Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিলীন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম

অসময়ে ভাঙছে কুড়িগ্রাম

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে গত দুই মাসে অর্ধ শতাধিক বসতবাড়ি ভেঙে গেছে। বিনষ্ট হয়েছে গাছপালা। হুমকিতে রয়েছে আবাদি জমিসহ ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট। ভাঙন কবলিতরা পাচ্ছে না মাথা গোঁজার ঠাঁই। বিভিন্ন অফিসে-অফিসে দেনদরবার করেও ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় যে কোন মূহূর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে মোল্লারহাট।
সরেজমিনে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে ভাঙনকবলিত স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ব্রহ্মপুত্র নদ মোল্লারহাটের পূর্ব দিকের অংশে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ভাঙছে। বর্তমানে মোল্লারহাটটি ভাঙনের মুখে।
ওই এলাকার উত্তর বালাডোবা গ্রামের ইব্রাহিমের স্ত্রী ছালেহা জানান, স্বামী খড়ি বেচি খায়। ৩ ছেলে, ২ মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বাড়িভিটা ভেঙে যাওয়ায় জায়গা না পেয়ে নদীর তীরে ছাপড়া তুলে ৬ মাস ধরে অবস্থান করছেন তারা। এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। এরকম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওই এলাকার সোনাভান, ছালেহা, ছামাদ ও জহুর আলী। ঘরবাড়ি সরিয়েছেন। কিন্তু এখনো থাকার জায়গা পাননি। ফলে চরম দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিন।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মহু বাদশা জানান, গত পাঁচ বছরে মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে ৬নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের মানুষ এখন ৪ ও ৭নং ওয়ার্ডে আশ্রয় নিয়েছে। চলতি বছর নদী ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে দুটি ওয়ার্ডের প্রায় ৭ শতাধিক বতসবাড়ির মানুষ। গত জানুয়ারি-ফেব্রæয়ারি মাসেই ভেঙেছে প্রায় ৬০টি বাড়ি। ভাঙনের মুখে রয়েছে বসতবাড়ি, গাছপালাসহ আবাদিজমি। গৃহহীন পরিবারগুলো কোথায় আশ্রয় নিবে এই দুশ্চিন্তায় কাটছে তাদের দিনক্ষণ। কেউ কেউ জায়গা না পেয়ে নদীর তীরে ছাপড়া তুলে মানবেতরভাবে দিন কাটাচ্ছে।
৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল মন্ডল জানান, এই অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ঐতিহ্যবাহী মোল্লারহাট রয়েছে ভাঙনের মুখে। চরাঞ্চলের মানুষের কেনাবেচার জন্য প্রয়োজনীয় এই হাটটি রক্ষায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করেও প্রতিকার মিলছে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৫ শতাধিক জিও ব্যাগ দেয়া হলেও তা কাজে আসছে না। জিও ব্যাগ নয় স্থায়ী ভাঙন রোধে সিসি বøক ফেলার দাবি এলাকাবাসীর।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, শুকনো সময়েও মোল্লারহাটে নদী ভাঙন রয়েছে। এরই মধ্যে আমরা ভাঙন রোধে কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং-এর প্রস্তুতি নিয়েছি। স্থায়ীভাবে এটা রোধ করার জন্য বাজেট চেয়ে এপিল করেছি। খুব তাড়াতাড়ি অনুমোদন পেলে আমরা স্থায়ীভাবে কাজ শুরু করতে পারবো এবং ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ