Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জড়িত ৬৭ ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা, হাইকোর্টে তালিকা দেয়নি দুদক

পি কে হালদারকে পালাতে সহায়তা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

পি কে হালদারকে পালিয়ে ভারত যেতে সহায়তাকারী ইমিগ্রেশনের ৬৭ পুলিশের তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। এসব পুলিশ কর্মকর্তা ওই সময় বেনাপোল স্থলবন্দরে ডিউটিতে ছিলেন। পাসপোর্ট জব্দ থাকা সত্তে¡ও পি কে হালদারকে পালাতে সহযোগিতা করেছেন-মর্মে অভিযোগ রয়েছে। গতকাল সোমবার বিচারপতি মো.নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ডিভিশন বেঞ্চে এ তালিকা দাখিল করা হয়। এ তথ্য জানান ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

তিনি আরো জানান, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পি কে হালদারের পাসপোর্ট জব্দ থাকার পরও তাকে পালাতে সহযোগিতাকারী ইমিগ্রেশন, পুলিশ ও দুদক কর্মকর্তারা। এ প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মকর্তাদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে পি কে হালদার মামলার আসামিদের জবানবন্দিতে যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে দুদকের পদক্ষেপ জানতে চাওয়া হয়েছিল। এছাড়া ২০০৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরতদের তালিকা জমা দিতে ব্যাংকটির গভর্নরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। এ নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে জড়িতদের তালিকা দিয়েছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। তবে গতকাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন এবং পুলিশ তালিকা দাখিল করেনি।

উল্লেখ্য, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে দেশত্যাগ করেন। তার পাসপোর্ট জব্দ থাকলেও তিনি বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করেই ভারত পালিয়ে যান। পরবর্তীতে সেখান থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পাড়ি জমান।

ইমিগ্রেশনের তথ্য সঠিক নয় : দাবি দুদকের
এদিকে পি কে হালদারের দেশত্যাগের বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের দেয়া তথ্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার এ বিষয়ক শুনানিকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ডিভিশন বেঞ্চকে লিখিতভাবে এ কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।

লিখিত বক্তব্যে দুদক বলে, ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর পি কে হালদারসহ ২৪ জনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। যা পরদিন ২৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় ইমিগ্রেশন গ্রহণ করে। এর আগে পুলিশের ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছিল, দুদক চিঠি দেরিতে পাঠানোয় পি কে হালদার পালিয়ে যায়। এর আগে হাইকোর্টের পৃথক একটি বেঞ্চ গত ১১ মার্চ বলেন, বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত চিঠি ১৩ ঘণ্টা পর ইমিগ্রেশনে পাঠিয়ে দুদক পি কে হালদারকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে।

এর আগে গত ১ মার্চ ইমিগ্রেশন পুলিশ হাইকোর্টকে জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে নয়- যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সড়ক পথেই দেশত্যাগ করেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদার।

ইমিগ্রেশন পুলিশ জানায়, ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর দুদক ইমিগ্রেশন পুলিশকে জানানোর জন্য বিশেষ শাখার (এসবি) সদর দফতরকে চিঠি দেয় পি কে হালদার যেন দেশত্যাগ না করতে পারেন। এসবি সদর দফতর দুদকের ওই চিঠি হাতে পায় ২৩ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টায়। ওইদিন বিকেল ৫টা ৪৭ মিনিটে ইমিগ্রেশন পুলিশের সব শাখায় চিঠি পৌঁছে দেয়া হয়। তবে চিঠি পাওয়ার দুই ঘণ্টা ৯ মিনিট আগেই (বিকেল ৩টা ৩৮ মিনিটে) পি কে হালদার বেনাপোল দিয়ে ভারত চলে যান। অর্থাৎ পি কে হালদারের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত চলে যাওয়ার পর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইমিগ্রেশন।

প্রসঙ্গত: চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং পাসপোর্ট জব্দ থাকার পরও কীভাবে দেশত্যাগ করলেন তা জানতে চান হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে পি কে হালদার যেদিন দেশত্যাগ করেছিলেন, সেদিন বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের দায়িত্বরতদের এবং দুদকের দায়িত্বে কে কে ছিলেন তার তালিকা দাখিল করতে বলেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনটি বিভাগে ২০০৮ সাল থেকে কর্মরতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকার বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পি কে হালদার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ