বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’এর পরে ভাদ্রের বড় অমাবশ্যায় সাগর থেকে ধেয়ে আসা প্রবল জোয়ার আর উজানের ঢলের সাথে অতি বর্ষনের পরেও দেশে আমনের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে ১ লাখ টন বেশী হয়েছে। পাশাপাশি চলতি রবি মৌশুমে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অতিক্রম করার পাশাপাশি বিগত খরিপ-১ মৌসুমে আউশের উৎপাদনও ছিল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী। ফলে দেশে খাদ্য ঘাটতির প্রচারনাকে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর-ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল মানতে নারাজ। তবে এ ব্যপারে সরকারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার পর্যবেক্ষকগন।
আম্পান আর ভাদ্রের অমাবশ্যার মত প্রকৃতিক দূর্যোগে দক্ষিণাঞ্চলে আমনের উৎপাদন ঘাটতি হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১.৭০ লাখ টন। যা প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলে পরিমানটা ৭ লাখ টনেরও নিচে নামিয়ে আনতে পারে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আমনই এখনো প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল। যদিও জাতীয়ভাবে বোরো ইতোমধ্যে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসলের স্থান করে নিয়েছে। তবে অউশের আবাদ ও ফলন ভাল হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে আমনের ঘাটতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে। দেশের খাদ্য পরিস্থিতির জন্যও এবার আউশের উৎপাদন যথেষ্ঠ সহায়ক ভ’মিকা পালন করছে।
সদ্য সমাপ্ত খরিপ-২ মৌসুমে দেশের প্রায় ৫৬ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের মাধ্যমে সব ধরনের ক্ষতি বাদ দিয়ে প্রায় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৩৮ জাজার টন চাল উৎপাদন হয়েছে। আম্পান আর ভাদ্রের অতিবর্ষন ও প্লাবনের কারনে এবার আমন ‘উৎপাদন লক্ষ্য’ অর্জন সম্ভব না হলেও আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১ লাখ টন বেশী চাল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল। দুটি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে দক্ষিণাঞ্চলেই ১৭ লাখ ৯৪ হাজার টনের স্থলে উৎপাদন ১৬ লাখ ২৬ হাজার টনে হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু দেশের অন্যান্য এলাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী উৎপাদনের কারনে সব ঘাটতি পুষিয়ে গত বছরের চেয়ে ১ লাখ টন বেশী চাল পওয়া গেছে বিগত আমন মৌসুমে। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ও পারিসংখ্যান ব্যুরোর যৌথ পর্যালোচনায় এ হিসেব চুড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে বিগত ‘খরিপ-১’ মৌসুমে দেশে লক্ষমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত জমিতে আউশ আবাদের মাধ্যমে প্রায় ৩৩ লাখ টন চাল পাওয়া গেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২ লাখ টন বেশী ছিল বলে জানিয়েছে ডিএই’র মনিটরিং সেল।
তবে প্রকৃতিক দূর্যোগে আমনের লক্ষ্য অর্জনে পেছনে থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই দেশে বোরা আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করে কৃষি মন্Í্রনালয়। গত বছরের ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৪৭ হেক্টরের স্থলে ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার ৭১৬ হেক্টরে আবাদ লক্ষ্য স্থির ছিল। আর গত বছর বোরো চালের উৎপাদন ২ কোটি ১ লাখ ৮১৩ টনের স্থলে এবার ২ কোটি ৫ লাখ ৩১ হাজার ৪৭০ টনে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারন করা হয়। কিন্তু গত ১৫ মার্চ দেশের এ প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আবাদের চুড়ান্ত সীমা অতিক্রম করে কৃষি যোদ্ধাগন প্রকৃত আবাদ করেছেন ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টরে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে লক্ষাধীক হেক্টর বেশী।
এখন পর্যন্ত সার সরবারহ স্বাভাবিক থাকার পাশাপাশি সেচ ব্যবস্থাও নির্বিঘœ রয়েছে। কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ দেশের প্রধান এ দানাদার খাাদ্য ফসলের জন্য হুমকি সৃষ্টি না করায় লক্ষ্য অনুযায়ী ২ কোটি ৫ লাখ টন চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশী ফসল পাবার ব্যাপারে আশাবাদী ডিএই। বৃহত্বর দক্ষিণাঞ্চলে ১১টি জেলায় ৩ লাখ ১০ ৮শ হেক্টরে আবাদ লক্ষমাত্রার বিপরিতে প্রায় ৩লাখ ৩৬ হাজার হেক্টরে বোরো আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলাতেই লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১২১% জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়েছে। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫টি জেলায় আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রা ১০১.৭০% জমিতে। ফলে এ অঞ্চলে যে প্রায় ১৪ লাখ টন বোরো চাল উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে তা ১৫ লাখ টনে উন্নীত হবার আশা দেখছেন ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল।
এদিকে চলতি রবি মৌসুমে দেশে প্রায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার ২৯৬ হেক্টরে গমের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। গত বছর চেয়ে আবাদ প্রায় ৪ হাজার হেক্টর কম হলেও ১২ লাখ ৯৮ ৭৫৩ টনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ব্যাপার আশাবাদী ডিএই কতৃপক্ষ। গত বছর দেশে গমের উৎপাদন ছিল ১২ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩০ টনের মত। কারন এবছর দেশে গমের ফলন ভাল হবার মত প্রকৃতিক পরিবেশ বিদ্যমান রয়েছে। তবে অত্যন্ত সম্ভবনাময় এ ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির যথেষ্ঠ সুযোগ থাকলেও তা এখন পর্যন্ত যথাযথভাবে কাজে না লাগানোর অভিযোগ রয়েছে ডিএই.র মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের বিরুদ্ধে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।