Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা

উদ্বেগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

দেশে একদিকে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে। অন্যদিকে কমছে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা। আর প্রতিদিনই কমছে টিকার মজুদ। এদিকে বাংলাদেশের সময়মতো টিকা পাওয়া নিয়ে এক ধরণের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কখন টিকার নতুন চালান সিরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশকে দিবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কেউই। অথচ প্রতিদিনই চাহিদা বাড়ছে টিকা গ্রহণকারীদের। এমনকি ফ্রন্টলাইনার হিসেবে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেও টিকা প্রদাণের তারিখ না পাওয়ায় অনেকের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আর তাই টিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকালও ইনকিলাবকে টিকা পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফর করবেন ২৬ মার্চ। আশাকরছি তিনি আসার আগেই আমরা টিকা পাবো।

সূত্র মতে, বাংলাদেশ ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সাথে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালের মাধ্যমে তিন কোটি ডোজ টিকা ক্রয়ের চুক্তি করে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ৬ মাসে এই টিকা পাওয়ার কথা। তার ভিত্তিতে গত দুই মাসে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। অথচ চুক্তি অনুযায়ী ওই সময়ে ১ কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার কথা ছিল। সিরামের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার যে পরিমাণ বাংলাদেশকে দেবে বলেছিল, বাস্তবে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি ভারত। পাশাপাশি ভারত সরকারের উপহার হিসেবে বাংলাদেশ ২০ লাখ টিকা পেয়েছে। এখন পর্যন্ত ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৩৭৮ জন মানুষ টিকা নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এদের মধ্যে ৪৮ লাখ ৪০ হাজার ৯৬৯ জন টিকা গ্রহণ করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানুষের মাঝে এখন আগ্রহ যে হারে বাড়ছে, তাতে টিকার যোগানে ঘাটতি হলে চাহিদা সামলানো কঠিন হতে পারে। একই সঙ্গে যারা টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন, তাদের জন্য একই পরিমান দ্বিতীয় ডোজ রেখে দিতে হবে। দ্বিতীয় ডোজ শুরু হচ্ছে আগামী ৭ এপ্রিল। যদিও গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে ৮ এপ্রিল। আর তাই চুক্তি অনুযায়ী সিরাম থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকা না পেলে বাংলাদেশের জন্য টিকা কার্যক্রম নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হবে।

অবশ্য চাহিদা অনুযায়ী টিকা দিতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বিষয়টি তারাও উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, টিকার জোগান অনেকটাই ঝুলে গেছে। এতে করে চলমান টিকাদান কার্যক্রম নিয়েই তারা একরকম হিমশিম খাচ্ছেন। কবে এই টিকা আসবে এটা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউই।

গতকাল রোববার করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন ৮০ হাজার ২২২ জন। যদিও গত শনিবার টিকা গ্রহীতার সংখ্যা ছিল আরও কম ৭২ হজার ৯২৩ জন। যা ছিল টিকা শুরুর পর গত ৪১ দিনে সবচেয়ে কম। তবে এর চেয়ে কম টিকাগ্রহীতা ছিলেন গত ৮ ফেব্রুয়ারি ৪৬ হাজার ৫০৯ জন।

দেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিকে টিকাগ্রহীতার সংখ্যা এক লাখের নিচে থাকলেও দ্বিতীয় দিনের পর থেকে তা বাড়তে থাকে। ১৫ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গড়ে দৈনিক টিকা নিয়েছেন ২ লাখের বেশি মানুষ। ২৩ ফেব্রুয়ারির পর থেকে টিকাগ্রহীতার এ সংখ্যা কিছুটা কমতে শুরু করে। ২৩ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গড়ে দেড় লাখের কিছু বেশি মানুষ টিকা নিয়েছেন। এরপর গত ২৭ তারিখ থেকে এই সংখ্যা অরও কমতে থাকে। চলতি মাসে টিকা গ্রহণের সংখ্যা এক লাখের নিচে নেমে আসে। দেশে এখন পর্যন্ত ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৩৭৮ জন টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৪৮ লাখ ৪০ হাজার ৯৬৯ জন। এর মধ্যে ৩০ লাখ ৪০ হাজার ৫২২ জন পুরুষ ও ১৮ লাখ ৪৪৭ জন নারী। এখন পর্যন্ত টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে সামান্য পাশর্^প্রতিক্রিয়ার তথ্য জানিয়েছেন ৯০৬ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে মাত্র ৬ জনের। এদিকে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার প্রতিদিনই বাড়ছে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ১৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার পরবর্তী চালান কবে আসবে এ বিষয়ে গতকাল এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, ২৬ মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসবেন। আমরা আশা করছি তার সফরের সঙ্গে বা তার পরপরই সেরাম থেকে পরবর্তী চালান পাবো। তবে মার্চের চালান এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেও আসতে পারে বলে জানান তিনি।##



 

Show all comments
  • Md. Alam Munshi ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
    আমরা ২০২০ সালে করোনা টিকা পেয়েছি
    Total Reply(0) Reply
  • M R Abir ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০২ এএম says : 0
    বাংলাদেশকে আপাদত ভারত ভ্যাকসিন দিচ্ছে না। সরাসরি আমদানি না করে হাঙ্গা বসলে যা হয়,তারপর ও শিক্ষা হবে না
    Total Reply(0) Reply
  • তরুন সাকা চৌধুরী ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০৩ এএম says : 0
    দেশের চেয়ে দল বড়। দল থেকে ব‍্যাক্তি। সব থেকে অর্থ বড়, যা অনর্থের মূল।
    Total Reply(0) Reply
  • জাহিদ খান ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০৩ এএম says : 0
    বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়গুলো হলো কুয়ার ব্যাং।
    Total Reply(0) Reply
  • হিমেল ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০৪ এএম says : 0
    So far, there is no contract between two governments. So there is no written confirmation from Indian Govt. I think our Health Ministry officials failed to forecast the situation like this, Authorities could be more proactive to measure the complexity. Our Health Ministry is focusing on the less important part like local supplier selection and import processing which is political influential activities, authority should concentrate on overall monitoring, coordination.
    Total Reply(0) Reply
  • Monir Hossain ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 0
    ওরা কোনদিন কথা রাখেনি।
    Total Reply(0) Reply
  • মুহাম্মদ ইউনুস ২২ মার্চ, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 0
    ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কোভিড-১৯ এর টীকা ২০ লাখ ডোজ উপহারতো গোল্লায় গেলো।পাওনা টীকাই পাচ্ছেনা বাংলাদেশ!! আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের অসভ্যতা আর কত দেখলে বুজব এরা আমাদের কখনোই বন্ধু ছিলনা এরা বন্ধু হতে পারেনা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ