গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর যৌথ পর্যালোচনায় এ হিসেব চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে গত খরিপ-১ মৌসুমে দেশে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত জমিতে আউশ আবাদের মাধ্যমে প্রায় ৩৩ লাখ টন চাল পাওয়া গেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২ লাখ টন বেশি ছিল বলে জানিয়েছে ডিএই’র মনিটরিং সেল।
তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমনের লক্ষ্য অর্জনে পেছনে থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই দেশে বোরা আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করে কৃষি মন্ত্রণালয়। গত বছরের ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৪৭ হেক্টরের স্থলে ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার ৭১৬ হেক্টরে আবাদ লক্ষ্য স্থির ছিল। আর গত বছর বোরো চালের উৎপাদন ২ কোটি ১ লাখ ৮১৩ টনের স্থলে এবার ২ কোটি ৫ লাখ ৩১ হাজার ৪৭০ টনে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু গত ১৫ মার্চ দেশের এ প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আবাদের চ‚ড়ান্ত সীমা অতিক্রম করে কৃষকরা আবাদ করেছেন ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টরে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে লক্ষাধিক হেক্টর বেশি। বোরোর হাইব্রিড আবাদের পরিমাণ গত বছরের চেয়ে প্রায় ১ লাখ হেক্টরে বৃদ্ধি পেয়ে ১২ লাখ ১৩ হাজার ৪৫০ হেক্টরে উন্নীত হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএই। এখন পর্যন্ত সার সরবরাহ ও সেচ স্বাভাবিক রয়েছে। লক্ষ্য অনুযায়ী ২ কোটি ৫ লাখ টন চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফসল পাবার ব্যাপারে আশাবাদী ডিএই।
এদিকে চলতি রবি মৌসুমে দেশে প্রায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার ২৯৬ হেক্টরে গমের আবাদ হয়েছে। গত বছর চেয়ে আবাদ প্রায় ৪ হাজার হেক্টর কম হলেও ১২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫৩ টনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ব্যাপার আশাবাদী ডিএই। গত বছর দেশে গমের উৎপাদন ছিল ১২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩০ টনের মত।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ