পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাদরাসায় শিশু শিক্ষার্থীদের শাসন সম্পর্কে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের সতর্ক করলেন হাইকোর্ট। গতকাল রোববার বিচারপতি নাজমুল আহসান এবং বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের ডিভিশন বেঞ্চ এ সতর্কাদেশ জারি করেন। চট্টগ্রাম হাটহাজারি পৌর এলাকার ‘মারকাজুল কুরআন ইসলামি একাডেমি মাদরাসা’র হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসিন ফরহাদকে (৮) মারধরের ঘটনায় আদালত এ আদেশ দেন। গত ৮ মার্চ ওই মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা ইয়াহিয়া শিশুটিকে শাসন করেন। তাকে প্রহারের দৃশ্য ভিডিও করে সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়। ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ইয়াসিনকে ঘাড় ধরে নিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক ইয়াহহিয়া। কক্ষে নেয়ার পর তাকেবেধড়ক পেটানো হচ্ছে।
ফেসবুক-ইউটিউবে ভিডিও ক্লিপটি ভাইরাল হয়। সংবাদ মাধ্যমেও প্রচার-প্রকাশ হয়। পরে হাটহাজারী উপজেলার ইউএনও রূহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি টিম গত ৯ মার্চ রাতে মাদরাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে। থানার ইউএনও জানান, শিক্ষক মাওলানা ইয়াহিয়াকে মাদরাসা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা-মা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিতে চাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। পুলিশ প্রশাসন ও আমার পক্ষ থেকে মামলার খরচ চালানোর কথা বললেও তারা তাতে রাজি হয়নি। এমনকি তারা একটি আবেদনে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ারও অনুরোধ জানান।
শিশু শাসনের বিষয়ে গত মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইয়াসিনের মা-বাবা তার সঙ্গে দেখা করতে মাদরাসায় যান। বিকেল ৫টার দিকে ফিরে আসার সময় ইয়াসিনও পেছন পেছন মাদরাসা ফটকের বাইরে চলে আসে। এরপর শিক্ষক ইয়াহিয়া সেখান থেকে ইয়াসিনকে ধরে এনে বেদম প্রহার করেন। দৃশ্যটি মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে ভাইরাল হয়। নিন্দার ঝড় ওঠে। হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সাফরভাটা গ্রামের মোহাম্মদ ইউনুসের ছেলে। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে আদালতের দৃষ্টিতে আনেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। শুনানি শেষে গত ১১ মার্চ আদালত চট্টগ্রাম হাটহাজারী থানার নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে আদালত এ বিষয়ে জানতে চান। মাওলানা ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা কারও চাপের প্রত্যাহার করা হয়েছে কিনা সেটিও জানতে চাওয়া হয়।
গতকালের আদেশের বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে একটি মাদরাসায় ৮ বছরের শিশু শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানো হয়। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। তবে শিশু শিক্ষার্থীদের শাসন করার বিষয়ে ওই মাদরাসাসহ সকল মাদরাসার প্রধানদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের সকল মাদরাসার শিক্ষকদেরও এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আদালত স্বপ্রনোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে রায়ে পর্যবেক্ষণ থাকবে বলেও মন্তব্য করেন আদালত।
তিনি আরও জানান, শিশু নির্যাতনের ঘটনায় ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর চট্টগ্রামের মাদরাসার শিশু নির্যাতনের ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানাতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিকে) ১১ মার্চ নিদেশ দেন আদালত। রোববার এটি শুনানির জন্য ধার্য ছিলো। সে অনুযায়ী চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনার পর তার বাবা-মা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি হননি। পরে পুলিশ বাদীয় হয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মাদরাসা থেকে ওই শিক্ষককে চাকুরিচ্যুতও করা হয়। সেই সঙ্গে শিশুটির গ্রামের বাড়িতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।