Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উপকূলভাগে দুর্যোগপূর্ণ মৌসুম শুরু হলেও নিরাপদ নৌ যোগাযোগের নিশ্চিত হয়নি

১৪টি সী-ট্রাকের দশটি বন্ধ

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২১, ১:৫০ পিএম

দেশের উপক’লভাগে দূর্যোগপূর্ণ মৌসুম শুরু হলেও নিরাপদ নৌ যোগাযোগের বিষয়টি নিশ্চিত হয়নি। বিআইডব্লিউটসি’র ১৪টি সীÑট্রাকের ১০টি এখন বন্ধ। সরকারী সিদ্ধান্তনুযায়ী প্রতিবর ১৬ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের উপক’লীয় এলাকা ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ এলাকা হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে। এসময়ে উপক’লীয় নৌযান হিসেবে নিবন্ধিত ছাড়া অন্যকোন নৌযানের চলাচল নিষিদ্ধ। সরকার দেশের উপক’লের বিশাল জনগোষ্ঠীর নিরাপদ নৌযোগাযোগের লক্ষ্যে গত দুই দশকে সরকারী অর্থে রাষ্ট্রীয় নৌ-বানিজ্য প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিসি’কে ১২ টি সী-ট্রাক ছাড়াও ১টি উপক’লীয় যাত্রীবাহী নৌযান সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপশি আরো দুটি উপক’লীয় যাত্রীবাহী নৌযান পূণর্বাশন করা হয়েছে সরকারী অর্থে। উপরন্তু নিরাপদ উপক’লীয় নৌযোগাযোগ অব্যাহত রাখতে বিশ^ ব্যাংকের সুপারিশে সরকার প্রতিবছর সংস্থাটিকে ৫০ লাখ টাকার নগদ ভর্র্তূকিও প্রদান করছে।
কিন্তু পূণর্বাশনের পরে ২০১১ সালের মধ্যভাগ থেকে বরিশালÑচট্টগ্রাম রুটে উপক’লীয় যাত্রী ও পণ্যবাহী সিটমান সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। ে রুটের জন্য সংগ্রহ করা অলপর উপক’লীয় নৌযন ‘এমভি বার আউলীয়া’কেও এ রুট থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ইতোপূর্বে বরিশালÑহিজলাÑইলিশা(ভোলা)Ñলক্ষ্মীপুর রুটের সীÑট্রাক সার্ভিসটি ইজারাদারের ইচ্ছায় বন্ধ হয়ে গেছে আরো ৫ বছর আগে। অথচ এরুটে চলাচলকারী নিরাপদ সীÑট্রাক ‘এসটি খিজির-৮’এর মাধমে বরিশাল সহ সন্নিহিত এলাকার মানুষ নিরাপদে লক্ষ্মীপুর হয়ে অতিদ্রুত চট্টগ্রামে যাতায়াত করতে পারতেন। সরকারী অর্থে কেনা এ সীÑট্রাকটি ইজারাদারের ইচ্ছায় এখন ভেলার ইলিশাঘাটে রয়েছে। মাঝে মাে ইলিশাÑমজুচৌধুরীর হাট রুটে যাত্রী পরিবহন করছে বলে জানা গেছে। সংস্থাটির ১৪টি সীÑট্রাকের মধ্যে রবিবার পর্যন্ত মাত্র ৪টি যাত্রী পরিবহনে ছিল। ভোলার শশিগঞ্জ থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরায় দিনে একবার যাত্রী পরিবহন করছে ‘ এসটি শেখ কামাল’। ‘এসটি খিজির-৫’ ইলিশাÑমজুচৌধুরীরহাট রুটে দিনে একবার যাত্রী পরিবহন করছে। এছাড়াও হাতিয়াÑবয়ারচর রুটে যাত্রী পরিবহন করছে ‘এসটি শেখ মনি’।
গত ১৬ মার্চ ঝঞ্ঝা মৌসুম শুরুর আগের ৬ মাস ‘এসটি ভাষা শহিদ সালাম’ ইজারাদারের মাধ্যমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচল করার পরে তা এখন বন্ধ। এছাড়া ‘এসটি সুকান্ত বাবু’ কক্সবাজারে পড়ে আছে। সংস্থাটির এক নম্বর ডকইয়ার্ডে ‘এসটি শেখ রাসেল’ ২০১২ সালের নভেম্বর মাস থেকে, ‘এসটি শেখ জামাল’ ২০১৫ সালের জনুয়ারী থেকে ‘এসটি শহিদ অবদুর রব সেরনিয়াবাত’ ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে মেরামতের নামে পড়ে আছে।
নারায়নগঞ্জের বাংলাঘাটে সংস্থার পোতাশ্রয়ে ‘এসটি খিজির-৬’ ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে, ২০১৪ সাল থেকে ‘এসটি রূপালী’ এবং ২০০৩ সাল থেকে ‘এসটি মিতালী’ নামের সীÑট্রাকগুলো পড়ে আছে। এছাড়া চট্টগামে সংস্থার পোতাঙ্গনে ‘এসটি ভাষা শহিদ জব্বার’ ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে অলস পড়ে আছে। গত বছর মধ্য আগষ্ট থেকে ভোলায় বিকলবস্থায় পড়ে আছে ‘ এসটি খিজির-৭’। ইজারাদারের মাধ্যমে চলাচলকারী এ নৌযানটি স্থানীয় একটি বেসরকারী ডকইয়ার্ডে মেরামতের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। কবে নাগাদ নৌযানটি মেরামত সম্ভব হবে তা বলতে পারেননি দায়িত্বশীল মহল।
তবে ওয়াকিবাহল মহলের মতে, জনগনের অর্থে সংগ্রহ করা এসব সীÑট্রাকগুলো যথাযথ মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষনের মাধ্যমে সংস্থার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালন করলে তা উপক’লবাসির নিরাপদ নৌ যোগাযোগের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারত। ইতোপূর্বে ভেলার সাথে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার রুটেও সী-ট্রাক সার্ভিসটি বন্ধ রয়েছে বিগত প্রায় ৫ বছর। বরগুনার চরদেয়ানী থেকে পিরোজপুরের বড় মাছুয়া হয়ে বাগেরহাটের সণ্যাশী পর্যন্ত একটি সী-ট্রাক চালু করলে সেখান থেকে রকেট স্টিমারের মাধ্যমে বরিশাল ও ঢাকার সাথে নিরাপদ নৌ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হতে পারত।
এসব বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি’র দায়িত্বশীল মহলে আলাপ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমরা চেষ্টা করছি উপক’লীয় নৌযোগাযোগ আরো নিরাপদ করতে। অনেক এলাকাতেই সংস্থার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সী-ট্রাক সার্ভিস পরিচালন সম্ভব নয় বলেও জানান ঐ কর্মকর্তা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ