Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ইচ্ছা করলেই একজন সাব-এডিটর একটি নিউজ দিয়ে সারাদেশে আগুন ধরিয়ে দিতে পারেন : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

মোহাম্মদ আবদুল অদুদ | প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০২১, ৫:২৫ পিএম

সাব-এডিটরদের মূল্যায়ন করে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, এক একজন সাব-এডিটর হলেন মেরোডোনা, মেসি...। তারা নিউজের সর্বত্র বিচরণ করেন, মাঠের চারদিকে খেলেন। স্টাইকার, ডিফেন্স সব জায়গায় খেলেন। তারা গোল দেন, গোল বাঁচান। একজন সাব-এডিটর ইচ্ছে করলে সারাদেশে আগুন ধরিয়ে দিতে পারেন। ইচ্ছে করলে একটা সংবাদকে মানুষের কাছে স্মরণীয়-বরণীয়ও করতে পারেন। আবার একটা সংবাদকে দুর্বলও করে দিতে পারেন। অফিসের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তাদেরকে অপেক্ষা করতে হয়। একজন রিপোর্টার কী দিলো না দিলো তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাদের দেখতে হয়। ইচ্ছা করলেই সাব-এডিটর হওয়া যায় না। এজন্য যোগ্যতা লাগে।

আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল আয়োজিত ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শীর্ষক’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন-বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. আবদুল মোমেন মিল্টন, অনুষ্ঠানের স্পন্সর কোম্পানি প্যান্টাগন ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অভিনয় শিল্পী অন্ত‍ু করিম। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মামুন ফরাজীর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়। তৌফিক অপুর সঞ্চালনায় ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি কায়কোবাদ মিলন, শাহ মুতাছিম বিল্লাহ, আল মামুন ও নাসিমা আক্তার সোমা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি আনজুমান আরা শিল্পী, যুগ্ম সম্পাদক জওহার ইকবাল খান, কোষাধ্যক্ষ অলক বিশ্বাস, দফতর সম্পাদক মনির আহমাদ জারিফ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলমগীর কবির, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক লাবিন রহমান, নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আবদুল অদুদ, ফারজানা জবা, আবু জাফর সাইফুদ্দীন ও মো. সাফায়েত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা তো আলাদা কিছু নয়। ১৯৪৭ সালে যখন পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গবন্ধু তখনই বাঙালি জাতির অধিকার ও স্বাধীনতার কথা চিন্তা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই স্বাধীনতা আমাদের প্রকৃত স্বাধীনতা নয় এবং সেই জায়গা থেকে চিন্তা ভাবনা করতে করতেই তদান্তিন কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মনিকে ১৯৫৩ সালে বলেছিলেন, আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করছি। সাংবাদিকদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রেস কাউন্সিল গঠন করেছিলেন পেশাদার সাংবাদিকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে। তিনি মনে করতেন, সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্ব যদি না আসে, তাহলে আমাদের এই সেক্টরটা দুর্বল হয়ে যাবে। কিন্তু ৭৫’র পরবর্তীতে সাংবাদিকতার জায়গাটাকে কলঙ্কিত করা হয়েছে, কলুষিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমবান্ধব প্রধানমন্ত্রী। এখানে আমার বলার কিছু নাই। আপনারা ভালো জানেন। আমি বলি, তিনি একজন এটাচড প্রধানমন্ত্রী। এমন কোনো জায়গা নাই যেখানে তার নজর নেই। আজকের শিশুরা আগামী দিনের যে নেতৃত্ব দিবেন, সেই শিশুরা কীভাবে বড় হবেন, তা তিনি চিন্তা করছেন। শিশুদেরকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর যে ভাবনা তা মানুষের কাছাকাছি নিয়ে যেতে হবে। সেজন্য গণমাধ্যম একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে তিনি বলেন, ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হারানোর পর এত ডায়নামিক লিডারশিপ আমরা পাই নাই, যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে পাই।

প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বাংলাদেশে যখন পদ্মা সেতু হচ্ছে, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে, সমুদ্র জয় হচ্ছে, গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে, সরকার মহাসড়ক করছে, এলিভেটেডে এক্সপ্রেসওয়ে করছে, মেট্রুরেল করছে, ট্যানেল করছে এটা আমরা মানতে পারছি না। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ যখন করোনার মধ্যে ৪৩ বিলিয়ন রিজার্ভ হচ্ছে তখন আমরা মানতে পারছি না। এই না মানার নেপথ্যে আছে ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে সেই সেনাবাহিনীকে নিয়েও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেনাবাহিনীকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের অর্থ হচ্ছে আমাদের সার্বভৌমত্বকে নিয়ে ষড়যন্ত্র। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু বাস্তবে তার নাম মুছে ফেলা যায়নি; সম্ভব নয়। তার জন্মশতবার্ষিকী তাবত দুনিয়া পালন করছে। এই করোনা মহামারির মধ্যেও একের পর এক সরকার প্রধানরা বাংলাদেশে আসছেন। সেটা নিয়েও ষড়যন্ত্র করছে। আজকে সাংবাদিকদেরকে বিভিন্নভাবে বিদ্রুপ করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের দলবাজ বলা হচ্ছে। আপনাদের যতই কুরুচিপূর্ণ বিশেষণ দেওয়া হোক না কোনো আপনারা বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলবেন, বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কথা বলবেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমি যখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে ছিলাম। তখন ভেবেছি যে, সবচেয়ে কষ্টে আছে শিশুরা। কারণ, এই সময়টাতে স্কুল বন্ধ, বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই; চারদেয়ালের মধ্যে তারা বন্দী হয়ে আছে। ভেবেছি, এই বন্দী জীবনে থেকে ভবিষ্যত কীভাবে গড়ে উঠবে তা বলা মুশকিল। এটা মনোবিজ্ঞানীরা ভালো বলতে পারবেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সাব-এডিটররা শিশুদের জন্য যে আয়োজনটা হাতে নিয়েছে তা অত্যন্ত অর্থবহ। আমি যখন অনুষ্ঠান ঘুরে দেখলাম, শিশুদের সঙ্গে কথা বললাম। সবার মধ্যে একধরনের স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করলাম। আমি ধন্যবাদ জানাই এই ধরনের আয়োজনের চিন্তা-ভাবনা করার জন্য। যদিও আমরা করোনার তৃতীয় ধাপে আছি তবুও শিশুদের জন্য এইরকম একটা আয়োজনের দরকার ছিল বলে তিনি মনে করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ